parbattanews

লংগদুতে এক শিক্ষককে লাথি মেরেছেন চিকিৎসক

17440194_680534485482486_1059716698_n
লংগদু প্রতিনিধি :
চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা শেষে মেডিকেল সনদ চাইতে গিয়ে লাথির শিকার হয়েছেন একজন শিক্ষক। বুধবার রাঙামাটির লংগদু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. নুরুল হুদার চেম্বারে ঘটনাটি ঘটেছে। ভুক্তভোগী শিক্ষক সরোয়ার হোসেন উপজেলার মাইনীমূখ ইসলামীয়া আলীম মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক (বিএসসি)। অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে লংগদু থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই শিক্ষক।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক সরোয়ার হোসেন গলায় টনসিলের ব্যাথা নিয়ে লংগদু হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. নুরুল হুদার নিকট গত ১৪ মার্চ চিকিৎসা নেন। ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ঔষধ খেয়ে অনেকটা সুস্থ্যতাবোধ করছেন শিক্ষক সরোয়ার হোসেন। প্রতিষ্ঠানের ছুটি মঞ্জুর করতে তিন দিনের একটি মেডিকেল সনদের জন্য (বুধবার) হাসপাতালের চেম্বারে ডা. নুরুল হুদার সাথে দেখা করেন তিনি। এ সময় ডা. নুরুল হুদা তার কাছ থেকে পাঁচশত টাকা দাবি করেন। শিক্ষক টাকা দিতে না চাইলে তাকে অকথ্য ভাবে গালাগাল করেন ওই চিকিৎসক। এবং বলেন, তুই দশ হাজার টাকা দিলেও সার্টিফিকেট পাবি না । এ সময় শিক্ষক চিকিৎসককে সংযত হয়ে কথা বলতে বলেন। কিন্তু চিকিৎসক নিজের চেয়ার থেকে উঠে শিক্ষককে লাথি মারেন এবং রুম থেকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন।

লংগদু থানার পুলিশ কর্মকর্তা এস আই মোসাদ্দেক হোসেন জানান, আমরা শিক্ষক সরোয়ার হোসেনের নিকট থেকে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সামজের শিক্ষকরা হচ্ছে মানুষ গড়ার কারিঘর। একজন শিক্ষককে এভাবে অপদস্থ করায় এলাকার সাধারণ মানুষ ও শিক্ষক সমাজে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে । এলাকাবাসীদের মধ্যে অনেকেই ডা. নুরুল হুদা নিজেই রোগী বলে মন্তব্য করেন।

খোঁজ নিয়ে জানাযায়, ওই চিকিৎসক হাসপাতালের নার্স, কর্মচারীদের সাথে প্রায় খারাপ আচারণ করে থাকেন। যে কোন সার্টিফিকেটের জন্য টাকা দিতে হয় তাকে। তিনি নিজে রোগীদের কাছ থেকে চেয়ে নেন এসব টাকা ।

উপজেলা সদরের বাসিন্দা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নারী মেরি দেবনাথ মাতৃত্বজনিত ছুটির জন্য সনদ চাইতে গিয়েছিলেন চিকিৎস্যক নুরুল হুদার কাছে। নুরুল হুদা পাঁচশত টাকা দাবি করেন । পরে ওই নারী একজন স্থানীয় সংবাদকর্মীকে বিষয়টি জানালে শেষ পর্যন্ত টাকা নিতে পারেননি ডা. নুরুল হুদা। টাকা ছাড়াই সনদটি দিয়েছিলেন ।

শিক্ষককে লাথি মারার অভিযোগ সর্ম্পকে জানতে চাইলে ডা. নুরুল হুদা বলেন, লাথি মারার কথাটি সত্য নয়। ওই শিক্ষক আমাকে পাগল বলেছেন তাই আমি তাকে বকাঝকা দিয়েছি । তবে মেডিকেল সনদের বিনিময়ে টাকা চাওয়ার বিষয়ে বলেন, ওই শিক্ষক হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন না। তাই আমি তাকে সনদ দিতে না চাইলে এখন তিনি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বলছেন।

এব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বিশ্বজিৎ মহাজন বলেন, আমি একটি মিটিংএ রাঙামাটি আছি। বিষয়টি শুনেছি। আমি লংগদু এসে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রবি রঞ্জন চাকমা বলেন, আমরা এঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। এ বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে মিটিং চলছে। আমরা ছাত্র/ছাত্রী ও শিক্ষকসহ বৃহষ্পতিবার উপজেলা সদরে একটি মানববন্ধন করার আয়োজন করা হবে।

Exit mobile version