parbattanews

শনিবার কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন: যোগ্য ব্যক্তি নেতৃত্বে আসুক প্রত্যাশা তৃণমূলের

স্টাফ রিপোর্টার:

দীর্ঘ সাড়ে ৪ বছর পর শনিবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন। সম্মেলনকে ঘিরে অনেকটাই উজ্জিবিত হয়ে ওঠেছে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। সম্মেলনে মেয়াদ উত্তীর্ণ বর্তমান কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে সংগঠনটি সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে নতুন কমিটিতে নিজেদের জায়গা করে নিতে দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থীরা। নিজেদের অবস্থান জানান দিতে জেলার বিভিন্ন উপজেলা শহর, ইউনিয়ন, হাট-বাজার এবং পাড়া-মহল্লায় ব্যানার-ফেষ্টুন সাঁটিয়েছেন প্রার্থীরা। তোরণের মাধ্যমে নিজেদের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে কেন্দ্র থেকে আমন্ত্রিত অতিথিদের। জেলা শহর এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে প্রতিনিয়ত অনুষ্ঠিত হচ্ছে সভা সেমিনার এবং মটর সাইকেল মহড়া।

অপরদিকে গণতান্ত্রিক পন্থায় নেতা নির্বাচনের আশায় সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রতিটি থানায় থানায় কাউন্সিলরদের সমর্থন আদায় করার চেষ্টা করেছেন। পাশাপাশি জেলা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা-কর্মীদের সু-নজরে আসার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন পদপ্রত্যাশীরা। তবে সম্মেলন ঘিরে নেতা-কর্মীরা উৎসাহ-উদ্দীপনার কথা জানালেও কাঙ্খিত পদ পেতে সহিংস ঘটনার আশঙ্কাও রয়েছে তাদের। তবে সব কিছুর উপরে যোগ্য নেতৃত্বকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা।

সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, জেলা সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। সকাল ১০টায় সম্মেলন উদ্ধোধন করবেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি এইচ.এম বদিউজ্জামান সোহাগ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত সিকদার, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় উপ কমিটির সহ-সম্পাদক ব্যরিষ্টার বাবু প্রশান্ত ভূষণ বড়ুয়া, শাহজাদা মহিউদ্দীন, জহির উদ্দীন মাহমুদ লিপ্টন, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা এতে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আলী আহমদের সভাপতিত্বে আয়োজিত সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিদ্দিকী নাজমুল আলম।

জানা গেছে, নুতন কমিটির সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন ৫ জন। এরা হলেন-সরওয়ার আজম, ইসতিয়াক আহমেদ জয়, আহমেদ করিম সিকদার, ওয়াহিদুর রহমান রুবেল ও যাকারিয়া। এদের মধ্যে শিক্ষা ও সাংগঠনিক দক্ষতায় সরওয়ার আজম সবার চেয়ে এগিয়ে। সরওয়ার আজম চট্টগ্রাম বিভাগের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে অনার্স-মার্স্টাস সমাপ্ত করেছেন। সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সহ-সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। স্থানীয় প্রভাবশালী ও কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকে তার জন্যে কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হলেন মুনাফ সিকদার, মোরশেদ হোসাইন তানিম, হারুনুর রশিদ মিঠুন, সেলিম সরওয়ার, ইসমাইল সাজ্জাদ ও বাঘা রুবেল। এছাড়াও আরো কয়েকজন প্রার্থী সভাপতি-সম্পাদক পদে লড়ছেন বলে জানা গেছে।

সভাপতি পদপ্রার্থী সরওয়ার আজম জানান, তৃণমূল ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা আমাকে ব্যাপক সমর্থন দিচ্ছেন। দায়িত্ব পেলে ছাত্রলীগকে তৃণমূল পর্যায়ে সাংগঠনিকভাবে আরো মজবুত করবো। সংগঠনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য মেনে মাদক ও সন্ত্রাস মুক্ত ছাত্র রাজনীতি গড়ে তোলার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

একই আশাবাদ ব্যক্ত করেন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী সেলিম সরওয়ার। তিনি জানান, ‘সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদদ্ধীতা করছি। নেতৃত্বে আসলে জামায়াত-শিবিরের বলয় ভেঙ্গে কক্সবাজারকে ছাত্রলীগের ঘাটি হিসেবে পরিণত করতে কাজ করে যাবো।’

সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের আজাদ জানান, ‘কেন্দ্র ঘোষিত তারিখেই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এ লক্ষে জোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।’
আলী আহমদ বলেন, সম্মেলন সফল ও স্বার্থক করার লক্ষে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। সম্মেলন থেকে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বর্তমান কমিটির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে আলী আহমদকে সভাপতি ও আবু তাহের আজাদকে সাধারণ সম্পাদক করে বর্তমান কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এই কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক সহ একাধিক নেতার বিরুদ্ধে নানা বিতর্ক রয়েছে। বিতর্কিত কর্মকান্ডে জড়িয়ে বেশ কয়েকবার সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

Exit mobile version