সামাজিক ও রাজনৈতিক স্বার্থের প্ররোচনায় বিলুপ্তির পথে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী
পাহাড়ে খ্রীস্টান সম্প্রসারণবাদ মিশন-১
এম.এ.হোসাইন , খাগড়াছড়ি:
খ্রীস্টান ধর্ম গ্রহণ করলে সামাজিক নিরাপত্তার অভাব হবেনাÑ এমন বিশ্বাস আর স্বাবলম্বীতার লোভে হারিয়ে যাচ্ছে পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ঐতিহ্যগত বর্ণিল সংস্কৃতি। আর্থিক স্বচ্ছলতা ও আধুনিক উন্নত জীবন ব্যবস্থার লোভে স্বকীয় সংস্কৃতি বর্জন করে খ্রীষ্টান ধর্মে দীক্ষিত হচ্ছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষ। দেশী-বিদেশী চক্র পাহাড়ে খ্রীস্টান ধর্ম সম্প্রসারণের লোভনীয় এসব অফারে আকৃষ্ট হয়ে নিজ ধর্ম সংস্কৃতি ভুলে অন্য ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। এসব চক্রের সূদুর প্রসারী পরিকল্পনায় পাহাড়ে তৈরী হতে পারে নতুন রাজনৈতিক অস্থিরতা।
এক সময় স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ধর্মান্তকরণের কাজ চললেও চুক্তি পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সংঘাতের পর বিদেশী এনজিওগুলোর ব্যাপক সাহায্য সহযোগিতা পেয়ে উদ্ভুদ্ধ হয় স্থানীয় উপজাতীয়রা। এর সাথে যোগ হয় তাদের নেতৃস্থানীয়দের বিভ্রান্তিকর প্ররোচনা। ভুমি ও সামাজিক নিরাপত্তার অজুহাতে পার্বত্য চট্টগ্রামে পরিবর্তনের এই প্রক্রিয়ায় রয়েছে সুদুরপ্রসারী রাজনৈতিক পরিকল্পনা। এমন বক্তব্য পাওয়া গেছে তাদের নেতৃস্থানীয় কয়েকজন ব্যাক্তির মুখে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন, পাহাড়ের বর্তমান প্রেক্ষাপট অনুযায়ী উপজাতীয়দের খ্রীস্টান ধর্ম গ্রহণ করাই উচিৎ! কারণ খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বী হলে তাদের উপর হামলা হয়না এবং তারা বেশী বেশী সাহায্য সহযোগিতা পেয়ে থাকে। দীর্ঘ অনুসন্ধানে জানা গেছে এই তথ্য।
পাহাড়ের হত দরিদ্র উপজাতীয সাধারণ মানুষের সরলতা ও অসচেতনতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পাহাড়ে অতীতের চেয়ে দ্বিগুণ হারে বেড়েছে খ্রীস্টান সম্প্রসারণবাদের এই নীরব কার্যক্রম। বিভিন্ন পরিসংখ্যান সুত্রে জানাগেছে, তিন পার্বত্য জেলায় খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা এখন প্রায় দুই লাখ। পাহাড়ে পাহাড়ে নতুন নতুন করে তৈরি হচ্ছে তাদের উপসানালয়। জানা যায়, তিন পার্বত্য জেলায় তাদের ১২৬৮টি গির্জা বা উপাসনালয় রয়েছে। অপরদিকে মুসলমানদের তিন জেলা মিলে মসজিদের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ১৬শত। গীর্জা আর মসজিদের এই পরিসংখ্যানই প্রমাণ করে কত দ্রুত বেড়ে চলেছে খ্রীস্টান সম্প্রসারণবাদের এই কার্যক্রম।
খ্রীস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিতরা সকলেই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বিভিন্ন উপজাতীয় সম্প্রদায়ের মানুষ। এদের মধ্যে ত্রিপুরা সম্পদায়ের লোকজনই বেশী। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তাদের নেতৃবৃন্দরা সামাজিক নিরাপত্তা আর পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের কথা বলে খ্রীস্টান সম্প্রসারণবাদকে কখনো প্রকাশ্যে আবার কখনো গোপনে উদ্ভুদ্ব করে চলেছে। ফলে বিলুপ্তির পথে চলেছে ছোট ছোট ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অনেক সম্প্রদায়। পাহাড়ে পরিবর্তনের এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে এক সময় বিলুপ্ত হয়ে যাবে বর্ণিল সংস্কৃতি আর ক্ষুদ্র জাতি সত্ত্বার অস্তিত্ব। পাশাপাশি পাহাড়ে তৈরী হতে পারে নতুন ধরণের রাজনৈতিক অস্থিরতা।