parbattanews

হিন্দু শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিচ্ছে মিয়ানমার!

ডেস্ক নিউজ:

রাখাইনে সেনাবাহিনী ও মগদের গণহত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা হিন্দু শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে মিয়ানমার। ইয়াঙ্গুনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফ্রন্টিয়ার মিয়ানমার আজ বৃহস্পতিবার এ খবর প্রকাশ করে।

সংবাদমাধ্যমটি জানায়, গত ২৫ আগস্ট মংডু জেলায় আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) পুলিশের তল্লাশিচৌকিতে হামলার পর থেকে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতায় রোহিঙ্গা মুসলমানদের সঙ্গে ৫০০ হিন্দু শরণার্থী বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।

মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা বাস্তুচ্যুত এসব মানুষের জন্য সহায়তার ব্যবস্থা করছে। হিন্দু শরণার্থীদের রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিত্তেয় তাদের জন্য ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে তারা। দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে রাখাইন রাজ্যের সিত্তে নগরীতে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য ক্যাম্পের সমন্বয় করছেন জু বু হ্লা শিউ।

রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চির অফিসের মুখপাত্র জ হটে বলেছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হিন্দু শরণার্থীদের ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে।

ফ্রন্টিয়ার জানায়, রাখাইন সাম্প্রতিক সহিংসতার শুরুর দিনে আরসা বাহিনী তাদের গ্রামে আক্রমণ করে বলে হিন্দু শরণার্থীরা জানিয়েছে।

এদিকে বাংলাদেশের ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণে ইয়েওক কিয়ার গ্রামে আট হিন্দু নারী বাস করতেন। কর্তৃপক্ষের বিশ্বাস, ওই বাসিন্দাদের সবাই মারা গেছেন।

গত সোমবার মিয়ানমারের এক সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়, দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী একটি হিন্দু গ্রামে গণকবরের সন্ধান পেয়েছে। সেখানে অন্তত ৪৫ জন হিন্দুর লাশ পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগস্ট মাসের হামলার পর অন্তত ১০০ হিন্দু নিহত হয়েছে।

ফ্রন্টিয়ারকে গত মঙ্গলবার শিউ বলেন, গত মাসে হামলার পর অধিকাংশ হিন্দুই মংডুর সীমান্তবর্তী গ্রাম অথিন থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে।

বু হ্লা শিউ বলেন, যদি হিন্দু শরণার্থীরা বাংলাদেশ থেকে ফিরে আসে, তবে সিত্তের ত্রাণকর্মীরা তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। ‘প্লিজ, দ্রুত রাখাইনে ফিরে আসতে তাদের সাহায্য করুন’-বলেন শিউ।

গত ২৪ আগস্ট দিনগত রাতে রাখাইনে যখন পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা আবাসে বিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এর জেরে ‘অভিযানের’ নামে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। ফলে লাখ লাখ মানুষ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য চলে আসছেন।

সহিংসতার শিকার হয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় সোয়া চার লাখ। তবে বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা সাড়ে পাঁচ লাখ ছাড়িয়েছে। সহিংসতায় প্রাণ গেছে তিন হাজারের বেশি মানুষের। বেসরকারিভাবে এই সংখ্যা দশ হাজার পার করেছে মধ্য সেপ্টেম্বরেই।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচনা ও নিন্দার মুখে পড়লেও এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি মিয়ানমার সরকার।

Exit mobile version