parbattanews

সাজেকে পুত্র ও ভাতিজার হাতে খুন হওয়া শান্তিলাল চাকমার গলাকাটা লাশ উদ্ধার

সাজেক প্রতিনিধি (আপডেট):

রাঙ্গামাটি বাঘাইছড়ি উপজেলা সাজেকের উত্তর ভাইবোন ছড়া নামক এলাকায় গত (৭ আগস্ট) রবিবার মধ্যরাতে খুন হওয়া শান্তিলাল চাকমা (৫৫)’র গলা কাটা লাশ আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাঘাইছড়ি মারিশ্যার বটতলী এলাকার কাচালং নদী থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শান্তিলাল চাকমার পুত্র সোহেল চাকমা (২৫) ও ভাতিজা আলোময় চাকমা (৩৩) কুপিয়ে নৃশংস হত্যার পর গলাকাটা লাশ কাচালং নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছিল তারা। তাদের দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন নদীতে খুঁজতে থাকে।

অবশেষে গত তিনদিন ধরে পাহাড়ি ঢলে সাজেকে বন্যা সৃষ্টি হলে আজ পানি কমতে থাকায় কাচালং নদীতে ঝোপঝাড়ের সাথে আটকে থাকা লাশটি ভেসে উঠে পানির স্রোতের সাথে নামতে থাকে।

এবিষয়ে বাঘাইছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ আমির হোসেন বলেন, কাচালং নদী দিয়ে একটি লাশ ভেসে আসছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ইঞ্জিন চালিত নৌকা দিয়ে কাচালং নদীতে আমরা খুঁজতে থাকি এক পর্যায়ে মারিশ্যা বটতলী এলাকার কাচালং নদীতে লাশটি পাওয়া যায়।

আমাদের কাছে তথ্য ছিল গত কয়েকদিন আগে সাজেকে একটি খুন হয়েছে তার লাশটি নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। লাশটি পাওয়া যায়নি তাই আমরা উদ্ধার করা লাশটিকে সনাক্ত করতে প্রথমে সাজেকে খুন হওয়া ব্যক্তির আত্মীয় স্বজনদের খবর দেই।

খবর পেয়ে তার পুত্র প্রহেল চাকমা ও সাজেক ইউপির ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার পরিচয় চাকমা ও শান্তিলাল চাকমা হত্যা মামলার বাদী বিনয় শংকর চাকমা থানায় আসে এবং লাশটি শান্তিলাল চাকমার লাশ বলে তারা সনাক্ত করে। ময়না তদন্তের জন্য লাশটি খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য সাজেকের উত্তর ভাইবোন ছড়া নামক এলাকায় গত ৭ আগস্ট রবিবার মধ্যরাতে শান্তি লাল চাকমাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে তার পুত্র সোহেল চাকমা (২৫) ও ভাতিজা আলোময় চাকমা (৩৩)। কুপিয়ে নৃশংশ হত্যার পর গলাকাটা লাশ কাচালং নদীতে ভাসিয়ে দেয় তারা।

এঘটনায় গ্রামবাসী তাদের দুজনকে আটক করে আইন শৃঙ্ক্ষলা বাহিনীকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে এলাকাবাসী খুনীদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করে।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, পিতার সাথে পুত্রের পারিবারিক কলহ ও ভাতিজার সাথে অর্থ লেনদেন থাকায় এমন ঘটনা ঘটতে পারে। তবে নিহত শান্তিলাল চাকমার ভাতিজা আলোময় চাকমা একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী সে এর আগেও একাধিক নিরীহ ব্যক্তিকে হত্যা করেছে। এলাকায় কারো সাথে তার তর্ক হলে তাকেও হত্যা করতে দ্বিধাবোধ করতো না। তাই তার এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে এলাকাবাসী ভয়ে আতঙ্কে কিছু বলার সাহস পেতনা। হত্যাকাণ্ড আর সহ্য করতে না পেরে চার পাঁচ গ্রামের লোকজন জড়ো হয়ে রাত ৩টার দিকে তাকে আটক করা করে।

সুত্রটি আরও জানায়, সে দীর্ঘদিন যাবৎ আঞ্চলিক দল ইউপিডিএফ এর রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। সেখান থেকে এমন কর্মকাণ্ড করায় ২-৩ মাস আগে তাকে ইউপিডিএফ থেকে বহিস্কার করা হয়। বহিস্কারের পরেও এলাকায় অন্যায়, অত্যাচার, হত্যাকাণ্ড অব্যাহত রাখে।

এবিষয়ে সাজেক থানার অফিসার ইনচার্জ নুরুল আনোয়ার বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং তাদেরকে আটক করা হয়। আটকৃতরা প্রাথমিকভাবে তাদের দোষ স্বীকার করে। লাশ উদ্ধারে যৌথবাহিনীর তল্লাশী চলছে নদী ও স্থলে।

তবে আটককৃত’র মধ্যে আলোময় চাকমা একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী তার নামে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এমনকি সে এর আগে আমাকে মোবাইলে সাজেক থানা বোমা মেরে গুড়িয়ে দিবে বলে হুমকি দিয়েছিল।আগামীকাল তাদেরকে কোর্টে প্রেরণ করা হবে।

Exit mobile version