শীতে গোসলের যে ভুলে হতে পারে চর্মরোগ

fec-image

শীতে গরম পানি ছাড়া অনেকেই গোসল করেন না। আবার এ সময় গোসলে অনীহা বেশি থাকে সবারই। তবে সবার ক্ষেত্রে গরম পানি দিয়ে গোসল করা ঠিক নয়।

বিশেষত যাদের শরীরে ব্যথা থাকে তাদের হালকা গরম পানিতে গোসল করা উচিত। জানেন কি, গরম পানিতে চুল ও ত্বকের বেশ ক্ষতি হয়।

আবার শীতে প্রতিদিন গোসল করলেও ত্বকের প্রাকৃতিক তেল কমে যায় ও ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। এমন অনেক ভুল আছে যা অনেকেরই অজানা। আবার অনেকেই জেনেশুনে উপেক্ষা করেন।

এমনই কিছু ভুল আছে, যা শীতে গোসলের সময় অনেকেই করেন। ফলে অ্যাকজিমা, সোরিয়াসিস ও শুষ্ক ত্বকের মতো চর্মরোগ হতে পারে।

মডার্ন ডার্মাটোলজির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সহ-প্রতিষ্ঠাতা চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডিন মেরাজ রবিনসনের মতে, ‘ত্বককে সুস্থ রাখতে প্রতিদিন গোসল করা অপরিহার্য। তবে এর সঙ্গে কিছু বিষয়ের যত্ন নেওয়াও জরুরি।’

তিনি বলেন, ‘বেশিরভাগ মানুষই গোসলের সময় ত্বকে অতিরিক্ত সাবান ব্যবহার করেন কিংবা দীর্ঘক্ষণ গোসল করেন। তবে এমনটি করলে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে।’

শীতে ত্বক বেশি শুষ্ক হলে অ্যাকজিমাসহ বিভিন্ন চর্মরোগের ঝুঁকি বাড়ে। তাই এ সময় গোসলে কয়েকটি ভুল একেবারেই করবেন না। জেনে নিন কোনগুলো-

>> শীতে ঠান্ডা লাগা কিংবা ত্বকের সমস্যা এসব থাকবেই, তবুও পরিষ্কার থাকতে নিয়মিত গোসল করতে হবে। শীতে যেহেতু বেশি খাওয়াদাওয়া হয়, তারপর আবার গরম কাপড় পরা হয় এ অবস্থায় গোসল না করলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে।

বিশেষ করে ফাটা ত্বকের সমস্যা থাকলে নিয়মিত গোসল করলে খারাপ ব্যাকটেরিয়া শরীরে প্রবেশ করতে পারে না।

>> কোন সাবান আপনার ত্বকের জন্য উপকারী, তা জানা নেই অনেকেরই। অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান ব্যাকটেরিয়ার যম। আপনার যদি অ্যাকজিমা বা ত্বকের সংবেদনশীলতা থাকে, তবে বেশি সুগন্ধযুক্ত সাবান ব্যবহার করবেন না। গোসলের পর অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।

>> ঘন ঘন তোয়ালে ধুলে তা অবশ্যই শুকিয়ে নিন দ্রুত। না হলে ভেজা তোয়ালেতে ব্যাকটেরিয়া, খামির, ছাঁচ ও ভাইরাসের প্রজননস্থল হতে পারে।

নোংরা তোয়ালে ব্যবহারে ছত্রাক, খোসপাঁচড়া হতে পারে। এজন্য সপ্তাহে অন্তত একবার তোয়ালে পরিবর্তন করুন বা গরম পানিতে ধুয়ে দ্রুত শুকিয়ে নিয়ে তারপর ব্যবহার করুন।

>> গরম পানি দিয়ে দীর্ঘক্ষণ গোসল করলে ত্বক থেকে প্রাকৃতিক তেল বের হয়ে যায়। আপনার যদি অ্যাকজিমা বা সোরিয়াসিসের মতো চর্মরোগ থাকে তাহলে ৫-১০ মিনিটের বেশি গোসল করবেন না।

>> প্রতিদিন সাবান ও হালকা গরম পানি দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করুন। এ ছাড়াও আপনার বাথরুম ফ্যান চালু রাখুন, যাতে হাওয়া চলাচল করতে পারে।

>> লুফা সবার বাথরুমে থাকে। এই উপকারী জিনিসে ব্যাকটেরিয়া লেগে থাকার ঝুঁকিও বেশি। ৫ মিনিটের জন্য ব্লিচে ভিজিয়ে রেখে নিয়মিত লুফা পরিষ্কার করে ব্যবহার করতে হবে। এ ছাড়াও প্রতি ২ মাস পরপর লুফা পরিবর্তন করুন।

>> গোসলের পর শরীর ভালো করে মুছে শুকনো করে তবেই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। পিঠে, হাতে, পায়ে ভালো করে লাগাতে হবে।

যাতে শরীরের কোনো অংশই শুষ্কও খসখসে না থাকে। এরপর পোশাক পরুন। তাহলে ত্বক পরিষ্কারও হবে আবার আর্দ্রতাও বজায় থাকবে।

সূত্র: আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব ডার্মাটোলোজি অ্যাসোসিয়েশন

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন