parbattanews

শূন্যরেখা থেকে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখা কোনাপাড়ায় আশ্রিত রোহিঙ্গাদের আগামীকাল ৫ ফেব্রুয়ারি (রোববার) স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। এই মানুষগুলো মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্টি ‘আরসা ও আরএসও’র মধ্যে সংঘাতের জেরে পালিয়ে শূন্য রেখায় অবস্থান করছেন। তবে আগামীকাল থেকে এসব রোহিঙ্গাদের সরানো হচ্ছে কিনা তা এই মুহুর্তে নিশ্চিত করা যাচ্ছেনা বলে জানান শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার।

তুমব্রু সীমান্তে অস্থায়ীভাবে অবস্থান করা এসব রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে এ সংক্রান্ত জাতীয় টাস্কফোর্স কমিটি।

কমিটির সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সীমান্তের শূন্যরেখায় সংঘাতের জেরে পালিয়ে তমব্রুতে আশ্রয় নেওয়া ৫৫৮টি পরিবারের রোহিঙ্গার সংখ্যা ২ হাজার ৯৭০ জন। এদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ রোহিঙ্গা আগে থেকেই কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পের নিবন্ধিত বাসিন্দা। অপর এক-তৃতীয়াংশ রোহিঙ্গা অনিবন্ধিত। তাদের নিবন্ধন কার্যক্রম চলছে। নিবন্ধন শেষ আশ্রিত রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করা হবে।

গত বুধবার দুপুরে এ তথ্য জানিয়েছেন শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান চৌধুরী। এ ব্যাপারে অতিরিক্ত শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (উপসচিব) মোহাম্মদ সামছুদ্দৌজা সর্বশেষ জানান, আগামীকাল থেকে এসব রোহিঙ্গাদের সরানো হচ্ছে কিনা তা এই মুহুর্তে নিশ্চিত করা যাচ্ছেনা। কাজ শুরু হলেই জানানো হবে।

ওই সময় আরআরআরসি মো. মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেছিলেন, শূন্যরেখা থেকে যারা পালিয়ে এসেছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ও আন্তর্জাতিক রেডক্রস ও রেডক্রিসেন্ট কমিটি (আইআরসিআরসি) এর সহায়তায় ইতোমধ্যে তাদের গণনার (তালিকা তৈরি) কাজ শেষ হয়েছে। এদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ রোহিঙ্গা আগে থেকেই কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পের নিবন্ধিত বাসিন্দা হলেও অপর এক-তৃতীয়াংশ অনিবন্ধিত। শনিবারের মধ্যেই এসব রোহিঙ্গাদের (অনিবন্ধিত) নিবন্ধনের কাজ শেষ করা হবে। রোববার থেকে তমব্রুতে আশ্রিত সব রোহিঙ্গাকে কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে স্থানান্তর করা হবে।

তিনি আরো বলেন, আগে থেকে যেসব রোহিঙ্গার নিবন্ধন রয়েছে-তাদের স্ব-স্ব ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হবে। আর অনিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের সুবিধা অনুযায়ী বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাসের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে নতুন করে নিবন্ধনের আওতায় থাকা রোহিঙ্গাদের আপাতত উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প সংলগ্ন ট্রানজিট ক্যাম্পে রাখা হবে।

সম্প্রতি সীমান্তে ধারাবাহিক সংঘাতে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার কোনারপাড়া শূন্যরেখা ক্যাম্পে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) এবং আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অরগানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে। শতাধিক ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব ঘটনায় শিশুসহ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। তবে এই মুহূর্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

এসব রোহিঙ্গার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে একটি জাতীয় টাস্কফোর্স কমিটি গঠিত হয়। এতে প্রশাসন, আরআরআরসি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা রয়েছেন। তারাই যৌথভাবে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

Exit mobile version