parbattanews

হোয়াইক্যংয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, দুইদিনে আহত ১০

খালেক ও রহিম আহত দুই যুবক

টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দিন দিন অবনতির পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে। একদিকে যেমন ইয়াবা পাচার ও সেবী বাড়ছে, অপর দিকে তাদের দৌরাত্ম ও আধিপত্য বেড়েই চলেছে। দুই দিনে আহত হয়েছেন ১০ জন। একদিকে ইয়াবা পাচার ও সেবীর সংখ্যা বৃদ্ধি অপর দিকে সন্ত্রাসী কার্যকলপে জনমনে আতঙ্ক ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, চলতি মাসে হোয়াইক্যংয়ের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে বিজিবি ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দল পৃথক অভিযান চালিয়ে ইয়াবা অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। ১ জানুয়ারি খারাংখালী জাহেদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ২ টি শাটার গান, ৭ হাজার পিস ইয়াবা, নগদ ২ লাখ ৯৬ হাজার টাকাসহ ৫ জন নারী পুরুষকে আটক করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। ৩ জানুয়ারি রাত ৮ টার দিকে বেরিবাঁধ সংলগ্ন লবণ মাঠ থেকে ৬০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করে বিজিবি। তবে এসময় পাচারকারীরা পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করতে পারেনি।

ইয়াবার বিষয়কে কেন্দ্র করে হোয়াইক্যং মুলাপাড়া এলাকার মো. জাকারিয়ার ছেলে চালক আবুল কালাম (৩৭) মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।

এ ছাড়াও মহেশখালীয়াপাড়া, খারাংখালী, সাতঘরিয়াপাড়া, নয়াবাজার, মিনাবাজার, নয়াপাড়া, কান্জরপাড়া, চেরাংঘর, কুতুবদিয়াপাড়া, উনচিপ্রাং, লম্বাবিল, তেচ্ছিব্রিজ, হোয়াইক্যং, রাস্তার মাথা, কাটাখালীসহ বিভিন্ন এলাকা ইয়াবা ব্যাপারি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। এর মধ্যে অনেকে ইয়াবাসহ কারাভোগ করে এসেই ফের রমরমা ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে।

এ দিকে গেলো ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি মাত্র দুই দিনে আধিপত্যকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসী কার্যকলাপে দশ জন আহত হয়েছেন। তারা হলেন দৈংগ্যাকাটা এলাকার আব্দু ছালামের ছেলে আব্দু রহিম (২০), আব্দুল খালেক (১৯), মোবারক হোসেন (১৮), রশিদ আহম্মদের ছেলে মো. ফয়সাল (২০), মৃত আলী আকবরের ছেলে বদিউজ্জামান (৫৮), তার ছেলে নুরুল আবছার (১৯), আলী আকবরের ছেলে মোহাম্মদ জামান (৬০), মৃত উজির আলীর ছেলে ভুলু মিয়া (৩৫) হাজী মীর কাশেমের ছেলে ফরিদুল ইসলাম (৩৫) ও জসিম উদ্দিন (৩৩)।

তাদের মধ্যে অনেকে সদর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিলেও বদিউজ্জামান ও নুরুল আবছার এখনো সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ ঘটনায় ফরিদুল ইসলাম বাদি হয়ে হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ীতে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানান তিনি। আহতেরা জানান, দিল মোহাম্মদের নেতৃত্বে জকির আহম্মেদ, নুরুল আবছার, শাহ আলম, আবু সুফিয়ান প্রকাশ কফিল, বার্মাইয়া সোনা মিয়াসহ ১০-১৪ জনের একটি দল এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছে। তারা নিজেদের আধিপত্যকে জানান দিতে প্রতিনিয়ত ত্রাস সৃষ্টি করেই চলেছে। সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে এসে জকির ও নুরুল আবছার গণপিটুনির শিকার হয়।

জানা গেছে, সোনা মিয়া মিয়ানমারের নাগরিক। এপার ওপারে রয়েছে একটি শক্ত সিন্ডিকেট চক্র। সে সুবাধে মিয়ানমার থেকে অস্ত্র ও ইয়াবা এনে বিভিন্ন জায়গাতে চালান দেয়া হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, আসন্ন ইউপি নির্বাচন ও আধিপত্যকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।

হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই নূরে আলম জানান দৈংগ্যাকাটায় খেলা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দায়ের করার কথা ছিল।

তিনি আরো বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান অব্যাহত রেখেছি। পাশাপাশি ইয়াবা পাচার বন্ধে শিগগিরই কঠোর অভিযান পরিচালনা করা হবে বলেও জানান তিনি।

Exit mobile version