parbattanews

সেন্টমার্টিনে নিখোঁজ আরো দু’জনের লাশ উদ্ধার: এখনো নিখোঁজ ২

1397552267Ahsanullah-university-students
 
পার্বত্যনিউজ রিপোর্ট:
 
সেন্ট মার্টিন সাগরে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হওয়া ৪ শিক্ষার্থীর মধ্যে ২ জনের লাশ আজ পাওয়া গেছে। অপর ২ শিক্ষার্থী এখনো নিখোঁজ রয়েছে। উদ্ধার হওয়া লাশ দুটি কোস্টগার্ডের সহায়তায় সেন্ট মার্টিন্‌স দ্বীপ থেকে বিকাল ২ টায় বন্দর ইমিগ্রেশন জেটি দিয়ে টেকনাফে আনা হয়েছে। সেখান থেকে কক্সবাজার মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ রণজিৎ কুমার বড়ুয়া। তিনি জানান সম্ভবত উদ্ধারকৃত দুটি মৃতদেহ গোলাম রহিম বাপ্পি ও শাহরিয়ার কবির নোমানের।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, পরিবারের কেউ শনাক্ত না করা পর্যন্ত মৃতদেহের পরিচয় সম্পর্কে শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যাবে না।এদিকে নিখোঁজ শাব্বির হাসানের চাচাত ভাই আসিবুর রহমান টেকনাফে অবস্থান করে লাশ ২টি দেখে শাব্বির হাসানের লাশ নয় বলে জানিয়েছেন।
 
 
সেন্টমার্টিনের সুন্দর নীল পানির সমুদ্র সৈকতের কিছু অংশে লুকিয়ে আছে ‘ভয়াল মৃত্যু ফাঁদ’। সাম্প্রতিক সময়ে আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের চার ছাত্রের করুণ পরিণতির পরে সেন্টমার্টিনের সমুদ্র সৈকত নিয়ে আলোচনা হচ্ছে দেশ ব্যাপী। সেন্টমার্টিন ঘুরে আসা পর্যটক এবং কোস্টগার্ড সূত্রে জানা গেছে, সেন্টমার্টিন দ্বীপের উত্তর দিকে ‘ত্রিকোণ’ বিশিষ্ট এলাকাতে অবস্থান সেই মৃত্যু ফাঁদের। স্থানটা দেখতে অনেকটা লম্বাটে খালের মতো, ত্রিমুখী স্রোতের কারণে অনেক জায়গা জুড়ে ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। (ছবিতে চিহ্নিত) নতুন পর্যটকরা এগুলো বুঝতে পারেন না। এখানে পড়ে গেলেই ঘটে যায় দুঃখ জনক ঘটনা।
 
এ ব্যাপারে সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন  জানান, স্থানীয়রা সৈকতের ওই স্থানের কথা জানেন। কিন্তু আগত পর্যটকরা বিষয়টি না জানার ফলে ওইসব দুর্ঘটনা ঘটছে। স্থানীয়ভাবে আমাদের যা করা দরকার আমরা চেষ্টা করবো, কিন্তু সরকারকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।স্থানীয়রা ওই এলাকাতে পর্যটকদের যেতে প্রায়ই নিষেধ করে থাকেন। কিন্তু সব সময় স্থানীয়রা সাবধান করতে পারে না এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা না থাকায় প্রায়ই ঘটছে প্রাণহানির ঘটনা।
 
সেন্ট মার্টিনের পর্যটন শিল্পের প্রসার এবং পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি মহলকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি উঠেছে সাম্প্রতিক প্রাণহানির ঘটনার পর।
 
গত ১৬ এপ্রিল বুধবার নিখোঁজ থাকার ৪৩ ঘণ্টা পর বুধবার সকাল পৌনে ৯ টার দিকে সেন্ট মার্টিন্‌সের উত্তর সৈকতে ১ শিক্ষার্থী ও সাড়ে দশটায় পশ্চিম সৈকত দিয়ে অপর মৃতদেহ ভেসে আসলে কোস্টগার্ড সদস্যরা তা উদ্ধার করে।কোস্টগার্ড সেন্ট মার্টিন্‌স ক্যাম্প ইনচার্জ লে. শহীদ হাসান ও সেন্ট মার্টিন্‌স ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন জানান, বাকী দুটি লাশের সন্ধানে এখনও উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
 
প্রসঙ্গত, গত সোমবার দুপুরে ৩৪ জনের একটি শিক্ষার্থীর দল সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ-উত্তর পাশের সমুদ্র সৈকতে স্নান করতে নামলে পানিতে ডুবে ঢাকা আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মানফেজুল ইসলাম ইভান ও সাদ্দাম হোসেন অঙ্কুর নিহত হন। এ সময় ডুবে যাওয়া থেকে ঢাকা মিরপুরের মোক্তার হোসেনের ছেলে আসিফ (২৫), হাবিব উল্লাহর ছেলে ফয়সাল হাবিব (২৪), কুমিল্লার শামসুল হকের ছেলে ফারহানুল হক (২৪) ও চুয়াডাঙ্গার হেলাল উদ্দিনের ছেলে ইফতেখার মাহমুদ (২৫)কে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করা হলেও সমুদ্রের পানিতে ৪ শিক্ষার্থী নিখোঁজ হয়ে যায়। তারা হলেন,  উদয় মাহমুদ, শাহরিয়ার কবির নোমান, সাব্বির হাসান ও গোলাম রহিম বাপ্পি। তারা সকলেই কম্পিউটার সাইন্স বিভাগের ৩য় ও ৪র্থ বর্ষের ছাত্র।
Exit mobile version