parbattanews

সীমান্তে রোহিঙ্গাদের আর্তনাদ থামছেনা

ঘুমধুম প্রতিনিধি:

 

মিয়ানমারের ওপারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর চলছে খুন, ধর্ষণ, লুটপাট। বাড়িতে করছে অগ্নি সংযোগ। মিয়ানমার সরকার বাহিনীর অত্যাচার নির্যাতন জুলুম থেকে বাঁচতে স্বামীকে মিয়ানমারে রেখে এসে ২ সন্তান নিয়ে গত সোমবার ২ রোহিঙ্গা নারী কুতুপালং ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে।

মংডু জেলার মাছছিল্লা পাড়ার আজিজুল হকের স্ত্রী তসলিম ফাতেমা জানান, রোহিঙ্গারা জীবন বাঁচাতে এদেশে চলে আসছে। সেনাবাহিনীর নির্যাতন নিপীড়ন ও ধর্ষণের ভয়ে ইজ্জত বাঁচাতে বেশিরভাগ নারীরা এপারে চলে আসছে। সহায় সম্পত্তি ফেলে আসা এ রোহিঙ্গা নারী জানান, বর্তমানে যেভাবে মগ সেনাদের জুলুম অত্যাচার নির্যাতন করছে, একের পর এক বাড়ি ঘরে আগুন দিয়ে, গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিচ্ছে। তাতে আরাকান রাজ্যে মুসলিম শূন্য হয়ে পড়বে। আমিও তাই ইজ্জত বাঁচাতে এদেশে চলে এসেছি।

গত সোমবার সকালে ওই রোহিঙ্গা নারীর সাথে কথা হলে এসব তথ্য আবেগ আপ্লুত হয়ে জানান। অপর রোহিঙ্গা নারী রহমত উল্লাহর স্ত্রী আশেক আরা বলেন, আমার সামনে স্বামীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। জীবন বাজি রেখে কোন রকম কোলের সন্তানকে বুকে জড়িয়ে অন্যান্য মুসলিম নারীদের সাথে আমিও এপারে চলে এসেছি। এখানে নতুন কোন, কিছুই চিনিনা। স্বামীকে হারিয়ে ছোট্ট বুকের সন্তানকে কোলে নিয়ে কোন রকম এপারে আসলেও এখনো পর্যন্ত মুখে কোন খাবার জুটেনি। গত সোমবার সকালে কুতুপালং রোহিঙ্গা বস্তি এলাকায় এসব রোহিঙ্গা নারীদের সাথে কথা হলে তারা লোমহর্ষক বর্ণনা দেন।

মঙ্গলবার সকাল ১১টায় কথা হয় মিয়ানমারের ফকিরা পাড়া থেকে আসা স্বামী হারা জায়নুর নেছার সাথে। অশীতিপর এ বয়োবৃদ্ধ মহিলার স্বামী বহুবছর আগেই মারা যায়। প্রায় ৯৫ বছর বয়সের এ মহিলার একমাত্র ছেলে মিয়ানমারে। তার কোন খোঁজ খবর নেই। পুত্রবধূ  সেতারা বেগম ও ৬ নাতি -নাতনী নিয়ে অবস্থান নিয়েছেন ঘুমধুম জলপাইতলীর নুরুল ইসলামের আম বাগানে। বয়সের ভারে ন্যুজ এ মহিলা হাঁটতে পারছেন না। কোথায় আশ্রয় হবে তার কোন কুল কিনারা দেখছেন না বলেও আকাশ পানে চেয়ে থাকেন অপলক দৃষ্টিতে। জায়নুর নেছার মত শত-শত মহিলা ও নারী-শিশুদের আহাজারীতে সীমান্তে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা এখন নিত্য নৈমিত্তিক ব্যপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Exit mobile version