“ ১৯৯৭ সালের পর স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় পড়তে যাচ্ছে বান্দরবান শহর। টানা পঞ্চম দিনের মতো যোগাযোগ বন্ধ ও বন্যার পানিতে জেলা শহরের জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তোলেছে।”

স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে বান্দরবান: বিপর্যস্ত জনজীবন

fec-image

উজানে টানা বৃষ্টির কারণে পাহাড়ি ঢল নামছে সাঙ্গু আর মাতামুহুরী নদীতে। এই নদীর পানি দুকূল ছাপিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে নিম্ন এলাকায়। সাথে যুক্ত হয়েছে ভারী বৃষ্টিপাত। এতে বান্দরবানে আবারও অবনতি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতির।

শুক্রবার গভীর রাতে বন্যার পানি শহর থেকে নেমে গেলেও কয়েক ঘন্টা ব্যবধানে শনিবার দুপুরের পর জোয়ারের পানির ন্যায় হঠাৎ করে বেড়ে যায়। এতে নতুন নতুন এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ১৯৯৭ সালের পর স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় পড়তে যাচ্ছে বান্দরবান শহর। টানা পঞ্চম দিনের মতো যোগাযোগ বন্ধ ও বন্যার পানিতে জেলা শহরের জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তোলেছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে- এক সপ্তাহের বন্যা ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদী আরও আগ্রাসী হয়ে উঠেছে। এখনো নদী দুটির পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কয়েকদিনে নিম্ন এলাকার পানিবন্দী অনেকের ঘরবাড়ি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। পাহাড়ে কিনারায় থাকা অন্তত অর্ধশতাধিক কাচা ঘরবাড়ি ভেঙ্গে গেছে।
শহরের আর্মিপাড়া, ইসলামপুর, বালাঘাটা, অফিসার্স ক্লাব, বনানী স’মিল, বাস টার্মিনাল, হাফেজঘোনা, শেরেবাংলা নগর, মেম্বারপাড়াম সাঙ্গু নদীর তীর এলাকার অন্তত দশ হাজারেরও বেশি মানুষ চরম দূর্ভোগ ও মানবেতন জীবন যাপন করছে। এলাকার মানুষ বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্র ও আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। লাগাতার বন্যায় সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের জন্য বড় ধরনের ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে।

এদিকে টানা পঞ্চম দিনের মতো শনিবারও বান্দরবান জেলা শহরের সাথে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। বান্দরবান-কেরানীহাট সড়কের বাজালিয়া বড়দুয়ারা অংশের রাস্তা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। নদীর পানি ও পাহাড় ধসের কারণে থানচি, রুমা ও রোয়াংছড়ি সড়কেও যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। থানচি উপজেলা সদরে দুটি ও লামা উপজেলায় ৫৫টি আশ্রয়ন কেন্দ্র খোলা হয়েছে। যোগাযোগ বন্ধ থাকায় বাজারের ব্যবসায়ীরা মজুদ সংকটে ভোগছে। সবজি ও কাচাবাজার লাগামহীন হয়ে পড়েছে।

এদিকে বন্যা কবলিত এলাকায় সার্বক্ষনিক তদারকি করা হচ্ছে জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে দূর্গত মানুষের মাঝে খাবার সরবরাহসহ তাদের খোঁজ রাখছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন