parbattanews

শবে বরাত নেই চান মিয়ার পরিবারে

মো. আল আমিন, দীঘিনালা:

জীবন মানেই সংগ্রাম। সংগ্রাম করেই প্রতিটি মানুষকে বেচেঁ থাকতে হয়। তেমনি চান মিয়া তার জীবিকা নির্বাহের জন্য বেচে নিয়ে ছিল মটরসাইকেল অর্থাৎ মটরসাইকেল দিয়ে ভাড়া চালাতেন। প্রতিদিন সে গাড়ি চালিয়ে বাড়ি আসতেন কিন্তু গত বৃহঃপ্রতিবার আর বাড়ি আসেনি পরদিন এসেছে তার লাশ।

মো. চান মিয়া (৩৮), পিতা- মো. আশরাফ আলী,মাতা- মোছা. রুপজান বানু। দুই সংসারে ছেলে তিনজন, মেয়ে তিনজন। চান মিয়া খাগড়াছড়ির দিঘীনালা উপজেলার কবাখালী ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক। ধারনা করা হয়, গত ২০ জুন খাগড়াছড়ি- দীঘিনালা সড়কের পাঁচ মাইল এলাকায়
অস্রধারী সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যা করে তার মটরসাইকেল নিয়ে যায়। এখনো মটরসাইকেলটির কোন
সন্ধান পাওয়া যায় নি। ধারণা করা হচ্ছে, চাঁদার দাবীতে তাকে খুন করা হয়। পুলিশও তাই বলছে।

 চান মিয়ার বাড়িতে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে আছেন বৃদ্ধ মা, বাবা। তখন পর্যন্ত সন্তানের জন্য কেঁদে যাচ্ছিলেন তারা। চান মিয়া ছিলেন তাঁর সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যাক্তি, সবার ভরসাস্থল।  আজ শবে-বরাত, এই কথা স্মরণ করিয়ে দিতেই চোখের পানি ছেড়ে দিলেন তাঁর স্ত্রী রাজিয়া বেগম। কেঁদে কেঁদে বলতে লাগলেন,”গত বছরের এই দিনেও তিনি ছিলেন আমাদের সাথে, আজ নাই। ছেলে- মেয়ে গুলো এতিম হয়ে গেল। গত বছরও বাবার হাত ধরে নামাজের জন্য মসজিদে গিয়েছিল আমার ছেলেরা, আজ কার হাত ধরে যাবে তারা। আজ এখানে কোনো শবেবরাত নেই।”

চান মিয়ার পরিবারকে সান্তনা দেয়ার জন্য তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন নিজ দল বিএনপি এমনকি আওয়ামীলীগের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। দলমত নির্বিশেষে সবার সাথেই ছিল তাঁর সুসম্পর্ক, অথচ তাকেই খুন করা হল চাঁদার দাবীতে।

এদিকে হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবীতে গত ২২ জুন দীঘিনালাতে ও জেলা সদরে বিক্ষোভ-মিছিল করে বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ। বিক্ষোভ- সমাবেশে চান মিয়া হত্যাকারীদের বিচারের দাবী উঠে। কিন্তু এ দাবী কি পাহাড়ের আরো আট দশটা খুনের মতো সময়ের স্রোতে হারিয়ে যাবে- এ প্রশ্ন সবার।

Exit mobile version