parbattanews

শত বছরের ছড়া ভরাট করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ

কক্সবাজার শহরের বাইপাস সড়কের জেলগেইট এলাকায় পাহাড় কেটে শত শত বছরের পুরনো ছড়া ভরাট করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ চলছে। জামাল উদ্দিন বাবুল নামের এক ব্যক্তি গত এক মাস ধরে পাহাড় কেটে ছড়া ভরাট করে তাতে পাকা দালান নির্মাণের কাজ করছেন।

সোমবার (২৩ মে) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, জামাল উদ্দিন বাবুলের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন শ্রমিক পাহাড় কেটে মাটি সরানো ও নির্মিতব্য ভবনের প্রথম তলার ছাদ ঢালাই দেয়ার জন্য কাজ করছেন। জানতে চাইলে জামাল উদ্দিন বাবুল জানান, বসবাসের জন্য তিনি পাহাড়ের একাংশ কেটে পাকা বাড়ি নির্মাণ করছেন। ছড়ায় ফেলা মাটি তুলে নেবেন। তিনি একা নন পাশের অনেকেই ছড়া দখল করেছেন। এছাড়া তিনি জায়গাটি কিনে নিয়েছেন বলে দাবি করেন।

এলাকাবাসী অভিযোগ করে জানান, শত শত বছরের পুরনো ছড়াটি কেউ পাহাড় কেটে মাটি ফেলে আবার কেউ সীমানা পিলার দিয়ে দখল করে সংকুচিত করে ফেলেছেন। এতে পানি চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। বর্তমানে জামাল উদ্দিন বাবুল, রিয়াদ, হামিদ, ভুলু, খসরু, নাজিম উদ্দীন, ফরহাদ সহ ৮ থেকে ৯ জন ব্যক্তি ছড়াটি বিভিন্ন কায়দায় দখল অব্যাহত রেখেছেন বলে এলাকাবাসী জানান।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রিয়াদ জানান, ভুলু, হামিদসহ কয়েকজন ব্যক্তি পাহাড় কেটে মাটি ফেলে কৌশলে দীর্ঘদিনের ছড়াটি ভরাট করে ফেলছেন।

অপরদিকে ভুলু জানান, রিয়াদসহ কয়েকজন মিলে পানি চলাচলের ছড়ার মধ্যে সীমানা খুঁটি দিয়ে ছড়া দখল করেছেন।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ ইউনুস জানান, ২৫ থেকে ৩০ ফুট প্রস্থের ছড়াটি কিছু কিছু অংশে এখন মাত্র ৫ ফুট অবশিষ্ট আছে। সেখানে গত এক মাস ধরে বাবুল নামের এক ব্যক্তি পাহাড় কেটে মাটি ফেলে ছড়াটি ভরাট করে পাকা দালান নির্মাণ করছেন। তাকে বাধা দিলেও তিনি তা আমলে নিচ্ছে না বলে জানান তিনি।

পরিবেশ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘এনভায়রনমেন্ট পিপল’ এর প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ বলেন, ‘এলাকাবাসীর মৌখিক অভিযোগ পাওয়ার পর দুই দফা পরিদর্শন করে পাহাড় কেটে মাটি ফেলে ছড়া ভরাট করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ, বস্তা ফেলে, সীমানা খুঁটি ও সীমানা প্রাচীর দিয়ে ছড়া দখলের ভয়াবহ চিত্র দেখা যায়। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।’

ছড়া শ্রেণির সরকারি জমি থেকে দ্রুত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ছড়াটি দখলমুক্ত করা ও পাহাড় কাটা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক শেখ মো. নাজমুল হুদা জানিয়েছেন, পাহাড় কেটে মাটি ফেলে ছড়া ভরাট করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কক্সবাজার সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জিল্লুর রহমান জানান, বিষয়টি তার নজরে এসেছে। তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নিবেন।

Exit mobile version