parbattanews

১০ লক্ষ টাকার সরকারী গাছ ২ লক্ষ টাকায় বিক্রি: রক্ষক যখন পরিণত হয় ভক্ষকে

kawkhali-rangamati-news-pic-15-10-16-copy

কাউখালী প্রতিনিধি:

পার্বত্য রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালীর বেতবুনিয়া খাশখালী রেঞ্জের বিট অফিসার নুর হোসেন বন বিভাগের অর্ধশত বছরের পুরোনো দশ লক্ষাধিক টাকার সেগুন গাছ বিক্রি করে দিলেন মাত্র দু’লক্ষ টাকায়। বন বিভাগের প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল মূল্যবান এ গাছগুলি কেটে নিয়ে যায়। ১১ অক্টোবর মঙ্গলবার মধ্যরাতে শসস্ত্র পাহাড়া বসিয়ে কমান্ডো ষ্টাইলে গাছ কাটায় অংশগ্রহণ করেন অন্তত ১০-১২জন দূস্কৃতিকারী।

সরেজমিন ঘুরে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত তিনটার সময় স্থানীয় বিট অফিস থেকে মাত্র আধা কিলোমিটার দূরত্বে কলমপতি ইউনিয়নের সুগারমিল আদর্শগ্রাম এলাকার জনৈক সিরাজুল ইসলামের বাড়ীর পেছনে বন বিভাগের রিজার্ভ বাগানে হানা দেয় ১০-১২ জনের একটি শসস্ত্র গ্রুপ। মধ্যরাতে হঠাৎ মটর সাইকেল মহড়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীয়রা। অত্যাধুনিক গাছ কাটার যন্ত্র দিয়ে ৭টি সেগুন গাছ মাত্র দু’ঘন্টায় কেটে নিয়ে যায় দূস্কৃতিকারীরা।

খাশখালী রেঞ্জের বিট অফিসার নুর হোসেন অর্ধশত বছরের পুরোনো মূল্যবান ৭টি সেগুন গাছ বিক্রি করে দেন মাত্র দু’লক্ষ টাকায়। যার বাজার মূল্য দশ লক্ষ টাকা ছাড়াবে বলে ধারনা করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। গাছ কেটে দ্রুত সরিয়ে নিতে সহযোগীতা করেন বন প্রহরী মো: আলাউদ্দিন, বাগান মালি আবুল বশর ও সঞ্জয় চাকমা। কেটে নেয়া গাছ গুলো পাচারের জন্য বর্তমানে বেতবুনিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের গুইয়াতল নামক স্থানে লুকিয়ে রাখা হয়েছে বলে স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে। ইতিপূর্বেও বন বিভাগের প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় খাসখালী রেঞ্জের হাজার গাছ কেটে গোপনে বিক্রি দেয়া ঘটনা ঘটেছে।

রাতের আঁধারে প্রত্যক্ষ করা ৯ শ্রেণীর ছাত্র মনির (১৫) “ছদ্ম নাম” জানান, ঘর থেকে কাউকে বাইরে বের না হওয়ার জন্য সতর্ক করে  আশ পাশের প্রতিটি বাড়ীর সামনে অবস্থান নেয়া শসস্ত্র গ্রুপটি। এ সময় তারা গাছ কাটায় আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে দ্রুত গাছ কেটে নিয়ে যায়। ব্যবসায়ী ইব্রাহীম (৫৫) রাতের আঁধারে একটি গ্রুপ গাছগুলি কেটে নিয়ে গেছে এতটুকু বলতে পারবো।

প্রতিবেশী উশি মারমা (৩৫) জানান, বন বিভাগের লোকজন সহযোগী না হলে এত পুরোনো গাছ কেটে নেয়া কারো পক্ষে সম্ভব হবেনা। তবে প্রকাশ্যে এসব গাছ কেটে নিয়ে যাওয়া হলেও স্থানীয়রা সন্ত্রাসীদের ভয়ে তটস্ত,  মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেনা কেউ।

১২ অক্টোবর বুধবার কথা হয় খাশখালী বীটের বন প্রহরী মো: আলাউদ্দিন, বাগান মালি আবুল বশর ও সঞ্জয় চাকমার সাথে। তারা সাংবাদিকদের সাথে কোন কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন, এমনকি তাদের কাছ থেকে সংশ্লিষ্ট বীট কর্মকর্তার মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করাও সম্ভব হয়নি। তবে প্রহরী আলাউদ্দিন জানান, তারা কেউ এঘটনার জড়িত নন। জড়িত না থাকলে প্রতিটি গাছে বনবিভাগের সীল আসলো কিভাবে এ প্রশ্নের উত্তর তিনি দিতে পারেননি।

এ ব্যাপারে গত কাল থেকে ডিএফও, রেইঞ্জার, খাশখালী রেইঞ্জের অভিযুক্ত বীট কর্মকর্তা নুর হোসেন, উল্লেখিত নাম্বার সমূহে শুক্রবার থেকে টানা ফোন দেয়ার পরও কেউ ফোন রিসিভ না কারো সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

Exit mobile version