parbattanews

লামায় টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে পানি বন্দি প্রায় ৩০ হাজার মানুষ

গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে পার্বত্য বান্দরবানের লামার নিম্নাঞ্চল। ডুবে গেছে বাজার, বাড়ি-ঘর, মাছের প্রজেক্ট, আবাদকৃত কৃষিজমি ও বীজতলা। ঘর বন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। বেশ কিছু জায়গায় ছোটখাট পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। চাপা পড়েছে বেশ কিছু ঘরবাড়ি। তবে এতে প্রাণহানীর কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে পাহাড়ি ঢলে লামা-আলীকদম সড়কের বিভিন্নস্থান পানিতে রাস্তা ডুবে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে লামা মাতামুহুরী নদীর পানি।

লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোস্তফা জাবেদ কায়সার জানান, দুর্যোগে সহযোগিতার জন্য উপজেলার বিভিন্নস্থানে ৫২টি কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে লামা হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস, যুব রেড ক্রিসেন্ট ও লামা থানা প্রস্তুত রয়েছে। পানি ও পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে থাকা প্রায় পাঁচশ নারী-পুরুষ ও শিশুকে রবিবার দিনগত রাতেই আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। তাছাড়া, পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের নিরাপদে চলে আসতে মাইকিং করা হচ্ছে।

ইউএনও মোস্তফা জাবেদ কায়সার বলেন, লামা পৌরসভা ও উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ৫৫টি প্রাথমিক স্কুল, মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসাকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা দেয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আসা লোকজনের জন্য রাতে খিচুড়ি ও শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লামা পৌর শহরের নয়াপাড়া, টিএন্ডটি পাড়া, চেয়ারম্যান পাড়া, পাহাড় পাড়া, উপজেলা পরিষদের আবাসিক এলাকা, বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কয়েক শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। লামা-আলীকদম সড়কের লাইনঝিরি, ছাগলখাইয়া, শিলেরতুয়া, কেরারঝিরি, দরদরাঝিরি এলাকায় রাস্তা পানির নিচে ডুবে গেছে। এতে করে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অতি বৃষ্টির ফলে মাতামুহুরী নদী সহ লামার সবকয়টি খালে বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে লামা পৌর শহরে চেয়ারম্যান পাড়া ও নয়া পাড়া, ফাইতং ইউনিয়নের বড় মুসলিমপাড়া এবং সরই আন্ধারি এলাকায় কয়েকস্থানে পাহাড় ধসের খবর পাওয়া গেছে। রবিবার সকাল থেকে কখনো হালকা কখনো ভারী বৃষ্টি হচ্ছে।

লামা এনজেড একতা মহিলা সমিতির নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারা বেগম জানান, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ফাতেমা পারুল ও এনজেড একতা মহিলা সমিতির উদ্যোগে লামায় পানি বন্দিদের মাঝে শুকনো খাবার ও খিচুড়ি বিতরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পানি বন্দি মা ও শিশু উদ্ধার করে নিরাপদে সরিয়ে আনতে কাজ করছে সংস্থার সাহায্যকর্মীরা।

Exit mobile version