সম্পত্তি আত্মসাৎ, মিথ্যা মামলা ও হত্যার হুমকির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

fec-image

খাগড়াছড়িতে “চাচা ও চাচাতো ভাই আমাদের পিতার নামীয় ও ভোগ দখলীয় সম্পত্তি আত্মসাৎ, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ও রাতের অন্ধকারে বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকির বিরুদ্ধে” সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলন ভুক্তভোগী মো. মোকতার মিয়া সাংবাদিকদের জানান, আমাদের মৃত পিতা-এমদাদ মিয়ার নামীয় ২৬৫ নং বাঙ্গালকাটি মৌজায় ০.৬৪ একর ও ২৬২ নং গোলাবাড়ী মৌজায় ১৯৭১/৭২ সাল থেকে ভোগ দখলীয় ১০.০০ এক টিলা ভূমি স্থিতি আছে। আমার পিতার মৃত এমদাদ মিয়ার মৃতুর পর উল্লেখিত জমিতে পরিচর্যা করতে গেলে আমাদের চাচা (১) মো. খলিল মিয়া, (২) মো. জসিম উদ্দিন এবং চাচাতো ভাই (৩) ইকবাল হোসেন আমাদের মৃত পিতার নামীয় ও ভোগ দখলীয় সম্পত্তি হতে বিতাড়িত করার হীন উদ্দেশ্যে সর্বদা পায়তারা করছে। আমাদের জন্মস্থান হতে বিতাড়িত করার হীন উদ্দেশ্যে বিভিন্ন প্রকার মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে আমার ৫ ভাইয়ের বিরুদ্ধে ৭/৮টি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।

প্রিয়, সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা, আমরা পিতা-মাতা হারা, এতিম, অসহায়। আমাদের পিতা-মাতাহীন গরীব, অসহায়, এতিমের হক/সম্পত্তি লুন্ঠন ও আত্মসাৎ করার কুমানসে এলাকা থেকে বিতাড়িত করার জন্য অন্যায়ভাবে সম্পূর্ণ মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে বিভিন্ন আকারে কখনো চাচা মো. খলিল মিয়া, কখনো চাচাতো ভাই ইকবাল হোসেন, কখনো বা তাদের ভাড়াটিয়া কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী তাহেরুন্নেছা ও তার কন্যা মুক্তা আক্তারের মাধ্যমে অন্যায়ভাবে আমার ৫ (পাঁচ) ভাইসহ অন্যান্য আত্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। এছাড়াও চাচা ও চাচাত ভাই রাতের বেলায় আমাদের বসত বাড়িতে গিয়ে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিতেছে যে, রাতের অন্ধকারে আমাদের বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দিয়ে প্রাণে মেরে ফেলা ও এলাকা ছাড়া করার হুমকি দেয়া হয়।

তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, আমার চাচা মো. খলিল মিয়া খাগড়াছড়ি কলেজের সরকারি কর্মচারী, মো. জসিম উদ্দিন খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সরকারি চাকরি করে এবং চাচাত ভাই মো. ইকবাল তিনিও খাগাড়ছড়ি কলেজে সরকারি চাকরি করে, এছাড়াও তাদের বিভিন্ন প্রকারের অবৈধ আয়ের উৎস রয়েছে। আমরা এতিম, অসহায় ও গরীব বিধায় আমাদের কোন অভিভাবক না থাকায় চাচা ও চাচাতো ভাই আমাদের উপর এহেন অমানবিক নির্যাতনসহ ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্য হক/ধন সম্পত্তি হতে বঞ্চিত করতেছে। আমাদের মৃত পিতা জীবিত থাকাকালীন সরল বিশ্বাসে পিতার নামীয় জমি-জমা দেখাশুনার দায়িত্ব মো. খলিল মিয়া ও মো. জসিম উদ্দিনকে দিয়েছিল। পিতার মৃত্যুরপর তারা নিজেরাই মালিক দাবি করে আসছে।

মো. খলিল মিয়া ও মো. জসিম উদ্দিন তাদেরই আপন বোনদের পৈত্রিক সম্পত্তি আত্মসাৎ করার কারণে বিজ্ঞ যুগ্ম জজ আদালত, খাগড়াছড়ি দেওয়ানী আদালতে মামলা বিচারাধীন আছে। বোনদের উপর অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে খাগড়াছড়ি সদর মডেল থানায় বহু সাধারণ ডায়েরি করা আছে। বিজ্ঞ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও মো. খলিল মিয়া ও মো. জসিম উদ্দিন গায়ের জোর অন্যায়ভাবে স্থাপনা নির্মাণ করে আসছে।

তারা আরো জানান যে, আমাদের চাচাতো ভাই মো. নুরুল আলম ও মো. সফি আলম তালুকদার গংদের নামীয় সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে তাদের বিরুদ্ধেও মো. খলিল মিয়া নারী নির্যাতনসহ বিভিন্ন রকম মিথ্যা মামলা দিয়া হয়রানি করে আসতেছে। বর্তমানে এলাকায় তারা মামলাবাজ হিসেবে পরিচিত।

মো. জসিম উদ্দিনের এসমস্ত হীন ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে মো. খলিল মিয়ার বিরুদ্ধে মাননীয় জোন কমান্ডারের বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করা হয়। উক্ত অভিযোগ দাখিলের সংবাদ পেয়ে আমাদেরকে প্রাণে মেরে ফেলার প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে আসতেছে। আমরা এতিম অসহায় ও অর্থ সংকটের কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার মামলা মোকদ্দমা দিতে পারতেছি না। তারা আমাদের বিরুদ্ধে যে সব মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছে।

এমতাবস্থায় আমাদের জানমালের নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় প্রশাসনসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর নিকট আকুল আবেদন জানাই এবং পৈত্রিক সম্পত্তি লুন্ঠনকারী চাচা মো. খলিল মিয়া ও মো. জসিম উদ্দিন এবং চাচাত ভাই ইকবাল হোসেন দ্বারা নির্যাতিত ও নিপিড়িত অত্যাচারের কথা প্রকাশ করতে পেরে আমরা অনেকটাই আশান্বিত হয়েছি।

অত্যাচারী, এতিমের হক লুন্ঠনকারীদেরকে আইন আমলে এনে আমাদের এতিমের হক/সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য স্থানীয় প্রশাসনসহ সকল আইনশৃংখলা রক্ষাকারী ও প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: প্রতিবাদ, মিথ্যা মামলা, সংবাদ সম্মেলন
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন