parbattanews

স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাইনি: বাবু থোয়াইছাহ্লা চাক

বাবু থোয়াইছাহ্লা চাক

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের মধ্যম চাক পাড়ার বাসিন্দা বাবু থোয়াইছাহ্লা চাক স্বাধীনতার ৪৮ বছর পার হলেও এখনও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাননি বলে দাবি করেছেন। তিনি মৃত্যুর আগ মুহুর্ত হলেও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি নিয়ে মৃত্যুবরণ করতে চান।

এই প্রতিবেদকের সাথে কথা হলে তিনি স্বাধীনতা যুদ্বের অনেক স্মৃতি বিজড়িত কথা বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্বে ১ নং সেক্টর মেজর রফিকুল ইসলামের অধীনে ক্যাপ্টেন আবদুস সোবহানের নেতৃত্বে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন বলে জানিয়েছেন। যুদ্ধ চলাকালীন ফাঁসিয়াখালি ইউনিয়নের তীরের ডেবা, ঈদগাও, কক্সবাজার এলাকায় দায়িত্বরত ছিলেন। এছাড়া আলীক্ষ্যং এলাকার নোয়া ম্রু পাড়ার লাব্রে ম্রু তার সহযোদ্ধা হানাদার বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারান ও শহীদ হন এ সব যুদ্ধ চলাকালীন তিনিও সাথে ছিলেন এবং প্রাণে রক্ষা পান বলে জানান।

বাবু থোয়াইছাহ্লা চাক যুদ্বের পর দীর্ঘকাল যাবত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করেন। বর্তমানে অবসর নেওয়ার পর এখন বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ব্যক্তিগত জীবনে তার কোন চাওয়া পাওয়া নেই। শুধু মাত্র চাওয়া পাওয়া হল একজন মুক্তিযোদ্বার স্বীকৃতি।

বাবু থোয়াইছাহ্লা চাক যুদ্ধ চলাকালীন ইন্ডিয়ান ফোর্সের সাথে ২১ দিনের অস্ত্র প্রশিক্ষণসহ রণ কৌশলের প্রশিক্ষণেও অংশ গ্রহণ করেন। একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়েও এ পর্যন্ত স্বীকৃতি না পাওয়ায় বৃদ্ধ বয়সে হতাশা বোধ করছেন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তার সহযোদ্ধা মোঃ হাসেম, মইয়েং রাখাইনসহ অনেকেই জানান থোয়াইছাহ্লা চাক তাদের সাথে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। কেন তিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার তালিকাভুক্ত হননি সে নিয়ে তারা  চিন্তিত।

সরজমিনে গিয়ে এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ১৯৭৪ সালে দিনে দূপুরে একবার চাক পাড়া ডাকাতি সংঘটিত হয়েছিল। ঐ সময় ডাকাতদলের সদস্যরা তার বাড়ীতেও লুটতরাজ চালিয়ে জেনারেল ওসমানীর দেওয়া মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট, জায়গা জমির কাগজপত্র সব কিছু পুড়িয়ে ফেলে। যার ফলে সার্টিফিকেট দেখাতে পারছেননা।

থোয়াইছাহ্লা চাক জানান, ডাকাত দলের সদস্যরা সার্টিফিকেটটি পুড়িয়ে ফেলার পর কয়েক দফা কাগজ পত্র মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যলয়সহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানা হয়েছে এবং বাছাই তালিকাতেও তার নাম লিপিবদ্ধ আছে। তিনি বেতন ভাতা কিছুই চাননা। শুধু মাত্র মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃৃতি নিয়ে মরতে চান।
এ সব বিষয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

Exit mobile version