শিপ্রার কম্পিউটার ও ডিভাইসসহ ২৯ সামগ্রী র‌্যাবের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ

fec-image

টেকনাফে পুলিশের গুলিতে নিহত মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খানের সহকর্মী শিপ্রা দেবনাথের কম্পিউটার হার্ডডিস্ক, ল্যাপটপ ও ডিভাইসসহ ২৯টি সামগ্রী তদন্ত সংস্থা র‌্যাবের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তামান্না ফারাহ।

১৯ আগস্ট বিকালে শুনানি শেষে আদালত এ নির্দেশ দেন। এর আগে র‌্যাবের পক্ষ থেকে শিপ্রার কম্পিউটার সামগ্রী জিম্মায় পেতে আদালতে করা আবেদনের শুনানি হয়।

শুনানি শেষে র‌্যাবের আবেদন মঞ্জুর করে আদালত কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও ডিভাইস সামগ্রী র‌্যাবের জিম্মায় দিতে নির্দেশ দেন।

গত ১৭ আগস্ট রাতে প্রেসব্রিফিংয়ে র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার প্রধান লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ জানিয়েছিলেন, সিনহা হত্যা মামলার মূল সাক্ষী শিপ্রা দেবনাথ ও সিফাতের কম্পিউটার ডিভাইসসহ ২৯টি সামগ্রী কক্সবাজারের রামু থানায় পুলিশের হেফাজতে জিডি মূলে রক্ষিত আছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যম উক্ত সরঞ্জামাদি র‌্যাব হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করেছেন। কারণ, মামলার তদন্তের স্বার্থে কম্পিউটার ও ডিভাইস গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে সহায়ক হবে।

এদিকে, বুধবার দুপুরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করতে রামু থানায় যাওয়ার পথে পুনরায় ফিরে আসেন শিপ্রা ও তার আইনজীবী।

শিপ্রার আইনজীবী মো. মাহবুবুল আলম টিপু জানান, শিপ্রার ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিওসহ নানা কন্টেন্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় গত ১৬ আগস্ট আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক হাইকোর্টে একটি আবেদন করেন। বুধবার ওই আবেদনের প্রথম দফা শুনানি হয়েছে। বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মতো হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হাসান ও মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে দ্বিতীয় দফা শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। এ কারণে কক্সবাজারের রামু থানায় মামলা দায়ের করা থেকে বিরত রয়েছি।

মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) রাতে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ শিপ্রা রানী দেবনাথের মামলা রুজু না করে তাকে রামু থানা অথবা আইসিটি ট্রাইব্যুনালে মামলা করতে পরামর্শ দেন। মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এলাকা ভৌগোলিকভাবে রামু থানা এলাকায় হওয়াতে সদর মডেল থানা কর্তৃপক্ষ শিপ্রা রানী দেবনাথের মামলা নেয়নি। পরে শিপ্রা রামু থানায় আজ মামলা দায়ের করেননি।

শিপ্রার আইনজীবী তখন বলেছিলেন, ‘সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও ঢাকা পিবিআই পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমানসহ ১০০ থেকে ১৫০ জনের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা করতে থানায় গিয়েছিলেন।’

প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিশবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ। এসময় পুলিশ সিনহার সঙ্গে থাকা সিফাতকে আটক করে কারাগারে পাঠায়। পরে রিসোর্ট থেকে শিপ্রাকে আটক করা হয়। দু’জনই বর্তমানে জামিনে মুক্ত। ওই ঘটনায় ওসি প্রদীপসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা এবং পুলিশের দায়ের করা মামলার তিন সাক্ষী প্রথমে কক্সবাজার জেলা কারাগার ও পরে আদালতের ৭ দিনের রিমান্ড আদেশের প্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র‌্যাব হেফাজতে রয়েছে। সর্বশেষ বাংলাদেশ আর্মড পুলিশের (এপিবিএন) তিন সদস্যকে আটকের আদালতে সোপর্দ করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাব। কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তামান্না ফারাহ প্রত্যেক আসামিকে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন