parbattanews

শ্বাসনালিতে দ্রুত ছড়ায় ওমিক্রন

ওমিক্রন মানবদেহের শ্বাসনালিতে দ্রুত বিস্তার করে। তবে ফুসফুসের ভেতরে এই ভ্যারিয়েন্ট খুব ধীর গতিতে ছড়ায়।

ওমিক্রনসহ করোনাভাইরাসের বিভিন্ন ধরনের ওপর গবেষণা চালানোর পর বুধবার এ তথ্য প্রকাশ করে বিজ্ঞানীরা।

গবেষণা দলের প্রধান হংকং ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ডা. মাইকেল চান চি-ওয়াই বলেন, ‘করোনার আগের ধরন ডেল্টার চেয়ে ওমিক্রন ৭০ গুণ বেশি মাত্রায় শ্বাসনালির কোষগুলোতে বিস্তার ঘটায়। এর ফলে মানুষ থেকে মানুষে এই ভ্যারিয়েন্ট দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তবে ফুসফুসের কোষে ওমিক্রন সংক্রমণের মাত্রা করোনার অন্য ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে ১০ গুণ কম। ফলে ওমিক্রন আক্রান্ত রোগীর অবস্থা গুরুতর হয় না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বহু মানুষকে দ্রুত সংক্রমিত করার মধ্যে দিয়ে ওমিক্রনের জীবাণু অনেক সময় প্রাণঘাতী হয়ে ওঠতে পারে। প্রাথমিক গবেষণায় দেখা গেছে, করোনা প্রতিরোধী টিকার কার্যকারিতা এড়িয়ে যেতে পারে ওমিক্রনের জীবাণু। তবে সব দিক বিবেচনায় দেখা গেছে, আক্রান্তের শরীরে ওমিক্রনের সার্বিক হুমকি খুবই নগণ্য।

‘ওমিক্রনের ভয়াবহতা কেবল সংক্রমণের মাত্রার ওপর নির্ভরশীল নয়। আক্রান্ত ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে,’ যোগ করেন তিনি।

কোভিডের জন্য দায়ী করোনাভাইরাস সার্স কভ টু-এর নতুন ধরন ‘ওমিক্রন’ নিয়ে উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বে।

আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণের দেশ বতসোয়ানায় প্রথম শনাক্ত হওয়া এই ভ্যারিয়েন্টের শুরুতে নাম ছিল ‘বি.১.১.৫২৯’, তবে শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর নাম দেয় ‘ওমিক্রন’।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্পাইক প্রোটিনে ৩০ বারের বেশি মিউটেশনের মধ্যে দিয়ে সার্স কভ টু ভাইরাসের নতুন ধরনটি তৈরি হয়েছে। সামগ্রিকভাবে এই ধরনটির মিউটেশন হয়েছে ৫০ বারের বেশি।

নতুন ধরনটি কোথায়, কীভাবে প্রথম শনাক্ত হলো?

আফ্রিকার দেশ বতসোয়ানায় ১১ নভেম্বর প্রথম ‘বি.১.১.৫২৯’ ভ্যারিয়েন্টটি শনাক্ত হয়, যাকে এখন আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ওমিক্রন’ বলছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। করোনার নতুন এই ধরনটি এরই মধ্যে সাউথ আফ্রিকাতেও শনাক্ত হয়েছে। দেশটির জোহানেসবার্গ ও প্রিটোরিয়াতে এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১২০০।

মিসর থেকে বেলজিয়াম ভ্রমণে যাওয়া একজনের দেহেও করোনার এই ধরনটি শনাক্ত হয়েছে। ইউরোপে বেলজিয়ামই প্রথম দেশ, যেখানে ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে।

সাউথ আফ্রিকা থেকে হংকং ভ্রমণে আসা এক ব্যক্তির দেহেও শনাক্ত হয়েছে ওমিক্রন। এ ছাড়া মালাউয়ি থেকে ইসরায়েলে যাওয়া একজনের দেহে পাওয়া গেছে এই ভ্যারিয়েন্টের ভাইরাস। আরও দুজনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।

নতুন ধরনটি কতটা বিপজ্জনক?

সার্স কভ টু ভাইরাসের নতুন ধরনটি নিয়ে গবেষকদের উদ্বেগের মূল কারণ, এর অনেকবারের মিউটেশন। মিউটেশন হলো এমন এক অভিযোজন কৌশল যার মাধ্যমে ভাইরাস বিরূপ বা নতুন পরিস্থিতিতেও অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারে।

বিজ্ঞানীরা ওমিক্রনের স্পাইক প্রোটিনে ৩২টি মিউটেশন খুঁজে পেয়েছেন। অন্যদিকে অত্যন্ত সংক্রামক হিসেবে বিবেচিত ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে মিউটেশন হয়েছে মাত্র আটবার।

সূত্র: এনবি নিউজ

Exit mobile version