parbattanews

হোটেল-রেস্তোরা ও চাইনিজে নিন্মমানের খাবার

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

পর্যটন শহর কক্সবাজারে অনুমোদন ছাড়াই যত্র-তত্র গড়ে উঠছে খাবার হোটেল ও রেস্তোঁরা। এসব হোটেল ও রেস্তোরায় বাসি ও পঁচা খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। এছাড়াও চাইনিজ রেস্টুরেন্টের নামে অসামাজিক কাজ ও নিন্মমানের খাবার পরিবেশন করার অভিযোগ রয়েছে অহরহ।

জানা গেছে, কলাতলি, লালদীঘিরপাড়, বাজারঘাটা, হিমছড়ি, ইনানী, বাসটার্মিনালসহ আরও বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ৩ হাজারেরও বেশি ছোট-বড় খাবার হোটেল, রেস্তোরা, চাইনিজ রেস্টুরেন্ট, ফাস্টফুড দোকানসহ বিভিন্ন খাবার দোকান গড়ে উঠেছে। এসব দোকানের খাবারের মান খুবই নিন্মমানের। ধুলো-বালির মধ্যে এবং নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে খাবার। এসব খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে খদ্দেরদের। যার ফলে অনেক খদ্দের এসব খাবার খেয়ে পেটের পীড়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। অনেক হোটেল-রেস্তোরায় খোলা ও নোংরা বাথরুম থেকে পানি এনে তা পানীয় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। খোলাস্থানের খাবারের দোকানে মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর রং মেশাতে দেখা গেছে। অনেক হোটেল-রেস্তোরা ও চাইনিজ রেস্টুরেন্টে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বালাই নেই। খাবারে মাছি ও পোকা-মাকড় এসে বসছে। চাইনিজে টেবিলে সাজিয়ে রাখা প্লেট ও গ্লাস ঘন্টার পর ঘন্টা সাজিয়ে রাখা অবস্থায় না ধুয়ে ব্যবহার করছে ভোজন প্রিয় খদ্দেররা। খাবার মান ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় না রেখে দির্ঘদিন যাবৎ এসব হোটেল রেস্তোরা চলে আসলেও দেখার কেউ নেই। যার ফলে বাধ্য হয়ে এসব খাবারই খেতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

ভুক্তভোগী ঢাকার সাংবাদিক খোকা মুহাম্মদ চৌধুরী জানান, কলাতলির প্রায়ই চাইনিজ রেস্টুরেন্টে খাবার খেতে গেলে সেখানে অসামাজিক কাজ-কর্ম চোখে পরে। এতে করে পরিবার নিয়ে গেলে ভিষন লজ্জায় পরতে হয়। সুগন্ধ্যা পয়েন্টের একটি খাবার হোটেলে ভাত খেতে গেলে সিদ্ধ তেলাপোকা পাই। এর অনেকটুকু চিবিয়ে খেয়েও ফেলি। শেষে বমি করতে করতে অসুস্থ হয়ে পরি। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিজেই বিপদে পরার উপক্রম হয়েছিল। এভাবে কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন হোটেলে পর্যটক ও এনজিও কর্মীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা।

সচেতন বোদ্ধামহল জানিয়েছেন, গেল বছরের আগস্ট মাসের ২৫ তারিখ থেকে রোহিঙ্গা আসার পর থেকে উখিয়া-টেকনাফ ও কক্সবাজারের কলাতলিতে অহরহ হোটেল করা হয়েছে। এতে মালিকপক্ষ অতিলাভের আশায় নিম্মমানের খাবার পরিবেশন করে আসছে। সম্প্রতি কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নোমান হোসেন প্রিন্স কলাতলিতে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে অনেক হোটেলকে জরিমানা ও কারাদণ্ড প্রদান করেন। তবুও হোটেল মালিকরা এনজিও কর্মী ও পর্যটকদের ঠকানোর আশায় দেদারসে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। পর্যটক ও স্থানীয়রা নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের জোর দাবি জানান।

কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটক দম্পতি মারুফ-ফারজানা জানান, সকালের নাস্তা খেতে কলাতলির একটি অভিজাত রেস্তোয়ায় গেলে পরিবেশন করা হয় বাসি ও গন্ধযুক্ত ডাল-সবজি। প্রতিবাদ করায় তাৎক্ষনিকভাবে হোটেল কর্তৃপক্ষ খাবার পরিবর্তন করে দেন। আবার ভ্যাটের ভাউচারও ধরিযে দেন।

হোটেল, রেস্তোরা ও চাইনিজ রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন খাবার দোকানের মালিকদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, খাবার মান নিশ্চিত ও পরিবেশ এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা দেখার দায়িত্বে রয়েছেন প্রশাসনের স্যানিটারি ইন্সপেক্টর। যে কারণে এসব প্রতিষ্ঠানের খাবার মান নিশ্চিত করাতো দুরে থাক, যে যা ইচ্ছে তাই করছে।

শহর ও কলাতলিতে ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে উঠা হোটেল রেস্তোরা ও চাইনিজ রেস্টুরেন্টে মান সম্মত খাবার নিশ্চিত করতে নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণ করতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সাধারণ জনগণ।

Exit mobile version