parbattanews

কক্সবাজারে সিত্রাংয়ের তাণ্ডবে দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত, ব্যাপক ভাঙন

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর প্রভাবে কক্সবাজার জেলায় প্রায় ২ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৬ থেকে ৭ ফুট উচ্চতার জোয়ারের পানিতে উপকূল এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জেলার কুতুবদিয়া, মহেশখালীর, সেন্টমার্টিন দ্বীপ, শহরের কুতুবদিয়াপাড়া, সমিতিপাড়া এলাকার দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে ৫ হাজার বসতবাড়ি আংশিক ও ১ হাজার ৪০০ ঘর সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে।

এ ছাড়াও কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বেশ কয়েকটি সড়ক ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।

মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সকালে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের দেওয়া প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির হিসেবে এসব তথ্য জানানো হয়।

জেলা প্রশাসন জানায়, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এ উপকূলীয় এ জেলার ৪৭টি ইউনিয়নের ২০০ গ্রামে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এসব দুর্গত এলাকার অনেকেই এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. আবু সুফিয়ান জানান, কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর এখনো ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ বিবরণ আসেনি। তবে প্রাথমিক হিসেবে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে জেলার ৪৭টি ইউনিয়নের ৫ হাজার ঘরবাড়ি আংশিক এবং ১ হাজার ৪০০ ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে এ জেলার ২ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এছাড়া সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবনী পয়েন্টের ডায়াবেটিস পয়েন্ট ও হিমছড়ি, ইনানী এবং টেকনাফ পয়েন্টে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে জোরারের পানি কমে যাওয়ায় জেলার ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে লক্ষাধিক মানুষ মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সকাল থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে। সকাল থেকে কক্সবাজারের আকাশ থেকে মেঘ সরে গিয়ে রোদে ঝলমল করছে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশিদ বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া ও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষজনকে শুকনো খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। একই সাথে ৮৫টি মেডিকেল টিম মাঠে কাজ করছে এবং পরিপূর্ণভাবে বিপদমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের পাশাপশি বিপুল পরিমাণ স্বেচ্ছাসেবক মাঠে কাজ করে যাবে।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের প্রধান আবহাওয়াবিদ আবদুল হামিদ মিয়া জানান, উপকূলে বৃষ্টি ঝরিয়ে শক্তি হারিয়ে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এখন স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। ফলে কক্সবাজারসহ সব সমুদ্র বন্দর থেকে বিপদ সংকেত নামানো হয়েছে। এখন ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। তবে তেজকটালের মধ্যে এই ঝড় আসায় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উচ্চতার জোয়ারে ভেসেছে উপকূল। কক্সবাজারে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুট উচ্চতায় বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা রয়েছে।

Exit mobile version