parbattanews

২০বছরেও বিচার হয়নি রাঙামাটির ৩৫ কাঠুরিয়া হত্যাকান্ডের

rangamati-pakhuyakhali-pic1
নিজস্ব প্রতিবেদক :
দীর্ঘ ২০ বছরেও বিচার হয়নি রাঙামাটির লংগদু পাকুয়াখালীর ৩৫কাঠুরিয়া হত্যাকান্ডের। শুক্রবার পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসের শোকাবহ এক কালোদিন। বর্বর এ হত্যাকান্ডের কোন বিচার না পেয়ে হতাশায় নিমজ্জিত নিহতদের পরিবার।

১৯৯৬ সালের রাঙামাটি জেলার লংগদু-বাঘাইছড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় পাকুয়াখালী নামক গহীন অরণ্যে ৩৫ কাঠুরিয়াকে হাত-পা ও চোখ বেঁধে নির্যাতন পর নির্মমভাবে হত্যা করে তৎকালীন শান্তি বাহিনী  নামে বিচ্ছিন্নতাবাদি সশস্ত্র উপজাতীয় সন্ত্রাসী গ্রুপ। সেদিন তাদের মধ্যে ইউনুছ নামের এক কাঠুরিয়া পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়। পরে ১১ সেপ্টেম্বর পুলিশ ও সেনাবাহিনী পাকুয়াখালী হতে ২৮ জন কাঠুরিয়ার ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে। বাকি ৭ জন কাঠুরিয়ার লাশ পাওয়া যায়নি। সেদিন থেকে পার্বত্যাঞ্চলের  বাঙ্গালীরা এ দিনটিকে পাকুয়াখালী ট্রাজেডি দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। এটি পার্বত্য চট্টগ্রামের বহু গণহত্যার মধ্যে অন্যতম ঘটনা।

ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো অভিযোগ, ৩৫ কাঠুরিয়া হত্যাকান্ডের ঘটনার পর পর তৎকালীন আওয়ামীলীগ সরকারের একটি সংসদীয় টিম লংগদু সফর করে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিচার, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পুনর্বাসনের আশ্বাস দিয়ে আসে। কিন্তু পরবর্তী সরকারগুলোও একই আশ্বাস দিয়ে আসলেও এখনো এ ঘটনার কোন কুল কিনারা হয়নি। পুনর্বাসিত হয়নি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো।

এ ব্যাপারে পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মো. আবছার আলী জানান, উপজাতি সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বিনা অপরাধে ৩৫ বাঙালীকে হত্যা করেছে। কিন্তু তার বিচার হয়নি। শুধুমাত্র পাকুয়াখালীর ৩৫ কাঠুরিয়া নয়, পার্বত্যাঞ্চলে অনেক বাঙালী হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু তার একটিরও বিচার হয়নি।

পাহাড়ের মানুষগুলো দীর্ঘ বছর ধরে দাবি জানিয়ে আসলেও সরকারের পক্ষ থেকে এসব হত্যাকান্ডের বিচারের ব্যাপারে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে  বিচার শুরু করতে সরকারের প্রতি দাবী জানান তিনি।

এদিকে, পাকুয়াখালীর ৩৫ কাঠুরিয়া হত্যা দিবস উপলক্ষে শুক্রবার সকালে লংগদুতে গণ কবর জিয়ারত, দোয়া মাহফিল ও স্বরণ সভা ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালনের কর্মসুচি দিয়েছে রাঙামাটি জেলায় ৫ বাঙালী সংগঠন; পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার আন্দোলন, পার্বত্য বাঙালী ছাত্র পরিষদ, পার্বত্য বাঙালি ছাত্র ঐক্য পরিষদ, পার্বত্য নাগরিক পরিষদ, পার্বত্য গণ পরিষদসহ স্থানীয়রা। তাছাড়া বাকি দু’ পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানেও পাকুয়াখালী ট্রাজেডি দিবস পালন করা হবে বলে জানা গেছে।

Exit mobile version