মহেশখালীতে ৪১টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী উপ-বৃত্তি থেকে বঞ্চিত হবার পথে

fec-image

মহেশখালীতে বিকাশ এজেন্টের গাফেলাতির কারণে ৪১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় সাড়ে ১৬ শত শিক্ষার্থী উপ-বৃত্তির টাকা থেকে এবার বঞ্চিত হবার পথে। যার কারণে ঐ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা আতংকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। এমনকি উপ-বৃত্তির টাকা স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ শেষ করার সাথে সাথে বাকী শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও শিক্ষকদের মধ্যে ঘটে যেতে পারে নানা ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা।

সরেজমিনে অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা যায়, গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা যাতে অর্থের অভাবে মাঝপথে পাঠদান থেকে ঝরে যেতে না পারে তার লক্ষ্য উদ্দেশ্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে শেফায়েত নামের একটি প্রতিষ্ঠান মাধ্যমিক পর্যায়ের ৮ম, ৯ম ও ১০ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের উপ-বৃত্তির ব্যবস্থা চালু করেছেন ২০১০ সাল থেকে। এ সব টাকা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে দিয়ে আসছেন।

তবে, ২০১৭ সাল থেকে এ প্রজেক্ট বন্ধ করে দেন উক্ত প্রতিষ্ঠানটি। পরে এস ইডিপি নামের একটি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটি হাতে নেন। এ হিসেবে ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ সালের জুন মাস পর্যন্ত আড়াই বছরের উপ-বৃত্তির টাকা এককালীন দেয়ার জন্য ইতিমধ্যে তাদের প্রকল্পের নির্ধারিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বিকাশ নাম্বার এন্ট্রি করার জন্য বিকাশ এজেন্টদের নির্দেশ দিয়েছেন।

এ হিসেবে মহেশখালীর মাধ্যমিক পর্যায়ের ৪১টি স্কুল ও মাদ্রাসার উপ-বৃত্তির শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬ হাজার ৬ শত ৩৩ জন। মহেশখালীর বিকাশ এজেন্ট এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বিকাশ নাম্বার এন্ট্রি করা শুরু করেছে। তবে, প্রতিটি প্রতিষ্ঠান থেকে ১০০ থেকে ১৫০ শত জন শিক্ষার্থী বাদ পড়ে যাচ্ছে। এ হিসেবে প্রায় সাড়ে ১৬ শত জন শিক্ষার্থী মহেশখালীর বিকাশ এজেন্টের গাফিলাতির কারণে এবার উপ-বৃত্তির টাকা থেকে বঞ্চিত হবার আশংকা করেছেন শিক্ষার্থীরা।

এ প্রসংঙ্গে জানতে চাইলে কালারমারছড়া উত্তর নলবিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের মো. রফিকুল আলম বলেন, আমার স্কুলে ২ শত ২ জন উপ-বৃত্তির শিক্ষার্থী রয়েছে। তৎ মধ্যে বিকাশ এন্ট্রি করেছে ১ শত জনের। বাকী ১ শত ২ জন শিক্ষার্থী বাদ পড়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, বহুবার মহেশখালী বিকাশ এজেন্টকে ফোন করলে ও কোন ধরণের সাড়া দিচ্ছে না।

অপরদিকে মাতারবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজা খাঁন থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার স্কুলের প্রায় ১৫০ জন শিক্ষার্থীর বিকাশ মার্ক করেনি। তিনি এ ব্যাপারে মহেশখালী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি অবগত করেছেন।

অন্যদিকে কালারমারছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু তাহের থেকে জানতে তিনি বলেন, আমার স্কুলের প্রায় ১ শত ৬০ জন শিক্ষার্থীর বিকাশ এজেন্ট মার্ক করেনি। এভাবে পুরো মহেশখালীর ৪১টি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের একই ধরণের হ-য-ব-র-ল অবস্থা।

এ বিষয়ে মহেশখালীর বিকাশ এজেন্ট বশির থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে দেয়া  ৬ হাজার ৬ শত ৩৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর বিকাশ এজেন্ট খুলতে আমি সক্ষম হয়েছি। বাকী শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে পুনরায় নির্দেশ  দিলে তা করতে আমি রাজি। অন্যথায় আমার দ্বারা সম্ভব নয়।

 তিনি আরও বলেন, গত ১১ অক্টোবর মহেশখালীর মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপার ফজলুল করিম ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মান্নান আমাকে অফিসে ডেকে নিয়ে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আমি উপরোক্ত কথাগুলো বলেছি। এবিষয়ে মহেশখালীর মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মান্নান থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যাতে প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের বিকাশ এজেন্ট এন্ট্রি করার জন্য আমি মহেশখালীর বিকাশ এজেন্টকে নির্দেশ দিয়েছি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন