parbattanews

স্বাধীনতার  ৪৮ বছর পার হলেও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পায়নি বাবু থোয়াইছাহ্লা চাক

 বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের মধ্যম চাক পাড়ার বাসিন্দা বাবু থোয়াইছাহ্লা চাক স্বাধীনতার ৪৮ বছর পার হলেও এখনও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি। মৃত্যুর আগ মুহুর্ত হলেও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি নিয়ে মৃত্যুবরন করতে চান তিনি।

সরজমিনে আলাপচারিতায় তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের অনেক স্মৃতি বিজড়িত কথা বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন।  তার বয়স এখন ৬৯ বছর ছুঁইছুঁই। তিনি জানান, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে ১নং সেক্টরে মেজর রফিকুল ইসলামের অধীনে ক্যাপ্টেন আবদুস সোবহানের নেতৃত্বে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। যুদ্ধ চলাকালীন ফাসিয়াখালি ইউনিয়নের ত্রিশডেবা, ঈদগাও, কক্সবাজার এলাকায় দায়িত্বরত ছিলেন। এছাড়া আলীক্ষ্যং এলাকার নোয়া ম্রু পাড়ার লাব্রে ম্রু তার সহযোদ্ধা হানাদার বাহিনীর গুলিতে শহীদ হন। এসময় যুদ্ধ চলাকালীন তিনিও সাথে ছিলেন এবং প্রানে রক্ষা পান বলে জানান।

বাবু থোয়াইছাহ্লা চাক যুদ্ধের পর দীর্ঘকাল যাবত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করেন। বর্তমানে অবসর নেওয়ার পর এখন বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ব্যক্তিগত জীবনে তার কোন চাওয়া পাওয়া নেই। শুধু মাত্র চাওয়া পাওয়া হল একজন মুক্তিযোদ্বার স্বীকৃতি।

বাবু থোয়াইছাহ্লা চাক যুদ্ধ চলাকালীন ইন্ডিয়ান ফোর্সের সাথে ২১ দিনের অস্ত্র প্রশিক্ষণ সহ রণ কৌশলের প্রশিক্ষনে ও অংশ গ্রহণ করেন। একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়ে ও এ পর্যন্ত স্বীকৃতি না পাওয়ায় বৃদ্ধ বয়সে হতাশা বোধ করছেন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তার সহযোদ্ধা মো. হাসেম, মইয়েং রাখাইন সহ অনেকেই জানান, থোয়াইছাহ্লা চাক তাদের সাথে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছেন। কেন তিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার তালিকাভুক্ত হয়নি সে নিয়ে তারাও চিন্তিত।

সরজমিনে গিয়ে এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ১৯৭৪ সালে দিনে দুপুরে একবার তার নিজ গ্রামে চাক পাড়ায় ডাকাতি সংঘটিত হয়েছিল। ওই সময় ডাকাতদলের সদস্যরা তার বাড়ীতে ও লুটতরাজ চালিয়ে জেনারেল ওসমানীর দেওয়া মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট, জায়গা জমির কাগজ পত্র সব কিছু পুড়িয়ে ফেলে। যার ফলে সার্টিফিকেট দেখাতে পারছেননা।

থোয়াইছাহ্লা চাক আরও জানান, ডাকাত দলের সদস্যরা সার্টিফিকেটটি পুড়িয়ে ফেলার পর কয়েক দফা কাগজ পত্র মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যালয়সহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানা হয়েছে এবং বাছাই তালিকাতে ও তার নাম লিপিবদ্ধ আছে। তিনি বেতন ভাতা কিছুই চাননা। শুধু মাত্র মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃৃতি নিয়ে সম্মানের সাথে মরতে চাই।

এ বিষয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

Exit mobile version