parbattanews

সন্তু লারমার কার্যালয়ে গ্রেনেড হামলাকারী ইউপিডিএফ কর্মী গ্রেফতার

Rangamati Gherened pic03

স্টাফ রিপোর্টার:

সন্তু লারমার রাঙামাটিস্থ পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ কার্যালয়ে হ্যান্ড গ্রেনেড বিষ্ফোরণের ঘটনায় পুলিশ সুশীল চাকমা(২৩) নামে এক উপজাতীয় যুবককে আটক করেছে। আটককৃত যুবক পুলিশের কাছে বোমা হামলার দায় স্বীকার করে জানিয়েছে, সে সক্রিয় ইউপিডিএফ সদস্য।

সন্তু লারমা পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি। অন্যদিকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী অপর আঞ্চলিক দল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রাটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ) নেতৃত্ব দেন প্রসিত বিকাশ খীশা।

সোমবার ভোর সাড়ে তিনটায় আঞ্চলিক পরিষদ কার্যালয়ে শক্তিশালী এক বিষ্ফোরণের ঘটনা ঘটে।  এতে অফিসের সামনে পার্কিং করে রাখা ৪টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তবে দুপুর ১টার দিকে রাঙামাটি জেলা পরিষদের গোপন সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখে শহরের পাহাড়ীকা নামক হোটেল থেকে গ্রেনেড হামলাকারীকে আটক করে পুলিশ। আটককৃত যুবকের নাম সুশীল চাকমা (২৩)। সে রাঙামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলার ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের মাইচছড়ি এলাকার বাসিন্দা। তার পিতার নাম বাসুলাল চাকমা। তাছাড়া সে চুক্তি বিরোধী ইউপিডিএফের সক্রিয় সদস্য।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার ভোর রাত তখন প্রায় সাড়ে ৩টার দিকে রাঙামাটি শহরে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের কার্যালয়ে হঠাৎ বিকট শব্দ শুনে চমকে উঠে নিরাপত্তা রক্ষায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন আঞ্চলিক পরিষদের কার্যালয়ে প্রবেশ মুখে আগুন জ্বলছে। এসময় কার্যালয়ের সামনে পার্কিং করে রাখা ৪টি গাড়ির কাঁচ ভেঙ্গে যায়। তবে সন্তু লারমার ব্যবহৃত গাড়ির কোন ক্ষতি হয়নি। ঘটনার পর পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞদল ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলে এবং আলামত সংগ্রহ করে।

এদিকে আকষ্মিক এই গ্রেনেড হামলার খবরে রাঙামাটি শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে আঞ্চলিক পরিষদ কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত গোপন ক্যামেরা মাধ্যমে পুলিশ হামলাকারীকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয় এবং মাত্র তিন ঘণ্টার মধ্যেই শহরের পাহাড়িকা নামক হোটেল থেকে তাকে গ্রেফতার করে।

বিকেল ৪টার দিকে রাঙামাটি পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে তাৎক্ষণিক এক সাংবাদিক সম্মেলনে পুলিশ সুপার আমেনা বেগম জানায়, রাঙামাটি জেলা পরিষদের গোপন ক্যামেরা (সিসি টিভি) দেখে হামলাকারীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। আটকের পর সুশীল চাকমা গ্রেনেড বিস্ফোরনের ঘটনার সাথে জড়িত বলে স্বীকার করেছে। সে রাঙামাটি সরকারী কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্র। মাত্র ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে সে হ্যান্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে। এরমধ্যে ৫ হাজার টাকা অগ্রীম নিয়েছে। তবে জিজ্ঞাসাবাদে সে গ্রেনেড হামলা ঘটনার সাথে জড়িত আরো কয়েক জনের ব্যাপারে তথ্য দিয়েছে। তাদেরও আটক করার জোর প্রচেষ্টা চলছে। গ্রেনেড সরবরাহকারী হিসাবে একটি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের নাম পাওয়া গেছে বলেও পুলিশ সুপার জানান।

সাংবাদিক সম্মেলনে রাঙামাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ, রাঙামাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (আপরাধ) মো. হাবিবুর রহমান হাবিবসহ উর্দ্ধতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান সন্তু লারমার বিশেষ সহকারী বরুন চাকমা অভিযোগ করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি বিনষ্টকারীরা দুস্কৃতিকারীরা আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে।

এ ব্যাপারে আঞ্চলিক পরিষদ কর্মচারী সাধন চাকমা বাদী হয়ে রাঙামাটির কতোয়ালী থানায় অজ্ঞাত নামা বেশকয়েকজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে।

এ ঘটনায় তদন্ত কর্মকর্তা রাঙামাটি কোতয়ালী থানার কর্মকর্তা (এসআই) আনোয়ার হোসেন জানান, প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে একটা হ্যান্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়েছে। বিস্ফোরনের আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষার পর আরো নিশ্চিতভাবে জানা যাবে।

এদিকে খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তফা কামালসহ প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

Exit mobile version