হোয়াইক্যংয়ে আশ্রয় কেন্দ্র থেকে ক্ষুধার্তদের তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ, বিক্ষোভ

fec-image

কক্সবাজারের টেকনাফে খাদ্য ও ত্রাণ না পেয়ে হতাশ ও বিক্ষোভ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত ও অসহায় লোকজন। সকাল থেকে সাইক্লোন শেল্টারে অবস্থানের পরেও একটি সাইক্লোন শেল্টারের শতাধিক মানুষ শুকনা খাবার পেলেও বেশিভাগ লোকজনকে ত্রাণহীন তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে।

২৯ জুলাই হোয়াইক্যং ইউনিয়নের দুইটি সাইক্লোন শেল্টারে খাদ্য ও ত্রাণ না পেয়ে হতাশ ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।

জানা গেছে, উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশক্রমে পাহাড়ে অবস্থানরত , ঝুঁকিপ্রবণ ও ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। দুই দিন মাইকিং করার পরে সকালে হোয়াইক্যং ও উনছিপ্রাং সাইক্লোন শেল্টারে শত শত লোকজন জমায়েত হয়। তাদের খাবার দাবারের ব্যবস্থায় বর্তায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদেও ওপর। কিন্তু হোয়াইক্যং সাইক্লোন শেল্টারে স্থানীয় মেম্বার সিরাজুল মোস্তফা লালুর দাম্ভিকতার কারণে শত শত ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে হতাশ হয়ে খাবারহীন ও ক্ষুধার্ত অবস্থায় ফিরতে হয়েছে। তাদের তাড়িয়ে দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে আশ্রয় কেন্দ্র ছাড়েন অসহায় ও ক্ষতিগ্রস্থ লোকজন। বর্তমানে একজনও আশ্রয় শেল্টারে নেই।

ক্ষতিগ্রস্ত অনেকেই জানান, লালু মেম্বার দাম্ভিকতার সাথে সাইক্লোন শেল্টার থেকে চলে যেতে বলেন। ললু মেম্বার তাড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে একটি ভিডিও প্রতিবেদকের হাতে পৌঁছে। এতে শোনা যাচ্ছে, ‘এখানে তোমাদেরকে কে আসতে বলছে, ত্রাণ দিবে যে, ওইসব লোক কই। এখানে কোনো ত্রাণ দেওয়া হবেনা চলে যাও তোমরা। ত্রাণ আসলে আমরাই দিবো’….।

২ নং ওয়ার্ডের সিপিপির সদস্য হাশেমুর রেজা ও রুহুল আমিন বলেন, মাইকিং করে কেবল ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিপ্রবণ লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য বলা হয়। কিন্তু শত শত লোক শেল্টারে আশ্রয় নিলেও লালু মেম্বারের কারণে আশ্রিত খাবর দাবার দেয়া হবেনা বলে তাড়িয়ে দেন। রুহুল বলেন দূর্যোগ মুহুর্তে ক্ষতিগ্রস্তদের দোরগোড়ায় গিয়ে তাদেরকে আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নেওয়ার জন্য বলা হয়। তারা আশ্রয় নিলেও ব্যক্তিস্বার্থের জন্য লালু মেম্বার অসহায় মানুষদের তাড়িয়ে দেন।

এ দিকে উনছিপ্রাং সাইক্লোন শেল্টারেও একই অবস্থা। শত শত লোক ত্রাণ না পেয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে ক্ষতিগ্রস্ত ও ক্ষুধার্ত লোকজন। পরে হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদ থেকে হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের সচিব নুরুল হুদা ঘটনাস্থলে পৌঁছেন। দুইশতের বেশি লোকজনের মধ্যে ১১০ জনকে ৮ হাজার টাকার শুকনা খাবার কিনে দেয়া হয়।
উনছিপ্রাং সিপিপির টিম লিডার আব্দুল্লাহ আল জাহেদ লিটন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বহীনতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন ত্রাণ পাইনি। শত শত লোকের মধ্যে তার শেল্টারে শতাধিক লোকজনকে শুকনা খাবার দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিরাজুল মোস্তফা লালু বলেন, যারা ত্রাণ দিবে তাদেরকে পাওয়া যায়নি, তাই আশ্রিতদের চলে যাওয়ার জন্য বলা হয়।

হোয়াইক্যং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক জানান, ক্ষুধার্ত ও আশ্রিতদের প্রতি এমন আচারণ দুঃখজনক। ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের শান্ত করা হয়।

উপজেলা দূর্যোগ প্রস্তুতি কর্মসূচির কর্মকর্তা আব্দুল মতিন জানান, দূর্যোগ ও ঝুঁকিপ্রবণদের আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়ার জন্য মাইকিং করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে ক্ষতিগ্রস্তরা আসলেও ক্ষুধার্ত হয়ে ফেরত যাওয়া দুঃখজনক।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন