parbattanews

হাঙ্গর মাছ পোঁড়ানোর দূর্গন্ধে অতিষ্ট এলাকাবাসি

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

শহরের নতুন বাহারছড়া এলাকার মগ-চিতা পাড়ায় ঢুকতেই নাকে লাগে বিশ্রি গন্ধ। এ গন্ধে কোথা থেকে আসছে দেখতে দিয়ে গন্ধের মাত্রা আরো তীব্র আর ঝাঁঝালো হয়ে উঠে। কাছে গিয়ে দেখা যায়, ড্রামে করে পোঁড়ানো হচ্ছে হাঙ্গর মাছের কলিজা। আর এ কলিজা পুড়িয়ে অপসারন করছে তৈল। এছাড়া দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে পঁচে যাওয়া হাঙ্গর মাছের স্তুপ থেকে। এসব হাঙ্গর মাছ পঁচিয়ে সংগ্রহ করা হচ্ছে হাড় আর মাথার খুলি। হাঙ্গর মাছ পুড়ানোর কালো ধোঁয়ার সাথে ছড়ানো দূর্গন্ধে পুরো এলাকার পরিবেশটাই দূর্গন্ধময় হয়ে পড়েছে।

এ নিয়ে ক্ষোভ আর হতাশা প্রকাশ করছেন স্থানীয় লোকজন। তারা বলছেন, এ রমজানে হাঙ্গর মাছ পোঁড়ানো ও হাড় সংগ্রহের জন্য রাখা পঁচা হাঙ্গর মাছের দূর্গন্ধে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে জনজীবন। এসব ব্যবসায়ীকে একাধিকবার বারণ করেও কোন লাভ হয়নি। বরং তারা হুমকি দেয় বেশি কথা না বলতে।

দূর্গন্ধ ছড়ানোর ব্যাপারে ওসব ব্যবসায়ীদের মধ্যে আবুল কাশেমের ছেলে সাকিল জানান, এটা কোন ব্যাপারনা। এলাকায় থাকলে এ দূর্গন্ধ সহ্য করতে হবে। নয়ত ব্যবসা কিভাবে করব।

এদিকে পরিবেশ অধিদপ্তর বলছেন, এ কাজটি সম্পূর্ণ অবৈধ। এর ফলে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। যাদের কারণে এলাকায় এ সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

খবর নিয়ে জানা যায়, ওই এলাকার হাঙ্গর মাছের তেল সরানো আর হাড় সংগ্রহকারীদের মধ্যে প্রভাবশালী ব্যবসায়ী হলেন আবুল কাশেম ও তার ছেলে মোহাম্মদ আলমগীর ও সাকিল। এছাড়া রয়েছে সালাহ আহম্মদ, এসএম কুতুবউদ্দিন ও সুলতান।

সরেজমিনে গিয়ে আরও দেখা যায়, হাঙ্গর মাছ পুড়িয়ে তেল সংগ্রহ আর পঁচিয়ে হাড় সংগ্রহ ছাড়াও হাঙ্গর মাছের পাখনা আর মাংস শুকানো হচ্ছে। আর ওসব থেকেই ছড়াচ্ছে তীব্র দূর্গন্ধ।

স্থানীয় ব্যক্তি সুলতান আহম্মদ জানান, হাঙ্গর মাছের পুড়া দূর্গন্ধ খুবই অসহ্য। এছাড়া এ মাছের পঁচা দূর্গন্ধ আরও মারাত্মক। রমজান মাসে এ দূর্গন্ধ সহ্য করার মত নয়। এসব ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কিছু বলতে গেলেও সমস্যা। তারা কথা তো শোনেনা, উল্টো হুমকি দেয়।

সাহেলা আক্তার নামে এক গৃহীনি জানান, এ দূর্গন্ধের কারণে বাচ্চারা অসুস্থ্য থাকে। বেড়াতে আসা মেহমানসহ চলে যায়। দূর্গন্ধের কারণে পরিষ্কার রাখা যায়না কাপড়। তাদেরকে বললেও পাত্তা দেয়না।

ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, এ হাঙ্গর মাছের তেল ব্যবহার করা হয় মাছ ও মুরগীর খাবার তৈরিতে। আর এসব তৈল করা হয় হাঙর মাছ পুড়িয়ে।

পরিবেশ দূষিত হওয়ার ব্যাপারে হাঙ্গর মাছের তেল সংগ্রহকারী আবুল কাশেমের ছেলে সাকিল জানান, কিছুই করার নেই। তারা ইতিমধ্যে অনেক টাকা খরচ করেছে এ ব্যবসার পিছনে। কার কি ক্ষতি হচ্ছে এটা দেখার বিষয় না। বিষয় হল ব্যবসার টাকা উঠছে কিনা। এছাড়া মাছ না পোড়ালে তেল আসবে কোথা থেকে। সুতরাং কিছুই করার নাই।

এব্যাপারে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সরদার সরিফুল ইসলাম জানান, মাছ পুড়িয়ে তেল সংগ্রহের নামে পরিবেশের ক্ষতি করার অধিকার কারো নেই। এটি সম্পূর্ণ বে-আইনি। এসবের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। গত বছরেও নুনিয়ার ছড়ার বেশ কয়েটির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল।

Exit mobile version