বান্দরবানে এলজিইডি’র লামা-সূয়ালক সড়কের বেহাল দশা
লামা প্রতিনিধি:
বান্দরবান এলজিইডি’র লামা-সূয়ালক সড়ক যানবাহন চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। প্রবল বর্ষণ ও পাহাড় ধসের কারণে সড়কের বিভিন্ন অংশে ধসের সৃষ্টি হয়েছে। এ সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল অনুপযোগী হওয়ায় গজালিয়া ও সরই ইউনিয়নের সাথে উপজেলা সদরের সড়ক যোগাযোগ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
সড়কের লামা বাজার হইতে সরই আমতলী এলাকা পর্যন্ত ১১টি স্থানে বড় বড় ধসের সৃষ্টি হয়েছে। পুরো সড়কের বেহাল দশায় সড়ক যোগাযোগ নাজুক অবস্থায় পৌঁছেছে।
বান্দরবান জেলা সদরের সাথে লামা, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা অাভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য এলজিইডি সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে লামা-সূয়ালক সড়ক নির্মাণ করে। সড়কের লামা অংশে রয়েছে ২৯.৫ কিলোমিটার।
গত বছর বর্ষায় প্রবল বর্ষণ ও পাহাড় ধসে সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়। সড়কের মাঝখানে ফাটল সৃষ্টি হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিপাতেই পাহাড় ধসের সৃষ্টি হয়। তাছাড়া সড়কের কার্পেটিং নষ্ট হয়ে গেছে।
লামা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. ইসমাইল জানান, লামা-সূয়ালক সড়কের কার্পেন্টিং এর টপ নষ্ট হয়ে পড়েছে। সড়কের পাহাড়ের পাশের ড্রেনের উচ্চতা বাড়ানোসহ পর্যাপ্ত ড্রেনের প্রয়োজন। সড়কটি ওভার লে দ্বারা উন্নয়ন করা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
সরই ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দিন জানান, সড়কের শিলেরঝিরি, আন্দারী তংগাঝিরি, আন্দারী হিমছড়ি ও আমতলী এলাকায় সড়কের বিশাল অংশজুড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে এ সড়ক টেকসই উন্নয়ন প্রয়োজন।
আন্দারী এলাকার মো. জিয়াস উদ্দিন জানান, সড়কটি নষ্ট হয়ে পড়ায় স্থানীয় জনসাধারণকে দূর্ভোগের সম্মুখিন হতে হচ্ছে।
অপরদিকে জানা গেছে, এলজিইডি গত অর্থ বছরে সিএইচটি, জিওবি রক্ষণাবেক্ষণ এর আওতায় লামা-সূয়ালক সড়কের চেইনেজ ২ হাজার কিলোমিটার হইতে ৯ হাজার ১শ কিলোমিটার পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার রাস্তায় কার্পেটিং, সিলপোর্ট ও ড্রেন নির্মাণের জন্য মেসার্স মিল্টন ট্রেডার্স নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ প্রদান করে। ২টি প্যাকেজে প্রায় ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা চুক্তি মূল্যে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়।
অভিযোগ উঠেছে সরেজমিন বাস্তবতার নিরিখে প্রাক্কলন তৈরি না করায় বরাদ্দকৃত এই টাকা অনেকটা অপচয় হচ্ছে। সড়কের প্রয়োজনীয় উন্নয়ণ প্রাক্কলন না করে দায়সরাভাবে প্রাক্কলন তৈরি করে প্যাকেজের দরপত্র আহ্বান করে ঠিকাদার নিযুক্ত করা হয়েছে। প্রয়োজনের আলোকে কাজ না করে উন্নয়নের টাকা সরকারি তহবিল থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যে এই প্রকল্পের অধীনে সম্পাদিত কাজের অনেক অংশ নষ্ট হয়ে গেছে। প্যাকেজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে মুজিবুর রহমান জানান, প্যাকেজ ২টি কাজের অগ্রগতি ৩০%।
এলজিইডি’র বান্দরবান জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী আবু তালেব চৌধুরী জানিয়েছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক উন্নয়নের আওতায় লামা-সূয়ালক সড়কের ১৫ কিলোমিটার রাস্তা অনুমোদন করা হয়েছে। সদর দপ্তরকে সড়কের বেহাল দশার কথা জানানো হয়েছে।