লামায় চাঁদা না দেওয়ায় উপজাতীয় সন্ত্রাসী কর্তৃক স্কুল শিক্ষকের বসতবাড়িতে আগুন
বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার রূপসী পাড়া ইউনিয়নের হাফেজ পাড়ায় স্কুল শিক্ষক মোঃ খালেকুজ্জামান এর বসতবাড়ির একটি ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা।উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের লাগানো আগুনে বসতঘরে থাকা ৫ মেট্রিক টন ধান, ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্রসহ ১২ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) ভোর রাতে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে স্কুল শিক্ষক খালেকুজ্জামান জানিয়েছেন।
গত ১৫ দিনে মাস্টার পাড়া, হাফেজ পাড়া ও বৈদ্য ভিটায় ১২ টির অধিক বাড়ি-ঘর দুর্বৃত্তরা আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে বলে স্থানীয় ইউপি মেম্বার আবু তাহের জানিয়েছেন।
মোঃ খালেকুজ্জামান জানান, গত ৩ ফেব্রুয়ারি ৩ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে তার কাছে একটি উড়ো চিঠি আসে। উড়ো চিঠিতে থাকা মোবাইল নাম্বারে কল করলে কেউ রিসিভ করে নি।
বিষয়টি লামা থানার পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
রবিবার রাতে টিনের ঘরটিতে আগুন জ্বলতে থাকলে বাড়ির সকলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। মুহুর্তেই ঘরটি পুড়ে যায়। মাস্টার পাড়া, হাফেজ পাড়া ও বৈদ্য ভিটার শাহ আলম, সুষম মার্মা, চনুমং মার্মা, মংক্যচিং মার্মা, হ্লামাপ্রু মার্মা জানান, গত ১৫ দিন ধরে তাদের বসতবাড়িতে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এসকল এলাকার অনেক খড় (কুইজ্জা) পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
চনুমং মার্মা জানান, তার কাছে ১ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে একটি উড়ো চিঠি আসে। সেও চিঠিতে উল্লেখিত মোবাইল নাম্বারে কল দিলে কেউ রিসিভ করেনি বলে জানান।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার মোঃ আবু তাহের ও মোঃ শফি জানান দুর্বৃত্তদের অব্যাহত নাশকতা মূলক কর্মকাণ্ডের কারণে স্থানীয় জনসাধারণের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। রূপসী পাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু মার্মা জানান অত্র ইউনিয়নের মাস্টার পাড়ার শৈ প্রু মার্মার ছেলে চিং চিং মার্মা (২৫) লামার বাহিরে দুই সহযোগী নিয়ে রূপসী পাড়া সহ বিভিন্ন এলাকায় চুরি ও অপরাধমূলক কাজ করে যাচ্ছে।
সে দিনে জঙ্গলে থাকে এবং রাতে বের হয়ে চুরিসহ নাশকতামূলক কাজ করে। উড়ো চিঠি চিং চিং মার্মায় দিয়েছে।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, রূপসী পাড়ার একটি চক্র এই জাতীয় অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ড করে মনোযোগ আকর্ষণ এর চেষ্টা করছে।
উড়ো চিঠি দিয়ে চাঁদা দাবি এবং বাড়ী ঘরে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। সন্দেহ ভাজন চিং চিং মার্মাসহ তার সহযোগিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
লামা থানা অফিসার ইনচার্জ অপ্পেলা রাজু নাহা জানান, চাঁদা দাবি ও আগুন লাগিয়ে বাড়ি ঘর পুড়িয়ে দেওয়া অপরাধীদের যেকোনো মূল্যে গ্রেফতার করা হবে।