parbattanews

সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের পৃথক টহলে বদলে যাচ্ছে নাইক্ষ্যংছড়ির দৃশ্যপট

নাইক্ষ্যংছড়ি সদরের আশারতলী, কম্বোনিয়া, চাকঢালা বাজার ও আমতলীমাঠ এলাকায় অবসর বিনোদনের মতো জটলা করে আড্ডা দিচ্ছিল আশেপাশের এলাকার লোকজন। চা, পান, সিগারেটের দোকানে ভিড় করে খোশমেজাজে গল্পগুজবে মেতেছিল সাধারণ মানুষ। করোনার বিস্তার ঠেকাতে মাঠ পর্যায়ে সেনা, বিজিবি, পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন পৃথক টহল ও যৌথ টহলের কারণে নিমিষেই বদলে যাচ্ছে উপজেলার ৫ ইউনিয়নের দৃশ্যপট।

শূধু নাইক্ষ্যংছড়ি সদরে নয় উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের পুরো এলাকার চিত্রই পাল্টে গেছে। বারংবার ঘরে থাকার জন্য সবাইকে বলা হচ্ছিল প্রশাসন ও বিজিবির পক্ষথেকে। কিন্তু অনেকেই গুরুত্ব দেননি তাতে। সেনা টহলের পর সবার টনক নড়েছে।

লোকজনের কাজ নেই, অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ, সবাই দোকানপাটের সামনে দেখা, সাক্ষাত, আলাপের জন্য জমা হতো। করোনার কারণে ঘরে থাকার নির্দেশ মানতো না অনেকেই। তবে সেনাবাহিনী মাঠে নামার পর কাজ হয়েছে’, বললেন  ৬নং ওয়ার্ডের আমতলীমাঠ এলাকার জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মো. শামশুল আলম। তার মতে, আরও আগে সেনাবাহিনীর টহল জোরদারে নামানো হলে লোকজনের অহেতুক ভিড় ও জমায়েত কম হতো। করোনার বিরুদ্ধে সামাজিক সতর্কতা আরও সুদৃঢ় হতো।

কম্বোনিয়া ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার মো. আলী হোসেন বলেন, ‘পাড়ায়-মহল্লায় দোকানের সামনে ও চায়ের স্টলে ছোট ছেলেদের নিয়মিত আড্ডা চলতো। স্কুল, কলেজ বন্ধ করে ঘরে থেকে সঙ্গরোধ করার জন্য বলা হলেও অনেকেই তা মানতো না। সেনা টহলের ফলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করছেন। একইভাবে নিয়মিত সেনা, পুলিশ, বিজিবি পৃথক টহল অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছেন।

গত ৬, ৮ এপ্রিল উপজেলার দুই ইউনিয়নে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন কচি, পুলিশ অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ার হোসেন ও আলীকদম সেনা জোনের মেজর মো. মোয়াজ্জেম হোসেন ও মেজর মো. মোস্তাক আহাম্মেদের পৃথক টহলের ফলে পথেঘাটে ভিড় কমেছে। তাছাড়া আতঙ্ক ছড়িয়ে ও দোকানে ভিড়ের চাপ সৃষ্টি করে দাম বাড়ানোর প্রবণতাও বন্ধ হয়েছে। মানুষের মধ্যে সাহস ও আশা বেড়েছে বলেও মনে করেন অনেকেই।

বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই করোনা পরিস্থিতিতে বিদেশ প্রত্যাগতদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।

শনিবার (১১ এপ্রিল ) সকাল ১০টায় করোনা ঠেকাতে মাঠ পর্যায়ে আলীকদম সেনা জোনের ক্যাপ্টিন মো. মুর্তুজা আলীর নেতৃত্বে সেনা টহল শুরু হওয়ার পরে এলাকার অলিগলির চিত্রই বদলে গেছে। ঘরে থেকে সঙ্গরোধের বিষয়টি বহুলাংশে প্রতিপালিত হচ্ছে। পথেঘাটে, মার্কেটে, বাজারে ভিড় ও জটলা কমেছে। এসময় কম্বোনিয় ও আশারতলী এলাকার কর্মহীন মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী তোলে দেন ক্যাপ্টিন মো. র্মূতুজা আলী।

ক্যাপ্টিন মো. মূর্তুজা আলী বলেন, নাইক্ষ্যংছড়ি প্রশাসনের পাশাপাশি আলীকদম সেনা জোনের সেনাবাহিনীও করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতির সচেতনামূলক লিফলেট, মাক্স ও সেনা জোয়ানদের মাসিক রেশন থেকে এই স্বল্প খাদ্যসাগ্রী পাঠিয়েছে তা আমরা অসহায় ও কর্মহীন মানুষের কাছে ঘরে গিয়ে পৌঁছে দিয়েছি।

প্রেসক্লাব সভাপতি শামীম ইকবাল চৌধুরী বলেন, উপজেলার ইউনিয়ন গুলোতে পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যসেবার গতিও বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রশংসিত প্রশাসন ও সশস্ত্র বাহিনীর সুদক্ষ ও চৌকস সদস্যদের মাঠ পর্যায়ের তৎপরতায় প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি করোনাজনিত পরিস্থিতির প্রতিরোধে জনমনে আশাবাদের সঞ্চার হয়েছে।

বাইশারী ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলম বলেন, সেনাবাহিনীর প্রচারনা, লিফলেট বিতরণ মাস্ক ও চাউল বিতরণে এলাকায় অনেকটা স্বস্তি ফিরেছে।

Exit mobile version