লামায় জমির জন্য বড় ভাইয়ের পা ভেঙ্গে দিলো আপন ছোট ভাই

28051227

লামা প্রতিনিধি:
বান্দরবানের লামায় এক খন্ড জমির জন্য বড় ভাই আবদুল কাদেরের পা ভেঙ্গে দিল ছোট ভাই আবদুর রশিদ। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের সাপমারা ঝিরি এলাকায়। শুধু তাই নয়, একাধিকবার হামলা করেও জমি দখলে নিতে না পেরে আপন বড় ভাইকে অপহরণ করে হত্যার চেষ্টাও করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে এসব অভিযোগ অম্বীকার করে আবদুর রশিদের স্ত্রী বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা। আমরা কারো জমি দখল করতে যাইনি। এছাড়া আবদুল কাদের কখনো অপহরণ হয়নি। এসব তাদের সাজানো নাটক। বসতভিটাসহ জমি রক্ষায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন বড়ভাই আবদুল কাদের।

অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের সাপমারা ঝিরির মৃত আলতাফ মিয়ার দুই ছেলে আবদুল কাদের ও আবদুর রশিদ। এ দুই ভাইয়ের নামে ৩০৫নং গজালিয়া মৌজায় পৃথক হোল্ডিং এ সাড়ে ৪ একর করে ৯ একর জমি আছে। বড় ভাই আবদুল কাদেরের জমির হোল্ডিং নং- আর/৬১৪ আর ছোট ভাই আবদুর রশিদের হোল্ডিং নং- আর/৬৪২। আবদুল কাদেরের জমি সড়ক সংলগ্ন হওয়ায় ও বর্তমানে মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় সম্প্রতি এ জমির প্রতি লোলুপ দৃষ্টি পড়ে ছোট ভাই আবদুর রশিদের। তাইতো শুরু হয় বড় ভাইয়ের উপর হামলা নির্যাতন। এতেও না পেরে আবদুর রশিদ আশ্রয় নেয় ছলচাতুরির। ২০০৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারী আবদুর রশিদের নামীয় আর/৬৪২ নং হোল্ডিং এর জমির চৌহদ্দি বড় ভাই আবদুল কাদেরের জমির চৌহদ্দির হুবহু মিল রেখে সংশোধনের জন্য বান্দরবান জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেন। এরপর আবদুর রশিদ ছলনার আশ্রয় নিয়ে তার নামীয় সাড়ে ৪ একর জমি হতে ২০১২ সালের ২১ মে একই এলাকার জনৈক আনোয়ার হোসেনের নিকট ২ একর ও সাবেক গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিব লিটন দাশের নিকট ৪ একর জমি বিক্রি করেন। অথচ তার হোল্ডিং এ আছে মাত্র সাড়ে ৪ একর। এখন জমি ক্রেতাদেরকে জমি পুষিয়ে দিতে না পেরে বড় ভাই আব্দুল কাদের ও তার পরিবারের সদস্যদের উপর শুরু হয় একের পর এক হামলা নির্যাতন। এসব বিষয়ে একাধিক জিডি ও মামলা করা হয়।

বড়ভাই আবদুল কাদের লামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এ প্রতিবেদককে বলেন, ছোট ভাই আবদুর রশিদগং আমার বসতভিটাসহ জমি দখলে নিতে ২০১২ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ভোরে আমাকে অপহরণ করে নিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছেন। এ সময় ভাগ্যক্রমে আমি প্রাণে বেঁচে যাই। এতে ব্যর্থ হয়ে সর্বশেষ গত ৩০জুন সকালে আবদুর রশিদের নেতৃত্বে তার ৪ ছেলেসহ ১০-১২ জন সংঘবদ্ধ হয়ে অতর্কিত আমার বসতঘরে ঢুকে হামলা চালায়। এ সময় তারা আমার পা ও মাথায় লোহার রড় দিয়ে প্রচন্ড আঘাত করেন। এতে আমার পা ভেঙ্গে যায়। মাথায় মারাত্মক জখম হয়। বর্তমানে আমি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এখনো পুরোপুরি সুস্থ হতে পারিনি। এ ঘটনায় আমার স্ত্রী রাবেয়া বেগম বাদী হয়ে উপজেলা জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা করেন।

আবদুল কাদেরের স্ত্রী রাবেয়া বেগম জানান, আবদুর রশিদগং আমার স্বামীর নামীয় ও ভোগ দখলীয় জমি দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এখন ক্রেতাদেরকে জমি দখলে দিতে না পেরে আমাদের জমি দখলে নিতে হামলা করছেন। তিনি জানান, আব্দুর রশিদের ২ ছেলে সম্প্রতি জামিনে বেরিয়ে এসে আমাদের প্রানে মেরে ফেলার হুমকি-ধমকি অব্যাহত রেখেছেন। আমরা এ জুলুম, নির্যাতন ও হুমকি-ধমকি থেকে রেহাই এবং জমি রক্ষায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এলাকার প্রবীণ ব্যক্তি মো. সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, বন্দোবস্তি প্রাপ্তি পর থেকে দেখেছি আবদুল কাদের তার জমিতে ভোগ দখলে আছেন। সম্প্রতি তার ছোট ভাই আবদুর রশিদ ওই জমি দখলে নেওয়ার জন্য বার বার হামলা চালাচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন