“সশস্ত্র অবৈধ অস্ত্রধারীর হাতে বাঙালিরা যেমন খুনের শিকার হচ্ছে, তেমনি পাহাড়িরা খুন হচ্ছে প্রতিনিয়ত”

সন্ত্রাসীদের হাতেই প্রতিনিয়ত পাহাড়ি-বাঙালি উভয়ই খুন হচ্ছে

বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ এর উদ্যোগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবশে

 

১৯৯৭ সালে ২ ডিসেম্বর তথাকথিত শান্তিুচুক্তি করে জেএসএস তথা শান্তিবাহিনীর সদস্যদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হলেও আজও পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি আসেনি। বন্ধ হয়নি হত্যাকাণ্ড। পার্বত্য চট্টগ্রামে সশস্ত্র সংগঠনগুলোর দৌরাত্ম্য কমেনি বরং সশস্ত্র অবৈধ অস্ত্রধারীর হাতে বাঙালিরা যেমন খুনের শিকার হচ্ছে, তেমনি পাহাড়িরা খুন হচ্ছে প্রতিনিয়ত। কেউ নিরাপদ নয় এই সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের কাছে।

শুক্রবার (৩১ মে) সকালে রাঙ্গামাটি শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে জেলার বরকল উপজেলার ভূষণছড়ায় শান্তি বাহিনী কর্তৃক গণহত্যার বিচারের দাবীতে ও পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল প্রকার অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, গুম খুন অপহরণ চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং প্রত্যাহারকৃত সেনাক্যাম্প পুনঃস্থাপন করার দাবীতে পার্বত্য অধিকার ফোরাম ও বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ এর উদ্যোগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবশে বক্তারা এসব কথা বলেন।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে জাতিসংঘের নিজস্ব বিচার ব্যবস্থাও। আমেরিকার মত প্রবল শক্তিধর সেনাবাহিনীও যখন ইরাকে বন্দী নির্যাতন করে পার পায়নি। এই দেশেও ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা বিরোধীদের মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিচার হয়েছে। তা হলে, স্বাধীনদেশে পার্বত্য অঞ্চলে যারা হাজার হাজার মানুষ হত্যা করেছে তাদের কেন বিচার হবে না? ভূষণছড়া গণহত্যা  কি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ নয়?

বক্তারা আরও বলেন, পাহাড়ে বাঙালী নেতৃত্ব তৈরিতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় বাঙালীরা বঞ্চিত হতে হতে বিলীন হবে পাহাড় থেকে। আঞ্চলিক দেশ দ্রোহী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের একক আধিপত্য তখন বেড়ে যাবে। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব হুমকীর মুখে পড়বে। তাই পার্বত্যঞ্চলে চাঁদাবাজি, খুন ও গুমসহ
সকল প্রকার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি এবং হত্যাকারিদের আইনের আওয়তায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন বক্তারা।

এসময় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য অধিকার ফোরামের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মোঃ হাবিবুর রহমান হাবিব, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সভাপতি নাজিম আল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল আবছার, সহ-সভাপতি লোকমান হাকিম, যুগ্ম সম্পাদক মোঃ
দিদার, রাঙামাটি সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি মোমিনুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক বাকি বিল্লাহ্ প্রমূখ।

উল্লেখ্য, ১৯৮৪ সালের এই দিনে জেলার বরকল উপজেলার ভূষণছড়া ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার বাঙালীরা এই নির্মম গণহত্যার শিকার হন। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) -এর অঙ্গ সংগঠন শান্তিবাহিনীর হাতে অসংখ্যবার পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালীরা গণহত্যার শিকার হয়েছে।
শান্তিবাহিনীর হত্যাকাণ্ড গুলোর মধ্যে রাজনগর গণহত্যা, পাকুয়াখালী ট্রাজেডি, মাটিরাঙ্গা গণহত্যা, ভূষণছড়া গণহত্যা উল্লেখযোগ্য।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: পাহাড়ি-বাঙালি খুন হচ্ছে, প্রতিনিয়ত, সন্ত্রাসীদের
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন