লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন: ১১ ফেব্রুয়ারি প্রত্যাহারের শেষদিন: বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা

CH

উপজেলা প্রতিনিধি, লক্ষ্মীছড়ি:

খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ১১ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। প্রত্যাহারের শেষ দিনে আসলে কী ঘটবে এমনটা নিশ্চিত করে বলা না গেলেও কোন কোন পদে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হতে পারেন এমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। বিশেষ করে পুরুষ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন অনেকেই।

প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা নিজ উদ্যোগেই প্রার্থী কমানোর চেষ্টা করছেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। তবে চেয়ারম্যান পদে এমন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না রাতে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত। চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা আগামীকাল প্রত্যাহারের শেষ দিনে অনেকেই প্রত্যাহার পত্র জমা দিতে পারেন এমন আভাস পাওয়া গেছে একাধিক সূত্র থেকে।

গত ৪ ফেব্রুয়ারি মনোনয়ন ফরম বাছাই করার পর চেয়ারম্যান পদে ৯ জন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জনের মনোনয়ন ফরম বৈধ ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনী মেরুকরণে অনেক প্রার্থীকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দেখা যাবে না। জানা গেছে, লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এবার সরাসরি দলীয় রাজনৈতিক ব্যানারে সমর্থন নিয়ে কেউ প্রার্থীতা ঘোষণা করেছেন এমন খবর পাওয়া যায় নি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেই নিজেদের পরিচিতি দিচ্ছেন এমনটাই জানা গেছে। আধিপত্য প্রভাব বিস্তারকারী আঞ্চলিক দল ইউপিডিএফও এখন পর্যন্ত সরাসরি কোন প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে ঘোষণা দিয়েছেন কিনা তা স্পষ্ট করে কেউ বলতে পারেন নি।

তবে সবশের্ষ খবরে ভোটের হিসেবে এগিয়ে থাকা এই দলটি শেষ পর্যন্ত প্রার্থী কমিয়ে এনে বিজয় সু-নিশ্চিত করার সহজ উপায় খোঁজছেন বলেও সূত্রে জানা গেছে। সেই ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে অনেক প্রার্থীকে লাল কার্ড দেখানোর কথাও শোনা গেছে। এদিকে বাঙ্গালি থেকে শুধুমাত্র উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মাইনুল ইসলাম প্রার্থী হলেও তাকে বড় কোন ফ্যাক্টর হিসেবে দেখছেন না বলেই অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে। নানা সংকট কাটিয়ে ওঠে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে দুই এর অধিক উপজাতীয় প্রার্থী নিজেদের যোগ্যতা যাচাইয়ে নিবাচনী লড়াইয়ে যেতে চাইলেও তেমনটা পরিলক্ষিত হচ্ছে না বলেই অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে।

এদিকে উপজাতীয়দের মধ্য হতে চেয়ারম্যান পদে সাবেক বর্মাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান স্বপন চাকমা, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে মারমা ঐক্য পরিষদের সভাপতি অংগ্য প্রু মারমা ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বেবি রাণী বসু শেষ পর্যন্ত একক প্রার্থী হিসেবে থাকতে পারেন বলে ধারনা করা হচ্ছে। সেই সাথে অপরাপর প্রার্থীরা নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া করে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিতে পারেন বলে আভাস পাওয়া গেছে।

ভোট বিশ্লেষকরা মনে করেন, একেবারে কম ভোট নিয়ে বাঙ্গালি থেকে প্রার্থী হওয়ার কারণেই নির্বাচনী উত্তাপ ছড়াচ্ছে না বলে ধারনা। শেষ পর্যন্ত মাইনুল ইসলাম প্রত্যাহার করলে কিংবা না করলে কী হবে তা কোনটাই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সম্ভাব্য প্রার্থী জানান, লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার সকলের গ্রহণযোগ্য প্রার্থীদের এলাকার উন্নয়নে কাজ করার সুযোগ করে দিতেই স্বেচ্ছায় মনোনয়ন পত্র তুলে নেবেন বলে তিনি জানান। তবে কোন চাপে নয় বলেও তিনি দাবি করেন। সকল জল্পনা কল্পনার অবসান দেখতে লক্ষ্মীছড়িবাসীকে আরো কয়েক ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে।

জানা যায়, চেয়ারম্যান পদে স্বপন চাকমা, দেবরাণী চাকমা, চাথোয়াই মারমা, সুপার জ্যোতি চাকমা, মংক্যচিং মারমা, রেম্রাচাই চৌধুরী, বাবু দশরথ তালুকদার, নীল বর্ণ চাকমা ও মাইনুল ইসলাম রয়েছেন। পুরুষ ভাইস-চেয়ারম্যান পদে অংগ্য প্রু মারমা, ত্রিলন চাকমা ও রতন বিকাশ চাকমা এবং মহিলা ভাইস-চেয়াম্যান পদে বেবি রানী বসু, মেরিনা চাকমা, সাগরিকা চাকমা ও সুমনা চাকমা। রাতে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সাগরিকা চাকমা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছেন বলে জানা গেছে। তিনি বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছিলেন। ১২ ফেব্রুয়ারি প্রতীক বরাদ্দ হলেই প্রার্থূরা প্রচারণায় নামবেন। ২৭ ফেব্রুয়ারি ভোট গ্রহণ।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন