parbattanews

সিরিয়ায় মানবিক সহায়তার জাতিঙ্ঘের প্রস্তাবে রাশিয়ার ভেটো

সিরিয়ায় মানবিক সহায়তার লক্ষ্যে জাতিসঙ্ঘের চলমান একটি সাহায্য কার্যক্রম নবায়নের প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে রাশিয়া।

মঙ্গলবার (১১ জুলাই) এই ভেটোর ফলে, দেশটির সরকারি নিয়ন্ত্রণের বাইরের অঞ্চলগুলোতে বসবাসকারী প্রায় চল্লিশ লাখেরও বেশি সিরীয়দের জীবন বাঁচানোর জন্য গত নয় বছর ধরে চলা সহায়তা কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যাবার ইঙ্গিত পাওয়া গেল।

তুরস্ক থেকে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় মানবিক সহায়তা কার্যক্রম অনুমোদনের মেয়াদ আরো নয় মাস বাড়ানোর প্রস্তাবের বিরুদ্ধে রাশিয়া ভোট দেয়ার পর, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা

টমাস-গ্রিনফিল্ড বলেন, এখন মস্কোকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে জবাবদিহি করতে হবে, এছাড়া তাদের সিরিয়ার জনগণের কাছেও জবাব দিতে হবে। ওই মানবিক সহায়তা, প্রতি মাসে প্রায় ২৭ লাখ লোকের কাছে পৌঁছাচ্ছিল।

ব্রাজিল এবং সুইজারল্যান্ড, যারা ১৫-সদস্যের কাউন্সিলে সিরিয়ার মানবিক ফাইলের তদারকি করে, প্রাথমিকভাবে বাব আল-হাওয়া সীমান্ত ক্রসিং ব্যবহারের মেয়াদ এক বছরের বাড়ানোর অনুরোধ করেছিল। কিন্তু আলোচনার সময় এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে- রাশিয়া বিষয়টি সমর্থন করে না।

গত কয়েক বছর ধরে, রাশিয়া, সিরিয়ার সরকারের সমর্থনে, নিরাপত্তা পরিষদকে আন্তঃসীমান্ত সাহায্য কার্যক্রম সঙ্কুচিত করতে বাধ্য করেছে, পাশাপাশি তারা সাহায্য কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করারও হুমকি দিয়েছে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া কাউন্সিলকে বলেছেন, আন্ত-সীমান্ত প্রক্রিয়া সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার একটি সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, যা তখনকার বিদ্যমান পরিস্থিতির কারণে ৫ থেকে ৭ বছর আগে হয়ত ঠিক ছিল, কিন্তু আজকের পরিস্থিতিতে সময়ের সাথে সম্পূর্ণই অসঙ্গতিপূর্ণ।’

ভেটো দেয়ার পর, রাশিয়া তার নিজস্ব একটি খসড়া প্রস্তাব পেশ করেছে, যেখানে শুধুমাত্র ছয় মাসের নবায়নের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। কিন্তু, মানবতাবাদীরা বারবার বলেছেন, এটি পরিকল্পনা এবং কার্যকারিতার জন্য একেবারেই অপর্যাপ্ত সময়।

সোমবার মধ্যরাতে মিশনের অনুমোদনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর, মঙ্গলবারের ওই ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়।

ভোটের পর যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত টমাস-গ্রিনফিল্ড সংবাদদাতাদের বলেন, আমরা এখন যেখানে আছি তা হলো- বাব আল-হাওয়া সীমান্ত দিয়ে সহায়তার ট্রাকগুলো আর অতিক্রম করছে না। তাদের যাতায়াত সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তাই প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা মানুষের কাছে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না।

গত ফেব্রুয়ারিতে বিধ্বংসী ভূমিকম্পের পর, সিরিয়া সরকার তুরস্ক থেকে আরো দুটি ক্রসিং পয়েন্ট ব্যবহার করার অনুমোদন পায়। আগামী ১৩ আগস্ট পর্যন্ত এই সুবিধা পাওয়া যাবে। আসাদ সরকার ওই ক্রসিং দুটির ব্যবহার বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে কিনা, সে ব্যাপারে প্রকাশ্যে কিছু বলেনি। কিন্তু জাতিসঙ্ঘ তাদের নিজের থেকে বলেছে, বাব আল-হাওয়া বর্ডার ক্রসিং এর সাথে ওই ক্রসিং দুটির কোনো মিল হতে পারে না। কারণ, বাব আল-হাওয়া বর্ডার ক্রসিং দিয়ে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় প্রায় ৮৫ শতাংশ মানবিক সহায়তা যান পারাপার হয়।

জাতিসঙ্ঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক সংবাদদাতাদের বলেছেন, বাব আল-হাওয়া জাতিসঙ্ঘের আন্তঃসীমান্ত প্রতিক্রিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি কেন্দ্রবিন্দু।

এরই মধ্যে সুইস রাষ্ট্রদূত বলেন, তিনি হাল ছাড়ছেন না।

২০২২ সালের এপ্রিলে সাধারণ পরিষদের গৃহীত একটি প্রস্তাবের অধীনে, রাশিয়াকে এখন তার ভেটো ব্যাখ্যা করার জন্য আগামী ১০ দিনের মধ্যে জাতিসঙ্ঘের সদস্যদের সমুখে যেতে হবে।

Exit mobile version