লক্ষ্মীছড়িতে মেলার নামে জুয়ার ঘর বসিয়ে ডাব্বা খেলা


উপজেলা প্রতিনিধি, লক্ষ্মীছড়ি:

শুধু ভালবাসা, মারিলে পায়, ঝান্ডি-মুন্ডা, ‘মোডা মারি-মোডা ল’ এই সব কথা কোন কবি সাহিত্যেকের নয়- খাগড়াছড়ি লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার মাষ্টার পাড়া এলাকায় আয়োজিত একটি মেলায় গিয়ে দেখা গেল জুয়ার আসরে আয়োজকদের মুখে এসব কথা। জুয়াড়িদের আকর্ষন করতেই এমন কথা বলা হয়।

তারা আরো বলছেন কেউ খালি হাতে যাবে না- ডাবল মারিলে ডাবল পাইব। এভাবেই ১৬মার্চ রবিবার সারা রাত চলে জুয়ার আসর। কিন্তু রাতভর খেলে কেউ টাকা নিয়ে হাসি মুখে বাড়ি ফিরেছেন এমনটাই কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারেনি বরং হতাশা আর হারানোর চেহারাই ফুটে ওঠেছে জুয়া খেলায় যারা অংশ নিয়েছেন তাদের চোখে মুখে।

খবরে প্রকাশ, প্রতি বছরের মত মাষ্টার পাড়া হাজাছড়ি সাখ্যমনি বৌদ্ধ বিহার কমিটির উদ্যোগে মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে। এবারো তার ব্যাতিক্রম হয় নি যথাযথ প্রক্রিয়ার মধ্যে রবিবার ও সোমবার দুই দিন এ মেলা আয়োজনের উদ্যোগ নেয়। চলবে যাত্রা পালা, গান, নৃত্যসহ আরো হরেক রকম আয়োজন। কিন্তু পাহাড়ে ডাব্বা (জুয়া) খেলা ছাড়া মেলার আয়োজন কী করে ভাবা যায়। এই মেলাকে ঘিরে নিরাপত্তা ব্যাবস্থার কমতি ছিল না। সরকারি চাকুরীজিবী, জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তি, সাংবাদিকসহ অনেক দুর দুরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ এ মেলায় এসেছে দেখার জন্য।

মেলার মূল আয়োজনের প্যান্ডেলের ঠিক ৫০ গজ দুরেই চলছে গরীব অসহায়, উঠতি বয়নী যুবক কিংবা কিশোর থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সকল বয়সী মানুষের নেশার ফাদে ফেলে পকেটের টাকা হাতিয়ে নেয়ার যাদুর বা´ ডাব্বা খেলা বা (জুয়া)। প্রায় ৫০টির বেশি ডাব্বার কোড দেখা গেছে। তবে কয়েকটি খালি কম মানুষ এমনটিও দেখা গেছে। জুয়া অংশ নেয়া বেশির ভাই পুরুষ। নারিদের দেখা গেছে যাত্রা প্যান্ডেলের আশে পাশে বসে থাকতে। আর সচেতন সমাজের অনেককেই দেখা গেছে চায়ের দোকানে কিংবা হেঁটে সময় পাড় করতে।

চরকা ঘুরানো ও অন্যান্য লটারি থাকলেও সেখানে উপস্থিত ছিল কম। যাত্রার নাম বা মূল কাহিনী কেউ না জানালেও নৃত্য দেখে আনন্দ উল্লাস করেছেন সকল বয়সের মানুষ। তবে স্বামী স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে নিয়ে যারা মেলায় গেছেন অনেকে কিছুটা হলেও লজ্জা পেয়েছেন। ঝুমুর ঝুমুড় তালে অশ্রলীল নৃত্য না হলেও ভাল হতো বলেই অনেকের মত। দুই দিনের আয়োজনের আজ সোমবার শেষ দিন। আজো চলবে এ ডাব্বা খেলা।

সচেতন মহলের দাবি এ ধরনের আয়োজন এলাকার সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয় ছাড়া আর কিছুই নয়। বিষয়টি নজরে এনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছে সচেতন ব্যক্তিরা।   

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন