parbattanews

‘রোহিঙ্গা শিশুদের পড়াশোনায় বাধা নেই’

ওয়াশিংটন ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এক প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে শিশুদের অর্থপূর্ণ শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করার জন্য বিভিন্ন সাহায্য সংস্থাকে বাধা দেওয়া হচ্ছে এবং শিশুরা যাতে ক্যাম্পের বাইরের স্কুলেও পড়তে না পারে সে ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বাংলাদেশের সরকারের উচিত জরুরি ভিত্তিতে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া। তবে রোহিঙ্গাদের পড়াশনায় কোন বাধা নেই বলে জানিয়েছেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মাহবুব আলম তালুকদার। তিনি  হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বক্তব্যকে মিথ্যাচার বলেও অভিহিত করেছেন।

বিবিসি বাংলার এক রিপোর্টে বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এক প্রতিবেদনে বলছে, প্রায় চার লাখের মত রোহিঙ্গা শিশু তাদের শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে যেটা বেআইনি। ৮১ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ সাহায্যকারী সংস্থাগুলোকে নিষিদ্ধ করছে যাতে করে তারা কক্সবাজার জেলায় রোহিঙ্গা শিশুদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষা দিতে না পারে।

সংস্থাটি বলছে, এর ফলে রোহিঙ্গা শিশুরা বাংলা ভাষা এবং বাংলাদেশের শিক্ষা কারিকুলাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। রোহিঙ্গা শিশুদের ক্যাম্পের বাইরে কোন সরকারি, বেসরকারি স্কুলে পড়াশোনা করার সুযোগ নেই বলে জানাচ্ছে তারা।

বাংলাদেশের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয় রয়েছে কক্সবাজারে। তারা মূলত রোহিঙ্গাদের প্রতিটা বিষয়ে নজর রাখছে।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার অবশ্য বলছেন, প্রতিটা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা শিশুদের অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে তারা।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মাহবুব আলম তালুকদার বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে যে তথ্য দেয়া হয়েছে সেটা একটা মিথ্যাচার। মি. তালুকদার বলছেন, পুরনো দুটি রেজিস্টার ক্যাম্পে বাংলাদেশের জাতীয় শিক্ষাক্রমের কাজ চলছে এবং সেখানে বাংলা কারিকুলাম ব্যবহার করা হচ্ছে।

কয়েকটি প্রাথমিক স্কুলের বাইরে বেশ কয়েকটি মাদ্রাস রয়েছে, যেখানে ধর্মীয় শিক্ষায় গুরুত্ব দেয়া হয়
তবে নতুন যেসব ক্যাম্প রয়েছে সেখানে তারা বাংলা কারিকুলাম ব্যবহার করছেন না।

এর কারণ হিসেবে মি. তালুকদার বলছেন, “তারা (রোহিঙ্গারা) তো এক সময় ফিরে যাবে। তারা সেখানে গিয়ে যাতে তাদের স্কুলে আবার পড়াশোনা শুরু করতে পারে সে কারণে বার্মিজ এবং ইংরেজি ভাষায় ক্যাম্পের মধ্যে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।”

তিনি বলেন, এই লক্ষ্য কক্সবাজারের টেকনাফে অনেক আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় বেসরকারি সংস্থা কাজ করছে।

প্রাথমিক এবং গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানাচ্ছেন, নতুন ক্যাম্পগুলোতে ইতিমধ্যে এক হাজার স্কুল পরিচালিত হচ্ছে। আরেকটি প্রকল্পের আওতায় আরো ৫০০ স্কুল পরিচালনা করা হবে।

আর এই স্কুলগুলোতে বার্মিজ এবং ইংরেজি ভাষায় পড়ানো হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

এই কর্মকর্তাও বলেন, “তাদেরকে বাংলা ভাষায় পড়িয়ে তো কোন লাভ নেই। কারণ তাদের ফিরতে হবে এবং সেখানে (মিয়ানমারে) স্কুলে যাতে আবার পড়তে পারে সেটা চিন্তা করে আমরা এমন পরিকল্পনা নিয়েছি।”

সূত্র: বিবিসি বাংলা

Exit mobile version