parbattanews

লামায় ম্রো-ত্রিপুরাদের উচ্ছেদ চেষ্টার সত্যতা পেয়েছে মানবাধিকার কমিশন

বান্দরবানের লামা উপজেলায় ম্রো ও ত্রিপুরাদের গ্রামে রাবার চাষের নামে এসব ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষকে উচ্ছেদের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।

২৬ এপ্রিল লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের লাংকমপাড়া, জয়চন্দ্রপাড়া ও রেংয়েনপাড়ার জুমচাষের প্রাকৃতিক বনাঞ্চল, ফলদ-বনজ বাগান ও ধানের জমি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর বিষয়টি মানবাধিকার কমিশনের গোচরে আসে। কমিশন বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এ বিষয়ে সত্যতা পায় বলে জানিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য কামাল উদ্দিন আহমেদ।

বৃহস্পতিবার (১২ মে) জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘রাবার কোম্পানিগুলো স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদেরে ওপর রীতিমতো অত্যাচার শুরু করেছে। একধরনের ভীতিকর অবস্থা সৃষ্টি করে তাদের ওপর নিপীড়ন চালাচ্ছে। এবার রাবার কোম্পানিগুলোর হামলায় স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদেরে ঝরনাগুলোও নষ্ট হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।’

মানবাধিকার কমিশন গতকাল বুধবার (১১ মে) দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রায় ৩৫০ একর জুমচাষের প্রাকৃতিক বন পুড়িয়ে দেওয়া, পানির ঝরনা বিনষ্ট করা এবং পরবর্তী সময় এর ফলে সৃষ্ট খাদ্য ও সুপেয় পানির অভাবে তিনটি গ্রামের মানুষের অত্যধিক কষ্টে জীবনযাপনের বিষয়টি নিয়ে কমিশন ভাবছে। খাদ্যসংকটের কারণে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর কিছু মানুষ গাছের লতাগুল্ম খেয়ে রয়েছে বলেও জানা যায়।

এসব প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয় যে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড দীর্ঘদিন থেকে উক্ত এলাকার ম্রো ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীকে উচ্ছেদের চেষ্টা করছে। এ ছাড়া স্থানীয় লোকজনের নামে বিভিন্ন সময় মামলা দিয়ে দেশ ছাড়া করার চেষ্টা করা হচ্ছে মর্মেও উল্লেখ রয়েছে। এ বিষয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সংগৃহীত তথ্যেও এসব অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা লক্ষ করা গিয়েছে।

কমিশনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, স্থানীয়ভাবে ত্রাণ বিতরণ হলেও তা পর্যাপ্ত নয়। ক্ষতিগ্রস্ত সব পরিবারকে পর্যাপ্ত খাদ্য, পানি ও প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে গৃহনির্মাণসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়য়ের সচিবকে বলা হয়েছে।

এ ছাড়া স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে যাতে কোনোভাবেই কোনো হয়রানি করা না হয় এবং অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে বলা হয়। এর পাশাপাশি বিষয়টি সার্বিক তত্ত্বাবধান এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আদেশের অনুলিপি চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনারকে দেওয়া হয়েছে।

সূত্র: প্রথমআলো

Exit mobile version