parbattanews

শীতে কাঁপছে পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষ, জনজীবন বিপর্যস্ত

তীব্র শীতে কাঁপছে পাহাড়ের মানুষ। ঠাণ্ডায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। ঘন কুয়াশা, হিমেল বাতাস আর হাড় কাঁপানো কনকনে শীতে কাঁপছে পার্বত্য চট্টগ্রামের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। রাত থেকে শুরু করে দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টির ফোঁটার মতো ঝরছে শিশির। গত ২ দিন ধরে দেখা মিলছে না সূর্যের।

দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকছে রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলা। অপরদিকে দেখা যায় দিনের বেলায়ও হেডলাইট জ্বালিয়ে চালাতে হচ্ছে যানবাহন।

এদিকে রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় কাছাকাছি হওয়ায় দিনের চেয়ে রাতে অনেক বেশি ঠাণ্ডা অনুভূত হচ্ছে। মানুষ আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। প্রচণ্ড শীতে কাজে বের হতে গিয়ে বেকায়দায় পড়ছেন শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ। ঘন কুয়াশা আর ঠাণ্ডায় নষ্ট হচ্ছে ধানের বীজতলা। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। এখানে গবাদিপশুরাও ঠাণ্ডায় কষ্ট পাচ্ছে। এ প্রাণীগুলো শীতজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাতভর পড়া কুয়াশায় ভিজে গেছে পিচঢালা পথগুলো। গাছের পাতা, ফসলের ক্ষেত আর ঘাসের ওপর থেকে টপটপ করে পড়ছে শিশির বিন্দু। কুয়াশার মধ্যেই গায়ে শীতের কাপড় জড়িয়ে কাজের সন্ধানে ছুটছে কর্মজীবী মানুষরা। বিদ্যালয় মুখী শিক্ষার্থীরা আগুন পোহাচ্ছে লাকড়ী জ্বালিয়ে। তবে গ্রামের অন্যান্য সময়ের চেয়ে লোক সমাগম কম। এমনকি হাটবাজারে পুরাতন কাপড়ের বাজারেও ক্রেতার উপস্থিতি নাই।

বাঙালহালিয়া আগা পাড়া এলাকার মংসিহলা মারমার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ঘন কুয়াশা আর ঠাণ্ডা বাতাসে মানুষ ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছে না। আগে দিনে ৬শ টাকা মুজুরী আয় হত। গত কয়েকদিন ধরে ঠাণ্ডার কারণে কাজে বের হতে পারিনাই টাকা আয় হয় না। খুব কষ্টে দিন যাচ্ছে, একদিকে আয় কম, অন্যদিকে বাজারের সব জিনিসের দাম বেশি।

রাজস্থলী বাজারের টমটম চালক জমির উদ্দিন বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুয়াশায় রাস্তা দেখা যাচ্ছে না। লাইট জ্বালে গাড়ি চালাচ্ছি। বিকাল ৪টার পর ঘন কুয়াশা শুরু হয়। সন্ধ্যা হলে হেডলাইট জ্বালেও কিছুই দেখা যায় না।

এদিকে ঠাণ্ডা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতজনিত রোগে আক্রান্তের হার বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। প্রায় সময় দেখা যায় হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপও বেড়েছে।

চিকিৎসকরা জানান, শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এ সময় চলাফেরায় সবাইকে সাবধান হতে হবে, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের ঠাণ্ডা লাগানো যাবে না।

গতকয়েক দিন আগে শীত শুরুর প্রারম্ভে উপজেলা প্রশাসন পাহাড়ের মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন। পর্যাপ্ত পরিমাণ শীতবস্ত্র না থাকায় সব পাড়ায় বিতরণ করা সম্ভব হয়নি।

স্থানীয়রা জানান, শীত নিবারণের জন্য সরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হলে সমস্যা কিছুটা লাঘব হবে।

Exit mobile version