parbattanews

লামার সেই ত্রিপুরা তরুনীর ভালোবাসার জয়

অবশেষে পৌর কাউন্সিলর সাকেরাপুত্র আলী হায়দার প্রকাশ সাগর সেই ত্রিপুরা তরুনীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। চার লাখ টাকা দেনমোহর নির্ধারণ করে বিয়ে ও কাবিন রেজিস্ট্রি হয় তাদের। এরমধ্যে উসুল (নগদ) দেখানো হয়েছে একলাখ টাকা। ওই যুবক ও ত্রিপুরা তরুনীর কাবিন এবং বিয়ের আকদ্ সম্পন্ন করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লামা পৌরসভার নিকাহ ও তালাক রেজিস্টার (কাজী) মাওলানা মোহাম্মদ ইলিয়াস।

এরআগে এই ত্রিপুরা তরুনী গত এক মাসের বেশি সময় ধরে প্রেমিক সাগর এর সাথে বিয়ের দাবিতে কাউন্সিলর সাকেরার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। আর এই খবর জানাজানি হয়ে থানা পুলিশ, হাসপাতাল এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় তোলে।

কাজী মাওলানা মোহাম্মদ ইলিয়াস জানান, তাদের কাবিন রেজিস্ট্রি এবং বিয়ের আকদ্ সম্পন্ন হয়েছে কাজীর অফিসে। পরে বিয়ের অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা ছিলো কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্টের’র হল রুমে। রেস্টুরেন্টটির স্বত্তাধিকারী মো. জিয়াউর রহমানও একই কথা বলেন। তবে এই বিয়ে অনুষ্ঠানে ছিলেন না ওই ত্রিপুরা তরুনীর মা, বাবা অথবা অন্য স্বজন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বিয়ের সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লামা পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য ফাতেমা পারুল, লামা উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহেদ উদ্দিন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মিল্কি রাণী দাশ, র্দুবার নারী নেটওয়ার্ক’র সভানেত্রী ও লামা এনজেড একতা মহিলা সমিতির নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারা বেগম, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি কাউন্সিলর মো. রফিক, মহিলা কাউন্সিলর মরিয়ম বেগম’সহ আরও অনেকে।

এই বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা একাধিক ব্যক্তি জানান, বিয়ের আগে ওই ত্রিপুরা তরুনী খিস্টান থেকে ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়েছেন লামা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। আদালতে এফিডেভিট মূলে নিজের প্রহেলিকা ত্রিপুরা নামটি বাদ দিয়ে নতুন নাম ধারণ করেছেন হেলেনা আক্তার।

সংশ্লিষ্টরা জানান, লামা সদর ইউনিয়নের দূর্গমের বাসিন্দা এই ত্রিপুরা তরুনী গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ভাড়া আছেন লামা পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর সাকেরার ভাড়া বাসায়। সেই থেকেই কাউন্সিলরপুত্র সাগর তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরে সেই সম্পর্কের জেরধরে বিয়ের জন্য চাপ দিতেই তাদের ভালোবাসায় ফাঁটল ধরে। আত্মগোপনে চলে যায় কাউন্সিলরপুত্র সাগর।

এরমধ্যে ওই ভাড়া বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয় এ ত্রিপুরা তরুনীকে। এখবর জানাজানি হওয়ার পর টাকার বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চালায় কাউন্সিল’র পক্ষের লোকজন। অতিগোপনে দফায় দফায় আয়োজন করা হয় রুদ্ধদ্বার বৈঠক। তবে তাদের এই অতিগোপনীয়তার মধ্যেও খবরটি স্থানীয় পুলিশ স্টেশন হয়ে চলে যায় জেলার শীর্ষ কর্তার কানে। আর তখনই পুলিশ সাংবাধিক, মানবাধিকার কর্মী, র্দুবার নারী নেটওয়ার্ক ওই তরুনীর পাশে গিয়ে দাঁয়। একইভাবে ওই কাউন্সিলরের বাসায় অবস্থান নিয়ে বিয়ের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যায় এ ত্রিপুরা তরুনী। তার এই দীর্ঘ এক মাসের বেশি সময়ের আন্দোলনের পর আত্মগোপন থেকে বাড়ি ফিরে সাগর। ইসলামী রীতি অনুযায়ি বিয়ে পড়ানো হয় তাদের।

Exit mobile version