সকালে করোনা স্যাম্পল, রিপোর্টের আগেই দুপুরে মৃত্যু
সপ্তাহধিককাল ধরে জ্বর-কাশিতে ভোগাতে থাকা তিন সন্তানের জনক ফারুক(৪৫) ৮ জুলাই (বৃহস্পতিবার) সকালে রামু হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার জন্য স্যাম্পল জমা দেন।সন্ধ্যায় রিপোর্ট পাওয়ার আগেই দুপুরে মৃত্যু পথ যাত্রী হল ঈদগাঁওয়ের পরিচিত মুখ ফারুক ওরফে পেপার ফারুক। সে ঈদগাঁও ইউনিয়নের উত্তর মাইজপাড়ার মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মির আহামদ (মিরার) এর একমাত্র সন্তান। তার আকস্মিক মৃত্যু সংবাদে সর্বত্র শোকের ছায়া বিরাজ করছে। পাশাপাশি স্বজন ও এলাকাবাসীর মাঝে নেমেছে করোনা আতংক।
বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। স্থানীয় মেম্বার বজলুর রশিদ মৃতের পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে জানান, ফারুক ৫/৬ দিন ধরে অসুস্থ ছিল। জ্বর কাশিতে ভুগলেও নিয়মিত বাজার এবং এলাকায় তার উপস্থিতি ছিল সরব। পরিচিত ও বন্ধুপ্রতীম লোক হওয়ায় সকলে তার সাক্ষাৎ পেলে জমিয়ে আড্ডা দিত। এক সপ্তাহেও অসুস্থতা নিরাময়ের লক্ষণ দেখা না দেয়ায় বৃহস্পতিবার সকালে রামু করোনা হাসপাতাল ইউনিটে পরীক্ষার জন্য স্যাম্পল জমা দেন। রিপোর্ট পেতে সন্ধ্যা হবে বলায় রামু তার এক বোনের বাড়িতে অবস্থান করছিল। হঠাৎ অসুস্থতা এবং বুক ব্যথা অনুভব করায় সে তাকে বাড়িতে পৌঁছে দিতে বলে। পথিমধ্যে ব্যথা বেড়ে যাওয়ায় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জরুরি ভিত্তিতে সদর হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে। নেয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়।
এদিকে আকস্মিকভাবে তার মৃত্যু এবং করোনা উপসর্গের সংবাদে স্বজন, প্রতিবেশী ও বন্ধু বান্ধবরা দুঃচিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। কারণ অসুস্থ হলেও বিগত এক সপ্তাহ সময়কাল সে সর্বসাধারণের সাথে পূর্বের মতোই চলাফেরা করেছে। যদি করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তবে তার সংস্পর্শে আসা লোকজনও আক্রান্ত হতে পারে বলে জনমনে ভয় কাজ করছে।
একই দিন সন্ধ্যা ৬টায় নিহতের দাফন সম্পন্ন করা হয়। এদিকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর এ প্রথম করোনা উপসর্গে ঈদগাঁও এলাকায় একজনের মৃত্যু হলেও অনেকে আক্রান্ত হচ্ছে। যা গণমাধ্যমে প্রচার না হওয়ায় আড়ালে রয়ে যাচ্ছে। যাতে সাধারণ মানুষের মাঝে করোনা আরো ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এদিকে সচেতন মহল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নিয়মিত দেশ জুড়ে করোনাক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা আশংকাজনকহারে বেড়ে যাওয়ায় সরকার ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন জারি করেছে। কিন্তু ঈদগাঁও’র কিছু অসাধু চক্র কৌশলে প্রশাসনের অনুমতি আছে নাম ভাঙ্গিয়ে ঈদগাঁওয়ে লকডাউনের মধ্যেও দু’দফায় গরু বাজার বসালেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন রহস্যময় কারণে কোন ব্যাবস্থা নেয়নি। প্রশাসনের এ শৈথিল্যতাকে সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করে আগামী শনিবারও গরু বাজার বসানোর পরিকল্পনা করছে চক্রটি। তারা চলমান করোনা মহামারী থেকে ঈদগাঁওবাসীকে রক্ষায় এ বাজার বসানোতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়ার দাবি জানান। যদি প্রশাসন বিগত দুই বাজারের মত আচরণ করে তবে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সমূহ শঙ্কা প্রকাশ করছে।