parbattanews

শিক্ষার জন্য শিশুদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যেত হয় স্কুলে

bandarban-pic-30-9
নিজস্ব প্রতিবেদক:
বান্দরবানের লামা উপজেলার এম হোসেন পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের খাল পাড় হয়ে স্কুলে যেতে হয় জীবেন ঝুঁকি নিয়ে। গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে শিক্ষার জন্য প্রতিনিয়ত নদীর সাথে সংগ্রাম করে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে একটি ব্রীজের জন্য দাবী জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

সূত্র জানায়, লামা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০কিলোমিটার দুরে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় তিনদিক থেকে পোপা নামক খাল দ্বারা ঘেরা বিদ্যালয়টির অবস্থান। পাহাড়ি খরস্রোতা পোপা খালটি পাড়ি দিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হয় শিক্ষার্থীদের। নদীতে ১২ মাস পানি থাকে,তাই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্কুলে ভর্তি হওয়ার আগে সাঁতার শিখিয়ে দেয় অভিবাবকরা।

এলাকাবাসী সূত্র জানায়, এলাকার কয়েকজন শিক্ষানুরাগী ১৯৯৪ সালের ১ জানুয়ারি এম হোসেন পাড়া বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে সরকার বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়। লামা সদর ইউনিয়নের রুপসি ও ছিচাখইন পাড়ার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও বাঙ্গালি কয়েকশত শিক্ষার্থী বিদ্যালয়টিতে অধ্যায়ন করে আসছে। পাহাড়ি খাল হওয়ায় বর্ষাকালে স্রোতের মাত্রা বেশী থাকে বিধায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি থাকে কম।

স্থানীয় কাদের আহম্মদ বলেন, প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষার্র্থীদের ঝুকি নিয়ে যেমন বিদ্যালয়ে যেতে হয় তেমনি স্থানীয় শাক-সবজি ও ফলমূল কৃষিপন্য সময়মত বাজার জাত করতে নাপারায় আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন কৃষকরা। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি’র কাছে দাবী জানান তিনি।

বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র মংহ্লাথুই, উছাইমং ও এছিউ মার্মা জানায়, শুষ্ক মৌসুমে কোন মতে পায়ে হেটে সাঁতরিয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়া গেলেও বর্ষায় নদীতে স্রোতের গতি বেশি থাকায় বিদ্যালয়ে যাওয়া হয়না।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল কাশেম বলেন, পোপা খাল পারাপারের কোন ব্রীজ না থাকায় কোমলমতি শিশুদের গ্রীস্ম কালে পায়ে হেটে বা সাঁতার কেটে শেষ বিদ্যালয়ে যেতে হয়। বর্ষাকালে ঝুঁকি নিয়ে নৌকা দিয়ে কিছু শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে যায়।

অগ্রধিকার দিয়ে শিশুদের শিক্ষার সুযোগ দিতে এবং স্থানীয় কৃষিপন্য ন্যায্য মূল্য পেতে একটি ব্রীজের জন্য বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লার কাছে দাবী করেন তিনি।

এম. হোসেন পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষা এম. জিয়াবুল হক বলেন, স্কুলের শিক্ষার্থীরা গায়ের জামা খুলে সাঁতার দিয়ে খালটি পার হয়ে বিদ্যালয়ে আসে। কোমলমতি শিশু ও স্থানীয় জনসাধারণের সুবিধার্থে পোপা খালের উপর একটি ব্রিজ নির্মাণ করা অতি প্রয়োজন। এতে কোমলমতি শিশুদের দুর্ভোগ লাঘব হবে তেমনি এলাকায় শিক্ষিতের হার বৃদ্ধি পাবে।

লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার খালেদ মাহমুদ বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিশুরা শিক্ষার জন্য সংগ্রাম করে চলছে। একটি ব্রীজের অভাবে সরকারের শতভাগ প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নে বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে। সরকারের কাছে একটি ব্রীজের জন্য আবেদন পাঠাবেন।

Exit mobile version