শুক্রবার থেকে পাহাড়ে প্রাণের উৎসবে মেতে উঠবে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সনাতনী ধর্মলম্বীদের শারদীয় উৎসবের ইতি টানলেও বুধবারে শুরু হবে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযাহা। অন্যদিকে পাহাড়ের বৌদ্ধ ধর্মলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব আগামী শুক্রবার থেকে আতশবাজি, রং-বেরংয়ের বর্ণিল ফানুসের ঝলকানি আর মহারথ টানার মধ্য দিয়ে প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপনে মেতে উঠবে সব বয়সীর নারী পুরুষরা।
ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক আয়োজনের মধ্য দিয়ে তিন পার্বত্য জেলায় এ উৎসবের মূল আয়োজন চলবে (১৮ অক্টোবর) শুক্রবার থেকে (২১ অক্টোবর) সোমবার পর্যন্ত। তিন পার্বত্য জেলার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মার্মারা ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে নামে প্রবারণা পূর্ণিমা পালন করে থাকে। গত ৯ অক্টোবর বান্দরবানে হ্যান্ডবল প্রতিযোগিতার মধ্যদিয়ে ওয়াগ্যোয়াই পোয়ের অfনুষ্ঠানিকতা শুরু করা হয়েছে।
আগামী শুক্রবার থেকে সোমবার পাহাড়ের বর্ণিল ফানুসে ঢেকে পড়বে আকাশ, অন্যদিকে মন্দিরে মন্দিরে জ্বালানো হবে হাজারো বাতি। এ উৎসবে সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া, মার্মা নাটক মঞ্চায়ন, মন্দিরে ছোয়াইং, অর্থদান, বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়ে থকে।
শনিবার ছোয়াইং দান (ভাত-তরকারি প্রদান) প্রার্থনা এবং রবিবার সন্ধ্যায় শহরের পুরাতন রাজবাড়ির মাঠ থেকে ‘ছংরাসিহ্ ওয়াগ্যোয়াই লাহ্ রাথা পোয়ে: লাগাইমে.. ’ (সবাই মিলে মিশে রথযাত্রায় যায়..) মার্মারা এই বিশেষ গানটি পরিবেশন করে মাহারথ যাত্রা শুরু করে। এ সময় পাংখো নৃত্য পরিবেশন আর রথ টানতে শত শত বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা রাস্তায় নেমে আসে। রথে জ্বালানো হয় হাজার হাজার মোমবাতি এবং দান করা হয় নগদ অর্থ। একইদিন মধ্যরাতে সাঙ্গু নদীতে রথ উৎসর্গ করা হয়।
প্রবারনা উৎসবের প্রধান অতিথি থাকবেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান বীর বাহাদুর এমপি। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা, বোমাং রাজা প্রকৌশলী উ চ প্রু, জেলা প্রশাসক কেএম তারিকুল ইসলাম,পুলিশ সুপার দেবদাস ভট্টাচার্য। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করবেন উৎসব কমিটির সভাপতি অং চ মং মার্মা।
শুক্রবার সকাল থেকে শহরের বৌদ্ধ মন্দির বা বিহারগুলোতে প্রার্থনা এবং ছোয়াইং দানের জন্য পূণ্যার্থীদের ভিড় জমাতে দেখা যায়। রাতে মার্মা অধ্যাষিত পাড়ায় পাড়ায় তৈরি করা হয় বিভিন্ন ধরনের পিঠা-পুলি।
ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে উদযাপন কমিটির সভাপতি অং চ মং মার্মা বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও ওয়াগ্যোয়াই পালনের সকল প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে।
ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে উপলক্ষে নিরাপত্তা জোরদারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের উদ্যেগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। এসময় উল্লেখ যোগ্যহারে দেশী বিদেশী পর্যটকদের দেখা যায়।