parbattanews

লাভজনক হওয়ায় খাগড়াছড়ির পতিত জমিতে ভুট্টা চাষাবাদ বাড়ছে

Khagrachari Picture 01
এইচ এম প্রফুল্ল/মো. শাহজাহান:
খাগড়াছড়ির পতিত জমিতে ভুট্টা আবাদ বাড়ছে। স্বল্প খরচে ফলন বেশি ও লাভ জনক হওয়ায় কৃষকরা ঝুঁকছেন ভুট্টা চাষের দিকে। রোগ বালাই কম এবং উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় কৃষকেরা অন্য ফসলের পরিবর্তে ভুট্টা চাষকে বেছে নিচ্ছেন। এক সময়ে পাহাড়িরা ভুট্টাকে নিজেদের খাবার হিসেবে  চাষ করলেও ইদানীং বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ভুট্টা চাষ বেছে নিচ্ছেন কৃষকরা।

চলতি মৌসুমে খাগড়াছড়ি জেলায় ৪০৮ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হচ্ছে। যার সাথে জড়িত আছেন প্রায় দুই হাজার কৃষক।

খাগড়াছড়ি জেলার চেঙ্গী, মাইনী, ফেনী ধুরুং ধলিয়া খালের তীর জুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে ভুট্টার গাছ। স্বল্প খরছে বেশি লাভ হওয়ায় জেলার পতিত জমিতে ভুট্টা চাষে চাষিদের আগ্রহ ক্রমেই বাড়ছে। এক ফসলী ও পতিত জমিগুলোতে ভুট্টা চাষের আওতায় আসায় খাগড়াছড়ি জেলায় এখন জমি পতিত থাকছে না বললেই চলে।

মাটিরাঙার গোমতির আলী আশরাফ পার্বত্যনিউজকে জানান, তিনি এ বছর বাজার থেকে ৩৫ টাকার ভুট্টার বীজ কিনে প্রায় দেড় হাজার টাকার ভুট্টা বিক্রি করেছেন।

বেলছড়ির ভুট্টা চাষি মো. রফিকুল ইসলাম পার্বত্যনিউজকে জানিয়েছেন, তিনি গত বছর ৩৩ শতক জমিতে ভুট্টা চাষ করে প্রায় ২০ হাজার টাকার ভুট্টা বিক্রি করেছেন।

অপর দিকে ডিভি পাড়ার মো. ইসমাইল হোসেন পার্বত্যনিউজকে জানান, ভুট্টার খাওয়া ছাড়াও বিভিন্নভাবে ব্যবহার হয়ে থাকে। সাধরণত সিদ্ধ ও পুড়িয়ে ভুট্টা খাওয়া হয়। তবে সব চেয়ে বেশি ব্যবহার  মাস ও মুরগির খাবার হিসেবে। এছাড়া ভুট্টার পাতা গো- খাদ্য হিসেবে, কাণ্ড ও মোচা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে।

খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মো. আবুল কাশেম পার্বত্যনিউজকে বলেন, খাগড়াছড়িতে মূলত পতিত জমিতে ভুট্টা চাষ হচ্ছে। রবি মৌসুমে উচ্চ ভূমিতে, যেখানে পানি সংকট রয়েছে এমন এলাকার কৃষকরা ভুট্টা চাষ করছেন। তার মতে, খাগড়াছড়ি জেলায় প্রতিবছর প্রায় আট হাজার হেক্টর মাঝারী উচু জমি পতিত থাকতো। কিন্তু ভুট্টা চাষ শুরু হওয়ায় এখন জেলায় আর কোনো জমি পতিত থাকছে না। দাম ভালো পাওয়ায় অনেক কৃষক তামাক চাষ ছেড়ে ভুট্টা চাষের দিকে ঝুঁকছেন।

মো. আবুল কাশেম পরিসংখান দিয়ে পার্বত্যনিউজকে বলেন, গত মৌসুমে জেলায় ৩শ ৮০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হলেও চলতি বছর ৪শ ৮ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। যার সাথে জড়িত আছেন প্রায় দুই হাজার কৃষক।

মাটিরাঙা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহ আলম মিয়া জানান, কৃষি বিভাগ বিনামূল্যে বীজ ও সারসহ নানা প্রণোদনা দেওয়ার কারণে  কৃষকদের মাঝে ভুট্টা চাষে আগ্রহ বাড়ছে। ভুট্টা চাষে পানি কম প্রয়োজন হয়। ইদানীং বিভিন্ন কোম্পানী স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ভুট্টা কিনে নিচ্ছে। তাছাড়া আলু ও বেগুনসহ বিভিন্ন সবজির সাথে ভুট্টা সাথী ফসল হিসেবে চাষ করা সম্ভব হওয়ায় অনেকে এক ফসলী জমিতে ভুট্টা চাষ করছেন।

সরকারি পৃষ্টপোষকতা পেলে ব্যাপক আকারে ভুট্টা চাষে পাল্টে দিতে পারে খাগড়াছড়ির অর্থনীতির চিত্র।

Exit mobile version