parbattanews

সীমান্তে উত্তেজনা: দৃশ্যমান শক্তি বাড়ানোর অভিমত বিশেষজ্ঞদের

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

তমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের উচিত হবে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের দাবি জানানো। একইসঙ্গে নিজেদের শক্তি এমনভাবে বাড়াতে হবে যাতে তা মিয়ানমারের কাছে দৃশ্যমান হয়। বিশেষজ্ঞরা এ অভিমত দিয়েছেন।

গত দুই দিনে মিয়ানমার সীমান্ত অঞ্চলে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করছে। এর বিপরীতে বাংলাদেশও সীমান্তে নিজেদের শক্তি বৃদ্ধি করেছে। এ প্রেক্ষাপটে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সীমান্ত থেকে তাদের সেনাবাহিনী সরিয়ে নেওয়ার দাবি করতে হবে মিয়ানমারের কাছে এবং একইসঙ্গে বাংলাদেশ যেন এমনভাবে শক্তি বৃদ্ধি করে সেটি মিয়ানমারের কাছে দৃশ্যমান হয়।

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘অবিলম্বে তাদের সেনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ মিয়ানমারের কাছে দাবি করতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘গতকাল (বৃহস্পতিবার) মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে যে আনুষ্ঠানিক পত্র দেওয়া হয়েছে সেটি সঠিক কূটনীতি।’

সীমান্তে বাংলাদেশের শক্তি বাড়ানোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটি খুব স্বাভাবিক। একপক্ষ নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করলে অন্য পক্ষ বসে থাকবে না এবং তারাও তাদের শক্তি প্রদর্শন করবে।’

তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের উচিত মিয়ানমারের সেনা সমাবেশের বিষয়টি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আরও জোরালোভাবে তুলে ধরা। বাংলাদেশ যথেষ্ট ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে ও দিচ্ছে এবং আমাদের উচিত হবে মিয়ানমার যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আন্তরিক নয়, সেটি আরও ভালোভাবে প্রচার করা।’

মিয়ানমারে বাংলাদেশের ডিফেন্স অ্যাটাশে শহীদুল হক বলেন, ‘আমার মনে হয় না মিয়ানমার বাংলাদেশের জন্য এই সেনা সমাবেশ ঘটিয়েছে, বরং জিরো লাইনে যে রোহিঙ্গারা কয়েক মাস ধরে অবস্থান করছে, তাদের ভয় দেখিয়ে সরিয়ে নেওয়ার জন্য এই সমাবেশ। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের উচিত হবে এমনভাবে শক্তি প্রদর্শন যাতে করে মিয়ানমারের কাছে সেটি দৃশ্যমান হয়।’

তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী সেনাবাহিনী সীমান্তের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে থাকতে পারে না, কিন্তু এর মধ্যেও এমনভাবে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি দেখানো উচিত, যাতে করে মিয়ানমার উপলব্ধি করে যে বাংলাদেশ প্রস্তুত।’

এমন পদক্ষেপ নিলে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জিরো লাইনে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা ফেরত গেলে বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের একটি আস্থার জায়গা হতো।’ কিন্তু এখন তাদেরও (জিরো লাইনে অবস্থান নেওয়া রোহিঙ্গা) মিয়ানমার সেনাবাহিনী বাংলাদেশের দিকে ঠেলে দেওয়ায় বিশ্বাস সৃষ্টির পরিবেশ তৈরিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন তিনি।

গত ২৫ আগস্ট থেকে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। তাদের প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত চুক্তি দুই পক্ষ সই করার পরে গত মাসে আট হাজার রোহিঙ্গার একটি তালিকা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য দেওয়া হয়েছে।

 

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

Exit mobile version