শ্রমিকলীগ নেতাকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর দাবি পরিবারের

টেকনাফ প্রতিনিধি:

জাতীয় শ্রমিকলীগ টেকনাফ উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক দিদার মিয়া কুংফুকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন দিদার মিয়া কুংফু’র স্ত্রী রুবি চৌধুরী। বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) বিকালে টেকনাফের একটি কমিউনিটি সেন্টারের হলরুমে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।

তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমার স্বামী একজন ব্যবসায়ী হিসাবে মুদির দোকানদার। তিনি চট্টগ্রাম শহরে কালুরঘাট সিএমপি বরিশাল বাজারে ৭/৮ বছর আগে থেকে একটি মুদির দোকান করে আসছেন। ওই দোকানে বান্দরবানের একটি ছেলে মো. রুবেল (২২) কে দোকানের কর্মচারী হিসাবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। গত ২ বছর আগে আমার স্বামী টেকনাফে এসে জাতীয় শ্রমিকলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ফলে দীর্ঘদিন টেকনাফে অবস্থান করার কারণে দোকানের কর্মচারী মো. রুবেলকে দোকানের দায়িত্ব প্রদান করেন। এমতাবস্থায় সুযোগ বুঝে অপরের সম্পদ লোভী মো. রুবেল আমাদের দোকানের নগদ ১,৯৫,০০০/-(এক লক্ষ পঁচান্নব্বই হাজার)  টাকা নিয়ে বান্দরবানে পালিয়ে গিয়ে আত্মগোপন করে। দীর্ঘদিন তার খোঁজ না পেয়ে আমার স্বামী বান্দরবানে মো. রুবেলের মায়ের সাথে দেখা করতে যায়। এসময় তার বৃদ্ধা মা বলেন, আমি আমার ছেলের সাথে যোগযোগ করে আত্মসাৎকৃত টাকাগুলো ফেরৎ দেওয়ার ব্যবস্থা করব। এর ৭/৮মাস পরে একদিন চট্টগ্রাম নিউ মার্কেট মোড়ে আমার স্বামী মো. রুবেলের সন্ধান পান। সেই থেকে অনেক দিন পর্যন্ত ফোনে মো. রুবেলের সাথে আমার স্বামীর যোগাযোগ ছিল।

এ যোগাযোগের প্রেক্ষিতে চলতি মাসের ১২ জানুয়ারি আনুমানিক দুপুর ২টার দিকে মো. রুবেল ও তার মা আমাকে এবং আমার স্বামীকে ফোনে টাকা দেবার কথা বলে বান্দরবান যেতে অনুরোধ করেন। আমার স্বামী একজন সহজ সরল ব্যক্তি হিসেবে তাদের কথার উপর অন্ধ বিশ্বাস করে বান্দরবান যান। আনুমানিক সন্ধ্যার দিকে বান্দরবান শহরে আলওয়াফদা ব্রীজ সংলগ্ন হোটেল হিল নাইট হেভেনের সামনে পৌঁছলে মো. রুবেলের সাথে দেখা হয়। তিনি ১ লাখ টাকা আছে বলে আমার স্বামীর হাতে একটি প্যাকেট তুলে দেয়। প্যাকেটটি আমার স্বামী গ্রহণ করে খুলে দেখার আগেই উৎপেতে থাকা ৪জন (সিভিল পোষাক ও নিরস্ত্র) ব্যক্তি এসে টাকার প্যাকেট দেখতে চ্যালেঞ্জ করে এবং টানাহেঁচড়া করে। এক পর্যায়ে আমার স্বামী সন্ত্রাসী মনে করে হাতাহাতি করেন। তখন মুহূর্তের মধ্যে আরও কয়েকজন অস্ত্রধারী সিভিল পোষাকে নিজেদেরকে ডিবি পরিচয় দিলে আমার স্বামী সম্মানের সহিত তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। পরে আমার স্বামীকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং কর্মচারী রুবেলের দেয়া টাকা ভর্তি কাগজের সেই প্যাকেট থেকে ৪শ পিস ইয়াবা পেয়েছে বলে প্রকাশ করে। এভাবে ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে সাজানো নাটকে ৪’শ পিস ইয়াবা পেয়েছে বলে মামলা দিয়ে আমাদের পরিবারের ব্যাপক সম্মানহানি করে। এ ষড়যন্ত্রমূলক সাজানো নাটকে গ্রেফতারকৃত আমার স্বামী দিদার মিয়া কুংফু’র বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সরেজমিন তদন্তপূর্বক মূল রহস্য উদঘাটন করে প্রকৃত ষড়যন্ত্রকারীকে গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্ত শাস্তি কামনা করছি এবং আমার স্বামীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।

সংবাদ সংবাদ সম্মেলনে দিদার মিয়া কুংফু’র মা নুরুমা খাতুন, স্থানীয় মুরুব্বী মো: ইউনুছ, ভাই হারেছ মিয়া ও ফেরদৌস মিয়া, বোন ছেনুয়ারা বেগমসহ পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন