রোহিঙ্গা সংকটে নির্বিকার মিয়ানমার নেতারা এখন তাকিয়ে আইসিসির দিকে

fec-image

রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর মিয়ানমার সেনাদের বর্বর নির্যাতন, লুটপাট, ধর্ষণ ও গণহত্যার অভিযোগে ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) মামলা করে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। এতে সমর্থন রয়েছে বাংলাদেশ, ওআইসিসহ আরও অনেক দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার। তবে সেই মামলার অভিযোগগুলোর বিষয়ে কখনোই খুব একটা গুরুত্ব দিতে দেখা যায়নি মিয়ানমারের তৎকালীন ‘গণতান্ত্রিক’ সরকারকে। বরং রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ করতে আইসিসিতে মিয়ানমারের হয়ে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন দেশটির ‘শান্তিতে নোবেলজয়ী’ নেতা অং সান সু চি।

গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। ওইদিনই বন্দি করা হয় সু চিসহ দেশটির ‘গণতন্ত্রপন্থী’ শীর্ষ নেতাদের। পরে তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় একাধিক মামলা।

অভ্যুত্থানের পর থেকেই জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে মিয়ানমারের জনগণ। প্রায় প্রতিদিনই চলছে বিক্ষোভ-সংঘর্ষ। বিক্ষোভ দমনে কড়া অবস্থান নিয়েছে সামরিক বাহিনীও।

অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের তথ্যমতে, মিয়ানমারে এবারের জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে এপর্যন্ত অন্তত ২২৪ জন নিহত হয়েছেন। বন্দি হয়েছেন আরও অসংখ্য মানুষ।

এ অবস্থায় মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেতারা এখন তাকিয়ে রয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের দিকে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইসিসির মাধ্যমে কোনভাবে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্ত করা যায় কিনা তার পথ খুঁজছেন এসব নেতা।

সম্প্রতি জান্তা সরকারের সঙ্গে প্রকাশ্যে সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা দেওয়া জাতিসংঘে মিয়ানমারের স্থায়ী প্রতিনিধি কিয়াও মো তুন বলেছেন, অভ্যুত্থানের জেরে সহিংসতায় দায়ী ব্যক্তিদের কীভাবে বিচারের আওতায় আনা যায়, তার পথ খুঁজছে দেশটির ক্ষমতাচ্যুত আইনপ্রণেতাদের একটি কমিটি। এর মধ্যে আইসিসি অন্যতম।

মো তুন বলেন, আমরা আইসিসির সদস্য দেশ নই। তারপরও… আইসিসিতে মামলা নেওয়ার জন্য আমাদের সবধরনের উপায় ও পথ খোঁজা দরকার।

মিয়ানমারের জান্তা সরকারের এক মুখপাত্র অবশ্য দাবি করেছেন, দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী কেবল প্রয়োজন হলেই বলপ্রয়োগ করছে।

শুক্রবার ইয়াঙ্গুনের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ব্যারিকেড সরিয়ে নিতে মানুষজনকে জোর করছে। তবে এদিনও মান্দালয়, অংবান, মাইংগিয়ান, মিয়াওয়াদি শহরগুলোতে যথারীতি বিক্ষোভ হয়েছে।

অংবানে বিক্ষোভকারীদের দিকে টিয়ারগ্যাস ছুড়েছে পুলিশ, সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে মিয়াওয়াদি শহরেও। তবে কেউ হতাহত হয়েছেন কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয়।

সূত্র: জাগোনিউজ

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন