parbattanews

শেষ হলো ডিসি সাহেবের বলী খেলা ও বৈশাখি মেলা: কক্সবাজারেও টানা ১২ বারের চ্যাম্পিয়ন দিদার বলী

Cox'sBazar Picture 03.05.2014 (2)

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার :

কক্সবাজার স্টেডিয়ামে ‘ডিসি সাহেবের ঐতিহ্যবাহী বলী খেলা’য় দিদারুল আলম বলী ‘আমাদের দিদার বলী’ হয়েই রইলেন। ২০১৪ সালে এই মাঠের ৬৯ তম আসরে আগের সব রেকর্ড ভেঙ্গে ১২ বার ‘এক নাম্বার মেডেল’ জেতার রেকর্ডটা নিজের করেই রাখলেন দিদার বলী ! শনিবার দু’দিনের আসরের শেষ দিনে দিদারের সাথে উখিয়ার শামসুল আলম বলী চ্যালেঞ্জ দিয়ে মাঠে নেমেছিলেন। কিন্তু না, মাত্রই দুই মিনিট! শেষ মুহুর্তে শামসুল আলমকে কাধে তুলে এমন এক ‘আছাড়’ (উপরে তুলে মাটিতে আঁচড়ে ফেলা) দিলেন দিদার বলী, না দেখলে বিশ্বাস হবার নয়! দিদার বলী প্রথম ‘আছাড়’টি দিয়ে বিজয় চিহ্ন দেখিয়ে দিলেন হাজার হাজার দর্শকের উদ্দেশ্যে। কত হতে পারে দর্শক সংখ্যা, ১০ থেকে ১৫ হাজারের কম হবে না নিশ্চয়! কিন্তু না, বাগড়া দিলেন ‘মুসল্লা’রা (রেফারি)! আরেকটি খেলা এখনও বাকি। দিদার বলীকে আরেকবার শামসুল আলমের সাথে খেলতে হবে। ৫টা ১০ মিনিটে প্রথম রেসটি শুরু হয়েছিল। আর ৫টা ১২ মিনিটেই তা শেষ।

কিন্তু শেষ রেসটা সহজ হলো না। আছাড় খেয়ে ‘ক্ষুব্ধ’ শামসু বলী যেন দিদারকে পেয়ে খেপেই গেলেন। ৫টা ১৫ মিনিটে শুরু দ্বিতীয় রেসে বেশ কতক্ষণ দিদারকে ঠেলে নিয়ে গেলেন শামসু বলী। তারপর থেকে আবারও দিদার বলী কর্তৃত্ব। সেই যে শাসমু বলী বুক লেপটে মাটিতে পড়ে রইলেন, আর ওঠার নাম নেই। দিদার বলী বার কয়েক চেষ্টা করলেন তুলে আরেকটি ‘আছাড়’ দিতে। কিন্তু তা যেন ব্যাটে-বলে হলো না। শামসু বলীকে হাতের উপর তুললেন ঠিকই, কিন্তু মাটিতে আছড়ে ফেলা হলো না! একদিকে চলছিল দিদার আর শামসু’র ‘এক নাম্বার মেডেলে’র বলী খেলা, আর অন্যদিকে চলছিল প্রকৃতির কালো মেঘে ঢাকা ধূম্রবায়ূর টান। তাই ১০ মিনিট পর ‘মুসল্লা’রা রায় দিলেন, খেলা আর হবে না। চ্যাম্পিয়ন দিদার বলীই।

ইতিপূর্বে ‘দুই নাম্বার মেডেল’ ও ‘তিন নাম্বার মেডেল’ জিততে মাঠে নেমেছিলেন বাংলাদেশ কুস্তি ফেডারেশনের কুস্তিগীর রফিক ও কক্সবাজারের নন্দাখালীর জহির বলী এবং হোয়ানকের শাহাব উদ্দিন ও রুবেল। ‘দ্বিতীয় মেডেলে’ কুস্তিগীর রফিক আর জহির বলী কেউ কাউকে হারাতে না পেরে তারাই হলেন ‘যুগ্ন চ্যাম্পিয়ন’।

অন্যদিকে তৃতীয় মেডেলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন শাহাব উদ্দিন। এবারের আয়োজনে বাংলাদেশ কুস্তি ফেডারেশনের মহিলা কুস্তিগীর খালেদা ও জেসমিনকে আনা হয়েছিল কক্সবাজারের দর্শকদের একটু আনন্দ দিতে। তারা মাঠে নামলেন ‘খালেদা বলী’ ও ‘জেসমিন বলী’ হিসেবেই। মাঠে নেমেই যোগ্য বলীর মতো খেললেন। আছাড়ও একটি হলো! খেলা শেষে যার নামে এই বলী খেলা সেই জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রুহুল আমিন বিজয়ী ও বিজিত বলীদের হাতে মেডেল ও ‘প্রাইজমানি’ তুলে দেন। এবারের আসরে মেডেল ছাড়াও চ্যাম্পিয়ন দিদার বলীকে নগদ ১৫ হাজার টাকা, রানার আপ ১০ হাজার টাকা পুরস্কার দেয়া হয়। অন্যদের আনুপাতিক হারে প্রাইজমানি দেয়া হয়।

Exit mobile version