বাইশারীর সীমান্তবর্তী গহীন অরণ্য গয়াল মারায় সন্ত্রাসীদের অত্যাচারে সেনা ক্যাম্প স্থাপনের দাবি এলাকাবাসীর

বাইশারী প্রতিনিধি:

লামা উপজেলার পাহাশিয়াখালী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের গয়ালমারা গ্রামটি  লামা এবং পাহাশিয়াখালী থেকে অনেক দুরে গভীর জঙ্গলে অবস্থিত হলেও এটি উন্নয়নশীল একটি গ্রাম।

প্রায় ৬০টি পরিবারের বসবাস রয়েছে এ গ্রামে । অনেক বছর ধরে এ গ্রামে রয়েছে গ্রামটিতে মুসলিম ও ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন ধর্মালম্বী লোকের বসবাস।

পাহাড়ি আকাঁ বাঁকা পথ, উঁচুনিচু, সমতল ও পাহাড় বেষ্টিত গ্রামটিতে রয়েছে প্রচুর চাষাবাদের জমি এবং কয়েক হাজার হেক্টর রাবার বাগান। যতদূর দৃষ্টি যায়, শুধু চাষাবাদের জমি আর বাগান।

তবে প্রচুর সম্ভাবনাময়ী গ্রামটি নানা সমস্যায় জর্জরিত। এমনকি লামা ও পাহাশিয়াখালী হতে গ্রামটিতে যাতায়তের কোন রাস্তা নেই। কক্সবাজার রামু উপজেলার ঈদগড় বাজার হয়ে উক্ত গ্রামে যেতে হয় সরকারী যে কোন বাহিনীকে। বলতে গেলে আলিকদম, লামা থেকে ঈদগড় এসে তারপর সে গ্রামে যেতে হয়। ঈদগড় বাজার থেকেও অনেক দুরে এ গ্রাম। পাহাড়ি দুর্গম পথ পেরিয়ে অনেক দুরের পথ কিছুটা গাড়ী এবং পায়ে হেটে খাল বিল অতিক্রম করে অনেক কষ্ট করে এ গ্রামে যেতে হয়।

আর বর্ষাকালে যাওয়াটা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। ফলে গ্রামবাসীর চরম দুর্ভোগ দেখা দেয়। এখানকার লোকজন প্রতি শুক্রবার ঈদগড় বাজারে আসে কেনা কাটা করতে।

এছাড়া ঈদগড় ও ঈদগাহ এলাকার প্রায় ৫০জনের মত ব্যক্তি ওই গ্রামে কয়েকশত কোটি টাকা খরচ করে রাবার বাগান করেছে।

গ্রামের লোকজন ও বাগান মালিকের সাথে আলাপ কালে জানা যায়, কয়েক বছর ধরে গ্রামটিতে উপজাতি সন্ত্রাসীরা অত্যাচার, নির্যাতন চালাচ্ছে। এমনকি তাদেরকে চাঁদাও দিতে হচ্ছে ।

ভারী অস্ত্রধারী এসব উপজাতি ২০/৩০জনের সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীদের অত্যাচারে গ্রামবাসীসহ বাগান মালিকরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। দিনের পর দিন তাদের নির্যাতন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেকোন সময় তারা গ্রামে ঢুকে পড়ে। স্থানীয় উপজাতীরা তাদেরকে খাবার সহ যাবতীয় সহযোগিতা করছে বলে জানান গ্রামবাসীরা।

স্থানীয় বাসিন্দারা এইসব সন্ত্রাসীদের অত্যাচারের ভয়ে ৫০০০-১০০০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা দিতে বাধ্য হয় বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পিএসপি রাবার বাগানের ম্যানেজার সিরাজ জানান, গত মে মাসের ১তারিখ তাদের বাগানের অফিসে উপজাতী সন্ত্রাসীরা আক্রমন করে তাকে চাঁদার জন্য চিঠি দেয় এবং বাগানসহ সব কিছু উড়িয়ে দিবে বলে হুমকি দেয় এবং ২০হাজার টাকা দামের একটি ছাগল নিয়ে যায়।

এলাকাবাসী জানায়, উপজাতী সন্ত্রাসীরা বাগানের কর্মচারীদেরকে ধরে নিয়ে যায়। এগুলো ছাড়াও তারা আরো নানা ধরণের নির্যাতন চালায় বলে এলাকার লোকজন জানায়। তাদের অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় কিছুদিন আগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অভিযান চালালে উপজাতি সন্ত্রাসীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে।

এরপর আবারো সংগঠিত হয়ে এলাকায় এসে অনেককে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে বলে জানান এলাকার লোকজন এবং রাবার বাগান মালিকরা বাগানে যেতে পারছেনা। তাই এলাকাবাসীসহ রাবার বাগান মালিকরা উক্ত এলাকায় একটি সেনা ক্যাম্প স্থাপনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহযোগীতা কামনা করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন