স্বপ্নযাত্রায় বান্দরবানের পর্যটন শিল্প

Bandarban nelacol pic-25.8.2014

জমির উদ্দিন:
দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সহিংসতার কারণে গত বছর দেশের পর্যটন শিল্প ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মখীন হয়। এর প্রভাব পর্যটন ব্যবসায়ীদের ওপর এসে পড়ে। কিন্তু এবার ঈদ উৎসব সামনে রেখে এই আর্থিক ক্ষতি কিছুটা হলেও কাটিয়ে ওঠার স্বপ্ন দেখছেন বান্দরবানের পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

গত পর্যটন মৌসুমে হরতাল, অবরোধসহ রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে জেলার পর্যটন ব্যবসায়ীদের অনেকেই ব্যবসা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। অনেকে কর্মচারী ছাটাই করে ব্যবসার পরিধি কমিয়ে এনেছিলেন। এর ফলে তাদের ভীষণভাবে আর্থিক ক্ষতি হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই ক্ষতির পরিমাণ কয়েকশ’ কোটি টাকা।

সবুজ অরণ্যে ঘেরা প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য্যরে লীলাভূমি খ্যাত বান্দরবান জেলায় বছরজুড়েই পর্যটকের ভিড় লেগে থাকে। কিন্তু গত বছর এই জেলা ছিল একেবারে পর্যটক শূন্য। জেলার মেঘলা, নীলাচল, নীলগিরি, বৌদ্ধ জাদি, চিম্বুকসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পট ছিল প্রায় ফাঁকা। ফলে জেলার হোটেল-মোটেলগুলো আশানুরূপ ব্যবসা করতে পারেনি। অথচ পর্যটন মৌসুম ও ঈদ পরবর্তী সময়ে পর্যটকদের ভিড়ে হোটেল, গেস্ট হাউস ও রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীরা যেখানে দম ফেলার ফুরসত পান না সেখানে তাদের অলস সময় কাটাতে হয়েছে।

তবে এবার রাজনৈতিক পরিস্থিতি শান্ত থাকার কারণে রোজার ঈদের ছুটিতে বান্দরবানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে অনেক পর্যটক এসেছিলেন। কোরবানী ঈদে আরো বেশিসংখ্যক পর্যটক আসবেন বলে মনে করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। এ জন্য এখন থেকেই পর্যটন স্পট গুলো সাজানো হচ্ছে নতুন করে। পাশাপাশি বাড়ানো হচ্ছে পর্যটকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

হোটেল প্লাজার জেনারেল ম্যানেজার রাহাত এলাহী বলেন, আগামী কয়েক দিন পর আমাদের হোটেলে আর সিট বুকিং দেওয়া যাবে না।
মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রের এক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা প্রতিদিন প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার টিকিট বিক্রি করতেন। অথচ গত বছর টিকিট বিক্রির হার ছিল দুই থেকে আড়াইশ’ মাত্র। কোরবানী ঈদে এই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য তারা এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন।
বান্দরবানে বেড়াতে আসা বেশ কয়েকজন পর্যটকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারাও আশা করছেন আসছে ঈদে এখানে পর্যটকের আগমন যে কোনো বছরের তুলনায় বেশি হবে। কারণ ঈদ এবং পূজা প্রায় পাশাপাশি। ফলে ছুটিও একটু বেশি পাওয়া যাবে।

এদিকে পর্যটন স্পটে নৌ-পথে যাতায়াত বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে বান্দরবানের থানছি উপজেলার দূর্গম তিন্দু ও রেমাক্রি ইউনিয়নের নাফাকুম ঝর্না, ছোট মদক, বড় মদক, তিন্দু বড় পাথর এলাকায় আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পর্যটক যাতায়াতে উপজেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু আবহাওয়া এবং পরিস্থিতি কোরবানী ঈদের আগেই ঠিক হয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সেইসঙ্গে প্রশাসনও তাদের আগাম প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।

বান্দরবান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমতিয়াজ আহম্মেদ বলেন,পর্যটক আগমনের বিষয়টি মাথায় রেখে ঈদের আগেই আমরা জেলার পর্যটন কেন্দ্র গুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করবো।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন