লামায় ভুমি বিরোধের জের ধরে হামলার ঘটনায় ভাই-বোনের পাল্টা-পাল্টি সাংবাদিক সম্মেলন
লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি:
বান্দরবানের লামা পৌর এলাকার নয়াপাড়ায় ৩ শতক জমি দখলকে কেন্দ্র করে আপন দুই ভাই-বোনের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টা পাল্টি সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার লামা প্রেসক্লাবে পক্ষদ্বয় পৃথক দুটি সাংবাদিক সম্মেলন করে। এইদিন সকাল ১১ টায় প্রথম সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করেন ভাই ছুরত আলমের স্ত্রী স্কুল শিক্ষিকা ইসমেতারা বেগম। বিকাল ৩ টায় পাল্টা সাংবাদিক সম্মেলনটি করেন বোন আবচারু বেগম।
সকালের সাংবাদিক সম্মেলনে ভাই ছুরত আলমের পক্ষে স্ত্রী ও বিলছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ইসমেতারা লিখিত বক্তব্যে জানান, তার স্বামী ছুরত আলম তার পিতা মোহাম্মদ আলীর নিকট হতে ৩ শতক জমি কিনে বসতঘর নির্মাণ করে ভোগদখল করে আসছিলেন। গত ৬ আগস্ট ভোর চারটায় শ্বশুর মোহাম্ম্দ আলীর নেতৃত্বে মেয়ে আবচারু বেগম ও স্বামী আলম মাষ্টার, ছেলে কুতুব উদ্দিন বাবু, শ্বাশুড়ি লাইলা বেগম, মেয়ে ডালিয়া এবং ফরিদা ইয়াসমিন মুন্নিসহ আরো অজ্ঞাতনামা লোকজনকে সংগঠিত করে অতর্কিতে তাদের ঘরে ঢুকে দা, লাঠি, লোহার রড ও ইট দিয়ে তাকে ও তার স্বামী ছুরত আলম এবং শিশু পুত্র হিমেলকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি আঘাত করেন। তাদের আক্রমনে স্বামী-স্ত্রী ও শিশু পুত্র হিমেল রক্তাক্ত জখম হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মৃত ভেবে হামলাকারীরা চলে যায়। পরে এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তার স্বামী ছুরত আলমের শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। সেখানে সাত দিন চিকিৎসার পর একটু সুস্থ হলে গত ১৮ আগষ্ট লামা থানায় তিনি বাদি হয়ে লামা থানায় মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-১০ তাং-১৮/০৮/১৩ইং)। কিন্তু প্রকাশ্যে আসামীরা ঘুরা ফেরা করলেও অজ্ঞাত কারনে থানা পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করছেনা। স্কুল শিক্ষিকা ইসমেতারা বেগম হামলাকারীদের গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী জানান।
অপরদিকে, একইদিন বিকাল ৩ টায় বোন আবচারু বেগম সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করে বলেন, তিনি তার বড় ভাই ফরিদুল আলমের নিকট হতে ৩ শতক জমি কিনেন। ঘটনার সময় মেঝ ভাই ছুরত আলমকে এই জমিতে ঘর তৈরি করতে দেখেন। এতে বাধা দিলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে দা, লাঠি, লোহার রড ইত্যাদি দ্বারা প্রথমে ছোট ভাই কুতুব উদ্দিন বাবুকে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করেন। তারা আহত বাবুকে উদ্ধার করতে এগিয়ে গেলে তাদের উপরও হামলা চালায়। এই ঘটনায় গত ২১ অগষ্ট তিনি বাদি হয়ে লামা থানায় ভাই ছুরত আলম, ভাবী ইসমেতারা বেগম ও তাদের ছেলে হিমেল মোহাম্মদ তুষারকে বিবাদী করে মামলা করেছেন (মামলা নং-১২, তাং ২১/০৮/১৩ ইং)। এ ঘটনায় পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন আবচারু বেগম।